Beanibazarview24.com





রাশিদ রিয়াজ :রাজধানী ডেমরার একটি বাসায় করোনাভাইরাসের কারণে কাজের বুয়াকে গত ৫ মার্চ বিদায় করে দেয়া হয়। সঙ্গে অগ্রিম কয়েকমাসের বেতন দিয়ে বলা হয় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে যেন কাজে আসে। দিন কয়েক পর সেই বুয়া ফের ওই বাসায় আসলে তার মনিব জানতে চায় কোনো টাকা পয়সা লাগবে কি না ? সেই বুয়া বাড়িওয়ালিকে বলে, খালাম্মা আমরা যে চাল সাহায্য পেয়েছি তাতে আমাদের মাস তিনেক চলবে। আপনার চাল কিনতে পারেননি। কিছু মনে না করলে চাল লাগলে বলেন আমাদের এত চাল লাগবে না। ওই বুয়ার স্বামী রিকসা চালায়।



বুয়ার এই কথায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বাড়িওয়ালি। গরিব হলেও কাজের সম্পর্কে মানুষের মধ্যে মানুষের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, মায়া মহব্বত সৃষ্টি হয়। তা থেকেই ওই বুয়া তার মনিবের জন্যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ছুটে এসেছেন জানতে তাদের চাল লাগবে কি না।
করোনাভাইরাসের কারণে মসজিদে যাওয়া স্থগিত করা হয়েছে দেখে অনেকের মনে কষ্ট এমনকি কারো মনে ক্ষোভ জমছে। তারা যদি সূরা আল-বাকারাহ’র ১৭৭ থেকে ১৭৯ নম্বর আয়াত পড়েন তাহলে তাদের মনের এ ক্ষোভ থাকবে না। আল্লাহপাক সূরা বাকারাহ’র ১৭৭ নম্বর আয়াতে বলেছেন,
[১] রাজবাড়ীতে জ্বর-শ্বাসকষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু, আশঙ্কা করোনা ≣ ক্রান্তিকালের গৃহবন্দি জীবনে কে কীভাবে সারভাইভ করবে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে, সেটা তার নিজের সিদ্ধান্ত ≣ খ্রিস্টীয় নববর্ষে দেশবাসীকে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آَمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآَتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآَتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ (১৭৭)
‘নামাজের সময় পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে তোমাদের জন্যে কোন সওয়াব বা পূণ্য নেই বরং পূণ্য তার, যে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ ও ঐশী গ্রন্থসমূহ এবং নবীদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। আর সম্পদের প্রতি আসক্ত থাকা সত্ত্বেও যারা আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, পথিক ও ভিক্ষুকদের এবং দাসত্ব মোচনের জন্যে ধন-সম্পদ দান করে ও নামাজ প্রতিষ্ঠাসহ যাকাত দান করে, আর ওয়াদা করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাব, বঞ্চনা ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য ধারণ করে, এরাই ঈমানের দাবিতে কথায়, আচরণে ও বিশ্বাসে সত্যবাদী এবং এরাই ধর্মভীরু।’ (২:১৭৭)
অর্থাৎ আমরা জীবনের মানে বুঝে উঠতে না পারলে তা করোনাভাইরাসের চেয়েও খারাপ। জুম্মার নামাজ পর্যন্ত না পড়তে পেড়ে আমাদের অনেকের মন বেহাল হয়ে উঠেছে। এবার শবে বরাতে মসজিদ থেকে মাইকে হুজুরের আর্তনাদ গুমরে কেদেছে, হে আল্লাহ আমাদেরকে মসজিদে ফিরিয়ে নাও। কিন্তু মানুষ যদি মানুষের কাছে এই করোনাভাইরাসের সময় প্রয়োজনে যেতে না পারে তাহলে এই ইবাদতের কি মূল্য আছে। যেমন ডেমরা এলাকার ওই বুয়াটি তার মনিবের খোঁজে ছুটে গিয়েছে।
কোনো পাঠকের কাছে আমার এ লেখা পড়ে মনে হতে পারে, মসজিদে নামাজ না পড়লেও অসুবিধা নেই যদি মানুষের কাছে যাওয়া যায় অথবা নামাজ পড়লেও কবুল হবে না যদি না অপরকে হেল্প করা যায়। আসলে কোনো আমল অপর কোনো ইবাদতের বিকল্প হতে পারে না। কিন্তু মানুষ যদি মানুষের পাশে বিপদের সময় দাঁড়াতে না পারে তাহলে আমাদের ইবাদত অনেকটাই ভঙ্গুর হয়ে পড়ে কি না সুরা বাকারার এ আয়াত পড়ে আমার মনে সেই প্রশ্ন জেগেছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.