Beanibazarview24.com






হারুন উর রশীদ স্বপনঃ দালালদের খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব হয়ে তুরস্কের কারাগার থেকে ফিরে এসেছেন ৩৮ জন বাংলাদেশি৷ তারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত ছিলেন৷ বেশি রোজগারের আশায় তারা সেখান থেকে গ্রিসে যেতে চেয়েছিলেন৷



মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েক বছর আগেই গিয়েছেন এই প্রতারিত শ্রমিকরা৷ কিন্তু সেখানকার বাংলাদেশি দালালরা তাদের আরো বেশি আয়ের স্বপ্ন দেখায়৷ স্বপ্ন দেখায়, গ্রিসে নিয়ে আরো ভালো চাকরি দেয়ার৷



তারা দালালদের প্ররোচনায় ৬ মাস আগে দুবাই থেকে ওমান এবং সেখান থেকে সমূদ্র পথে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে যায়৷ ইস্তানবুল থেকে দালালরা তাদের গ্রিস নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল৷ কিন্তু তাদের সেখানে আটক করে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে টাকা পয়সা সব কেড়ে নিয়ে তুরস্কের একটি মরুভূমিতে ছেড়ে দেয়৷



পরে পুলিশ এই প্রতারিতদের আটক করে তুরস্কের কারাগারে নিয়ে যায়৷ প্রতারিতরা জানান, দালালদের নির্যাতনে তাদের হাত-পা ভেঙে গেছে৷ কারোর নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে৷ তারা জানায়, তুরস্কের কারাগারে এবং দালালদের হাতে এখনো অনেক বাংলাদেশি আটক আছেন৷



এদিকে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ডয়চে ভেলেকে জানান, এই প্রতারণার পিছনে বাংলাদেশি ছাড়াও বিদেশি দালালচক্র জড়িত৷ কিন্তু কোনো দেশে কাজ করতে গিয়ে সেদেশ ছেড়ে অন্য দেশ যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে৷ তবে জনশক্তি রপ্তানিকারকরাও এই দায় এড়াতে পারেন না বলে তিনি মনে করেন৷



তুরস্কের বন্দরনগরী ইস্তাম্বুলের কুচুক বাজার, ফিরোজকয়সহ আরো কয়েকটি জায়গায় দালালদের ফাঁদে পড়া এমন অনেক বাংলাদেশির দেখা মিলেছে। ইস্তাম্বুল ইউরোপের লাগোয়া শহর। এর তিন ভাগ ইউরোপে আর ৯৭ ভাগ এশিয়ায় পড়েছে। ইস্তাম্বুল সীমান্তের ওপারেই স্বপ্নের ইউরোপীয় দেশ বুলগেরিয়া। বাঁ দিকে গ্রিসের হাতছানি। আরো সামনে ইতালি। ইতালিতে প্রচুর বাংলাদেশি থাকলেও গ্রিসে কম।



তাই ইতালি ও গ্রিসে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশিরা তুরস্কে জড়ো হচ্ছে। কিন্তু ইউরোপের কঠিন দেয়াল পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের পক্ষে। ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন মাটিচাপা পড়ছে তুরস্কেই। বাধ্য হয়ে এখন সেখানেই টিকে থাকার চেষ্টায় আছে কয়েক হাজার বাংলাদেশি। টার্কিশ পুলিশ আপাতত এসব অবৈধ বাংলাদেশির বিষয়ে কিছু না বললেও অভিযান শুরু করতে কতক্ষণ। কারণ তুরস্ক নিজেই বেকার সমস্যার মধ্যে আছে। দিন দিনই এ সমস্যা প্রকট হচ্ছে।









Comments are closed.