Beanibazarview24.com






যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থনা করা বাংলাদেশিদের সংখ্যা কমে গেছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের প্রকাশিত এক সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ২২ শতাংশ কমেছে। ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ব্রেক্সিট ইস্যুতে অনিশ্চয়তার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেলেও বাংলাদেশের মতো অ-ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে বিভিন্ন খাতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।



বিগত কয়েক মাসে বাংলাদেশিদের করা এক হাজার ৩৭৪টি আশ্রয়ের আবেদন বিবেচনা করেছে যুক্তরাজ্য। গত বছর পাওয়া আবেদনের চেয়ে এই সংখ্যা ৩৯০টি কম। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর বলেছে, ২০১৮ সালে আশ্রয় প্রার্থনার সর্বশেষ মাস সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৬ লাখ ১৩ হাজার দুইশোটি। গত বছরের চেয়ে এই সংখ্যা ১৬ শতাংশ কম। এবছর আবেদন কমার প্রবণতা অব্যাহত থেকেছে তবে পূর্ববর্তী বছর ৫১ শতাংশ কমলেও সেই হার কমার পরিমাণ কমেছে।



যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (ওএনএস) তরফে স্বরাষ্ট্র দফতরের তথ্য বিশ্লেষণের অংশ হিসেবে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ব্রেক্সিটের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেলেও বাংলাদেশের মতো অ-ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে বিভিন্ন খাতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় বলছে, দুই লাখ ইউরোপীয় নাগরিক যুক্তরাজ্যে আসলেও ছেড়ে গেছে এক লাখ ৪৫ হাজার। ফলে এসময়ে ইউরোপীয় অভিবাসীর নিট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার, যা ২০১২ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন।



যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যশলনাল মাইগ্রেশনের পরিচালক জয় লিন্ডপ বলেন, নিট অভিবাসীর পরিমাণ জনসংখ্যা বাড়ানো অব্যাহত রাখে আর ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠার পর থেকে এটি স্থিতিশীল রয়েছে। ২০১৮ সালের জুনে যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, কাজ এবং পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে আগতদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় অ-ইউরোপীয় অভিবাসীর সংখ্যা ২০০৪ সালের পর এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।



ব্রেক্সিট অনিশ্চয়তার আরেক প্রতিফলনে দেখা গেছে, ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আবেদন গত বছরের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ বেড়ে গেছে। গত বছর ৪৩ হাজার ৫৪৫টি আবেদন পাওয়া গেছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি।
সামগ্রিকভাবে এই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নিট অভিবাসীর পরিমাণ বা গত ১২ মাসে কত মানুষ যুক্তরাজ্যে এসেছে আর কত মানুষ যুক্তরাজ্য ছেড়ে গেছে তার পার্থক্য ছিলো দুই লাখ ৭৩ হাজার।
যুক্তরাজ্যে এখন সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যু ব্রেক্সিট। এর ফলে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে ইইউ-সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাবে। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট গণভোটের ইইউ ত্যাগের প্রচারণায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ইস্যু। চলতি মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে অবশ্য বলেছেন, অভিবাসী কর্মীদের যুক্তরাজ্যে আসার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে ব্রেক্সিট। এর ফলে ইইউ দেশগুলোর অভিবাসী কর্মীরা আর বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে আসা কর্মীদের পিছনে ফেলে বেশি সুযোগ পাবে না।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.