Beanibazarview24.com






ইউরোপে যাওয়ার দাবিতে অনড় ৯০ জনেরও বেশি শরণার্থী ও অভিবাসীকে জাহাজ থেকে নামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে লিবিয়া। একটি রাবারের নৌকায় ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর ভূমধ্যসাগর থেকে তাদের উদ্ধার করে পানামার পতাকাবাহী একটি পণ্যবাহী জাহাজ। জাহাজে থাকা অভিবাসীদের দাবি ইতালি নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের লিবিয়ার মিসরাতা বন্দরে নিয়ে আসে জাহাজটি।



কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, অভিবাসীদের মধ্যে ১৪ জন স্বেচ্ছায় বন্দরে নেমে গেলেও বাকিরা অস্বীকৃতি জানায়। তাদের আটক কেন্দ্রে নিতে মঙ্গলবার অভিযান চালায় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন দেশটির এক কর্মকর্তা।
কয়েক বছর ধরেই যুদ্ধ ও দারিদ্র থেকে পালিয়ে ইউরোপে নতুন জীবন প্রত্যাশীদের মূল রওনা কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল। নৌকাডুবিতে শত শত অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু ও ইতালির চাপের মুখে গত বছর উপকূলীয় পাচারচক্র বিরোধী তৎপরতা জোরালো করে লিবিয়া। ওই সময়ে নতুন আগতদের চাপে হিমশিম খেতে থাকা ইতালির চাপে বন্ধ হয়ে যায় সমুদ্রে দাতব্য উদ্ধার তৎপরতা।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ইতালির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার চার দিনের মাথায় এই অভিবাসী গ্রুপটিকে উদ্ধার করে জাহাজটি। গত ১০ নভেম্বর তাদের মিসরাতা বন্দরে নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের উত্তর আফ্রিকার দেশটির একটি আটক কেন্দ্রে নেওয়ার কথা বলা হলে অস্বীকৃতি জানায় তারা। আটক কেন্দ্রে যাওয়ার চেয়ে মরতে প্রস্তুত বলে জানায় এসব অভিবাসীরা।
মঙ্গলবার লিবিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় কোস্টগার্ড কমান্ডার তওফিক ইসকেয়ার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, একটি যৌথ দল পণ্যবাহী জাহাজটিতে অভিযান চালায়। তাদের নামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ওই কর্মকর্তা জানান, জোর করে নামানোর সময় বেশ কয়েকজন আহত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসার পর ‘ভালো অবস্থায়’ আছে তারা। পরে এসব শরণার্থী ও অভিবাসীদের ওই শহরের একটি আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
তবে আটক কেন্দ্রে ফিরে যাওয়া খুবই বিপদজনক বলে মনে করে জাহাজটিতে থাকা অভিবাসীরা। এদের মধ্যে কাই (১৮) ও দানিয়েল (১৬)নামে দক্ষিণ সুদানের দুইজন আল জাজিরাকে এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, সেখানে নিপীড়ন ও পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ঝুঁকি আছে।
বিপরীতে ছাড়া পাওয়ার সুযোগ খুব কম বলে দাবি তাদের। দানিয়েল জানান, জাহাজটি উদ্ধারের আগে তাদের নৌকাটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ফেলেছিল। দানিয়েল ও কাই দুজনেই বলেন, জাহাজের কর্মীরা তাদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিলেও তার পরিবর্তে মিসরাতায় নিয়ে আসে।
জাহাজে থাকা অনেকেই লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়ার দাবি করেছে। আবার অনেকেই কর্তৃপক্ষের পরিচালিত আট ককেন্দ্রে মারাত্মক নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতার থাকার দাবি করেছে। এর আগে লিবিয়ার অবৈধ অভিবাসী প্রতিরোধ বিভাগ পরিচালিত আটক কেন্দ্রে মৃত্যুর খবর জেনেছিল আল জাজিরা। ওই খবরের বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পায়নি তারা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.