Beanibazarview24.com






বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিশোরের মৃত্যু নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১টা দিকে হাসপাতালের ২য় তলার ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এসময় নিহত কিশোরের স্বজনরা কর্তব্য চিকিৎসক ও সেবকদের উপর চড়াও হন। পরে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। নিহত কিশোর নিপ্র দাস বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজার এলাকার গুলুয়া গ্রামের বিশ্বজিৎ দাসের পুত্র।



খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় কোন পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেননি।
জানা যায়, রবিবার মধ্যরাতে পেট ব্যথা নিয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিপ্র দাস ভর্তি হন। সকালে রুটিন ওয়ার্কের সময় হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাবেয়া বেগম তাকে চেকআপ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন। এ সময় যে রাতের চেয়ে অনেক সুস্থ ছিল। ফলে হাসপাতাল ত্যাগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে নিপ্র দাস ও তার স্বজনরা। রোগী সুস্থ হয়ে উঠায় ও হাসপাতাল ছেড়ে যেতে চাওয়ায় দুপুর ১২টার দিকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আবারও পেটে ব্যথা অনুভব করে নিপ্র দাস। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ওয়ার্ডে নেয়া হয়। এ সময় তার শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করে ডাক্তারের পরামর্শে অক্সিজেন দেয়া হয়। এ অবস্থায় মিনিট ১৫ থাকার পর নিপ্র দাসের মৃত্যু ঘটে।
আকস্মিক এই মৃত্যুতে রোগীর স্বজন ও পরবর্তীতে হাসপাতালে ছুটে আসা কয়েকজন সহপাঠী উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা কর্তব্যরত নার্স, স্টাফ ও ডাক্তারদের চড়াও হন। হাসপাতালের বেড ও আসবাবপত্র ভাংচুরের চেষ্টা করে উত্তেজিৎ স্বজনরা। খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাসুম হাসপাতালে ছুটে এসে উত্তেজিত স্বজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা ডাঃ মাসুম এর উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে হাসপাতালের স্টাফ ও স্থানীয়রা ডাঃ মাসুমকে সরিয়ে নেন। পরে স্থানীয় মানুষজন ঘটনাস্থলে গিয়ে উশৃঙ্খলকারিদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। এ সময় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হাসপাতালের উত্তেজক পরিস্থিতি দেখে রোগী ও স্বজনরা আতংকিত হয়ে পড়েন। অনেকেই হাসপাতালের নির্ধারীত বেড ফেলে অন্যত্র চলে যান। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা বেডে ফিরে আসেন
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মাসুম আহমদ বলেন, এ খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে রোগীর স্বজনদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা উল্টো আমার উপর চড়াও হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে এবং তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তিনি বলেন, সার্ডেন কার্ডিয়াক এরেস্ট জনিত কারণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসায় কোন ধরণের ত্রুটি করা হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি সিলেট শহরে মাসিক মিটিংয়ে ছিলাম। পরবর্তীতে হাসপাতালে গিয়েছি এবং বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ অবনী শংকর বলেন, হাসপাতালে বিশৃঙ্খলার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ আপোষ হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় কেউ আর কোন অভিযোগ দেয়নি।
সূত্রঃ বিয়ানীবাজার নিউজ ২৪।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.