Beanibazarview24.com





হবিগঞ্জের লাখাইয়ে প্রেমিকার হাতে উজ্জ্বল মিয়া (২২) নামে এক কলেজ ছাত্র প্রেমিক খুন হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিকাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত উজ্জল মিয়া উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের শাহ আলমের পুত্র। সে সঈদ উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। তিনি জানান, নিহত উজ্জ্বলের সাথে দীর্ঘদিন যাবত প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল একই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার কন্যা হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের ছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৮) এর। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকার কারণে তাদের মধ্যে একাধিক বার দৈহিক সম্পর্ক হয়।
সর্বশেষ গত ২০ ফেব্রুয়ারী উজ্জ্বল সে তার প্রেমিকা ফারজানা আক্তারের বাড়িতে যায়। এসময় তার বাড়িতে কোন লোক না থাকার সুবাদে উজ্জ্বল তার প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আবারো দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়। এসময় উজ্জ্বলের মোবাইল ফোনে তার অন্য প্রেমিকার ফোন আসে। উজ্জ্বল ফারজানাকে রেখে তাদের ঘরের ভেতরেই অন্য প্রেমিকার সাথে ফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উজ্জ্বল তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এর কিছুক্ষণ পর ফারজানা তার প্রেমিককে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। এসময় সে উজ্জ্বলের মাথায় পাথর (ফুতাইল) দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তার হাত পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে উজ্জলের লাশ তাদের ঘরের একটি কক্ষে মাটির নিচে পুতে রাখে।
পরদিন সে তার পিতা মাতার কাছে ঢাকায় চলে যায়। ঘটনার ১০/১২ দিন পর ফারজানার পিতা শাহ আলম বাড়িতে এসে লাশটি মাটির নিচ থেকে তুলে বস্তাবন্দি করে গ্রামের পার্শ্ববর্তী মেদি হাওরের পানির নিচে ফেলে রেখে আসে।
ব্রিফিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, গত ২০ ফ্রেব্রুয়ারী উজ্জল মিয়া নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি লাখাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে। পরে কল লিস্টের সুত্রধরে গত ২১ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম কলেজ ছাত্রী ফারজানা ও তার পিতা মঞ্জু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করে নিয়ে আসে।
রাতভর তিনিসহ তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা হত্যাকান্ডের পুরো বর্ণনা দেন। এরই প্রেক্ষিতে ঘটনার প্রায় দুই মাস পর ওই হাওরে গিয়ে নিহত উজ্জলের লাশ সোমবার দুপুরে উদ্ধার করে।
লাখাই থানার (ওসি) এমরান হোসেন জানান, নিহত উজ্জলের মরদেহ মঙ্গলবার ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে। এছাড়াও এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রেমিকা ফারজানা ও তার পিতা মঞ্জু মিয়াকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। এছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের তদন্ত করে গ্রেফতার করা হবে।
প্রেসব্রিফিংকালে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ওসি মানিকুল ইসলাম, এসআই ইকবাল বাহারসহ লাখাই থানার একদল পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.