Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

‘এখন লাশ গোনা ছেড়ে দিয়েছি’, নিউইয়র্কের বর্ণনায় তরুণী!


করোনায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর দেশটির নিউইয়র্ক যেন হয়ে উঠেছে মৃত্যুপরী। প্রতিদিনই শতশত মানুষের মারা যাচ্ছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে। দেশটিতে বসবাসকারীরা গর্ব করে বলে, পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ শহর নিউইয়র্ক। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে তার চেহারাটা বদলে গেছে। করোনার ভয়াল থাবায় এক সময় সর্বদা জেগে থাকা নিউইয়র্ক এখন ভুতুড়ে নগরী। মৃত্যুপুরীতে বাস করার অভিজ্ঞতা কেমন তা তুলে ধরেছেন নিউইয়র্কের এক প্রেমিক যুগল।

নিউইয়র্কের ব্রুকলিন অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা বছর আটাশের অ্যালিক্স মন্টেলিওন ও তার প্রেমিক মার্ক কজলো। শহরের অবস্থার কথা স্কাইপে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন তারা। বাইরে বেরুতে পারছেন না তারা। তাই প্রিয় শহরটা এই সময়ে কেমন আছে, তা জানতে খোলা জানালায় চোখ রাখছেন তারা। মন্টেলিওন বলছেন, ‘আমরা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বিহঙ্গ দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি শহরটাকে।’

উইকওফ হাইটস মেডিক্যাল সেন্টারে যা ঘটছে তাও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন মন্টেলিওন ও কজলো। তার বর্ণনা দিতে গিয়ে মন্টেলিওন বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি বাইরে খুব চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে, যা থেকেই ধারণা করতে পারি ভিতরের পরিস্থিতি কতটা খারাপ। কত লাশ ওখান থেকে বেরিয়ে এলো তা গোনা এখন ছেড়ে দিয়েছি। এটা খুবই ভয়াবহ দৃশ্য। কিন্তু এটাই বাস্তব।’

১৯ বছর আগে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা দেখেছিল এই শহর। আল কায়দার সেই বিমান হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২ হাজার ৯৭৭ জনের। সেই হামলার জবাব দিয়েছে পেন্টাগন। কিন্তু এই শত্রু যে অদৃশ্য! শহরের সেন্ট্রাল পার্ক-সহ বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। আর তার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা-সহ লাশবাহী ট্রাকগুলি। মন্টেলিওন ও কজলো বলছেন, এ শহরের সঙ্গে এ ছবি বড়ই বেমানান। গোটা ঘটনাটাই ধরা পড়েছে তাদের দু’জনের চোখে।

মন্টেলিওন বলছেন, গত সপ্তাহে কজলো কুকুরকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছিল। সেখান থেকে তিনি মন্টেলিওনকে ফোন করে জানান যে দু’জন চিকিৎসক সেখানে ট্রাক আসার কথা বলছেন। এর পরই মন্টেলিওন জানালা খুলে সেই দৃশ্য দেখতে পান। এর পর দিন সকালে উঠে তারা দেখতে পান, রেফ্রিজারেটর ব্যবস্থা-সহ দুটি ট্রাক ঢোকার জন্য র‌্যাম্প তৈরি করছেন কর্মীরা। ওরা যেটা ফোনে বলছিলেন, সেটাই গোটা শহর জুড়ে ঘটে চলেছিল। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এলো সারি সারি লাশ।’

চার পাশে হতাশার ছবি। তবে এর মধ্যেও বেঁচে রয়েছে নানা সম্পর্ক। সেই দৃশ্যও ধরা পড়েছে। আশপাশের মানুষদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন উইকঅফ হাইটস মেডিক্যাল সেন্টারের প্রধান র‌্যামন রডরিগেজ। তার প্রশংসা করে মন্টেলিওন বলেছেন, ‘প্রতিদিন আমার আত্মীয় ও শহরকর্মীরা আমাদের এই শহর ছাড়তে বলছে। তারা মনে করছেন, এ শহর এখন আমাদের জন্য ঠিক নয়।’ নিউইয়র্ক ‘আশাবাদী শহর’, এ কথা বিশ্বাস করে শহরের বাসিন্দারা। তাতে ভরসা রাখছেন মন্টেলিওন ও কজলো।

উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাসের মূল এপিসেন্টার এখন যুক্তরাষ্ট্র। আক্রান্তের সংখ্যাটা চোখ কপালে তোলার মতো। সারা দেশে এরই মধ্যে করোনার শিকার হয়েছেন ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৬০জন মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্কেই মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.