Beanibazarview24.com
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুল হক। পেশায় একজন চা বিক্রেতা। উপজেলার শাইল্যার মোড় এলাকার ছোট চায়ের দোকান থেকে উপার্জিত টাকা দিয়েই চালান পরিবারের খরচ। পাশাপাশি সেই সামান্য টাকা দিয়েই চালাতেন মেজ ছেলে মারুফের পড়াশোনা। এমন অবস্থায় কষ্টে পার করেছেন বছরের পর বছর।
তবে এবার সেই কষ্ট সার্থক হয়েছে শামসুল হকের। ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তার ছেলে মারুফ হোসেন। ছেলের এমন সাফল্য অশ্রু এনেছে শামসুল হকের চোখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে মাস্টার রোলে চাকরি করতেন শামসুল হক। ২০১১ সালে দুর্ঘটনায় পা ভেঙে গেলে চাকরিচ্যুত হন। সেসময় বড় ছেলে ও মেজ ছেলের পড়াশোনা চালানোর তাগিদে ছোট চায়ের দোকান চালু করেন তিনি।
দোকানের উপার্জিত টাকা দিয়েই মারুফের পড়াশোনা চালাতেন শামসুল হক। এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির
শামসুল হকের বানানো চা পান করতে করতে কথা হয় ছেলের বিষয়ে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলেটার ছোট থেকে পড়াশোনার প্রতি খুব মনোযোগ ছিল। আমার চাকরি যাওয়ার পর ওরে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি করতে খুব কষ্ট হয়েছে। স্থানীয় এক সাংবাদিক সাহায্য করেছিল ওই সময়। তারপর তো ছেলেটা ঢাকা গেলো। এখন নাকি বড় চাকরি পাইবে। আল্লাহ আমার দুঃখটা সার্থক করেছে।’
শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মারুফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাবা অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চালিয়েছেন। আজ আমি ৪১তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত। দোয়া করবেন যেন ভালো কোনো স্থানে চাকরির সুযোগ হয়। বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিয়ে যেন তাদের কষ্টের অবসান ঘটাতে পারি।’
বাঙালিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাজাদা সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাবার কষ্টের সঠিক মর্যাদা দিয়েছে মারুফ। আমরা সবাই অত্যন্ত খুশি হয়েছি। মারুফ ও তার পরিবারের জন্য শুভ কামনা থাকলো।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.