Beanibazarview24.com





জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খু’নি ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদকে (বরখাস্ত) মধ্যরাতে (শনিবার) ফাঁ’সিতে ঝোলানো হবে। শনিবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।



তিনি বলেন, ‘রাত ১২:০১ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর খু’নি মাজেদের ফাঁ’সি কার্যকর করা হবে ইনশাল্লাহ। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’
এর আগে সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও ফাঁ’সি কার্যকর আজ (শনিবার) হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন।
কারা সূত্রে জানা গেছে, সকালে ফজরের নামাজ পড়েছেন ফাঁ’সির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল মাজেদ। সঙ্গে নাস্তা খান। তবে দুপুরে ও রাতের খাবার সম্পর্কে জানাতে পারেনি কারা সূত্রটি।
জেলখানায় মাজেদকে মানসিকভাবে অনেক শক্ত দেখা গেছে। এইদিন কথাও বলেছেন কম। চুপ থাকতে পছন্দ করেন। অনেকটা পাষাণ প্রকৃতির মানুষের মতো তার আচরণ বলে জানায় কারাসূত্র।
শনিবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রস্তুত করা হয় ফাঁ’সির মঞ্চ এবং জ্বালানো হয় মঞ্চের লাইট। বাইরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের মতো আজ সন্ধ্যায় মাজেদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের কথা থাকলেও তারা জেলগেটে আসেনি বলে জানা গেছে।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, দিনের বেলায় ফাঁ’সির ট্রায়ালও করেছেন তারা। ডেপুটি জেলাররা মঞ্চের পাশেই ডিউটি করছেন।
মাজেদের ফাঁ’সি কার্যকর করতে গতকালই জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে একটি দল তৈরি করেছে ঢাকা জেল কর্তৃপক্ষ। সেই তালিকায় জল্লাদ মোহাম্মদ আবুল, তরিকুল ও সোহেলসহ ১০ জনের নাম রয়েছে।
দীর্ঘ দেড় যুগের বেশি সময় ভারতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর এই আত্মস্বীকৃত খু’নিকে গত মঙ্গলবার মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) একটি দল। গত মাসে দেশে ফিরে মাজেদ স্ত্রীর ক্যান্টনমেন্ট আবাসিক এলাকার এক নম্বর রোডের ১০/এ বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
পরদিন বুধবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরীর আদালতে হাজির করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটররা আসামি গ্রেপ্তার দেখানোসহ আসামির বিরুদ্ধে মৃ’ত্যু পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামি আব্দুল মাজেদকে গ্রে’প্তারসহ মৃ’ত্যু পরোয়ানার আবেদন মঞ্জুর করেন।
একই দিন সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন আব্দুল মাজেদ। আবেদন খারিজের পর নিয়ম অনুযায়ী তার ফাঁ’সির কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ৩৪ বছর পর ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। খুব ধীরে দীর্ঘ বারো বছরে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে আইনের প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছতার সঙ্গে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে স্বঘোষিত খু’নিদের মৃ’ত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।
মৃ’ত্যুদ’ণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে কারাবন্দি পাঁচ আসামির ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ফাঁ’সি কার্যকর হয়। তারা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ। মৃ’ত্যুদ’ণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ছয় আসামি পলাতক ছিলেন। এর মধ্যে আবদুল মাজেদকে অবশেষে ধরা হয়।
পলাতক বাকি পাঁচজনের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুর রশিদ (বরখাস্ত) লিবিয়া ও বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন। বেশিরভাগ সময় লিবিয়াতে থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। লে. কর্নেল (অব.) শরীফুল হক ডালিম (বরখাস্ত) পাকিস্তানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী (বরখাস্ত) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে, লে. কর্নেল (অব.) এন এইচ এমবি নূর চৌধুরী (বরখাস্ত) কানাডায় রয়েছেন। আর রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ভারতের কারাগারে আ’টক বলে অনেকে ধারণা করছেন।
সূত্র: ঢাকাটাইমস
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.