Beanibazarview24.com
আষাঢ় মাসের টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে আটকা পড়েছে যানবাহন, সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। বিপণি বিতানগুলোতে ঢুকে পড়েছে পানি। নগরীর বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ইতোমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিনে সোমবার (৩ জুন) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জলাবদ্ধতার বাস্তব চিত্র দেখা গেছে। অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নগরীর বন্দরবাজার, লালাদিঘির পার, জিন্দাবাজার, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, পাঠানটুলা, নোয়াপাড়া, নাইওরপুল, উপশহর, ঘাশিটুলা, ভাতালিয়া, বিলপার, মির্জাজাঙ্গাল, লালাদিঘির পার, মাছিমপুর, বাগবাড়ি, মনিপুরী রাজবাড়ি, জালালাবাদ আবাসিক এলাকা, দরগাহ গেইটসহ অধিকাংশ এলাকায়।
হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় রাস্তায় চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন। ধীর গতির কারণে অনেক সড়কে দেখা দিয়েছে যানজট। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামী মানুষকে।
জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরের দরগা মহল্লা এলাকার বাসিন্দা আজমল আলী বলেন, ঈদ পরবর্তী সময়ে জলাবদ্ধতার জন্য আমাদের অবস্থা নাকাল হয়ে গেছে। পরিবারের অনেকেই ঈদের ছুটিতে ঘরের বাইরে থাকায় ঘরের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
টানা বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসী দোষারোপ করছেন নগর কর্তৃপক্ষকে। তারা এই জলাবদ্ধতার জন্য সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন। অনেকেই বলেন, ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো যদি সঠিক সময় সংস্কার করে রাখা হতো তাহলে এই ভোগান্তি জনগণকে পোহাতে হতো না। বারবার এই ভোগান্তির পর সিসিকের টনক না নড়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নগরীর ঘাসিটুলা এলাকার বাসিন্দা মুজিবুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল থেকে বৃষ্টির পর ঘরে পানি ঢুকে পড়ে অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যায়। ঘরও অনেক নোংরা হয়ে যায়। পরে বৃষ্টি থেমে গেলে বিকেল থেকে রাত অবধি ঘরের পানি সেচে, ধোয়া-মোছার কাজ করে রাতে ঘুমিয়েছিলাম। আজ সকাল থেকে আবার ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। খুব বিরক্ত হয়ে গেছি।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানান, মৌসুমি বায়ু বেশ সক্রিয় থাকার কারণে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। আগামী এক সপ্তাহ একইভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩০৭.৪ মিলিমিটার। এর মধ্যে সকাল ৬টা-৯টা পর্যন্ত ছিল ৪.০ মিলিমিটার, ৯টা-১২টা পর্যন্ত ১৮.০ মিলিমিটার, দুপুর ১২টা-৩টা পর্যন্ত ছিল ১৩০.০ মিলিমিটার, বিকেল ৩টা-৬টা পর্যন্ত ছিল ০.৪ মিলিমিটার সন্ধ্যা ৬টা-৯টা পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত ছিল না। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ছিল ১৫৫ মিলিমিটার। এছাড়া আজ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। আজকে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬১ মিলিমিটার।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.