Beanibazarview24.com






হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দীর্ঘ ২৭ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে পরপারে চলে গেলেন টিবি রোগে আক্রান্ত সেই মাসুদ। গতকাল শনিবার (১৭ নভেম্বর) বৈরুতের জাহারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে সাতটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল বাইশ বছর। বর্তমানে মাসুদের মরদেহ বৈরুতের জাহারা হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।



গত ২১ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত ১০:৩০ মিনিটে মাসুদকে মুমূর্ষু অবস্থায় তার সহকর্মীরা দূতাবাসের সহযোগীতায় বৈরুতের জাহারা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। হাসপাতালের Emergency Department (Isolation room) মাসুদকে বিচ্ছিন্ন নিরাপদ একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়েছিল।



চিকিৎসকরা জানান, মাসুদ টিবি রোগে আক্রান্ত হয়েছিল এবং গলার বিষফোঁড়ায় ইনফেকশন হয়ে তার পুরো শরিরের রক্ত দূষিত হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও সর্বশেষ রিপোর্টে জানা যায় তার দুটো কিডনি ডেমেজ হয়ে গিয়েছিল। একসাথে অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ডাক্তারগণও চিকিৎসাতে তেমন কোন সুফল বয়ে আনতে পারেননি। ফলে গতকাল শনিবার হাসাপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।



মাসুদ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউপিস্থ রানীখার গ্রামের আলতাব আলীর ছেলে। জীবিকার তাগিদে ২০১৫ সালে বৈরুতের সিন-ইল-ফিল এলাকার সোলাহাট উটপ্লাস কোম্পানীতে শ্রমিকের কাজে মাসুদ লেবাননে আসেন। পরিবারের চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাসুদ ছিলো তার বাবার দ্বিতীয় সন্তান।
মাসুদের এই অকাল মৃত্যুতে লেবাননের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীরা গভীরভাবে শোকাহত। তার শোকসন্তপ্ত বিদেহী আত্মা ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীরাও।
এদিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবারসহ তার নিজ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাংলাদেশ থেকে মাসুদের বড় ভাই মেহেদী হাসান কান্নাজড়িত কন্ঠে এই প্রতিবেদককে বলেন, দূতাবাস যেন তার ভাইয়ের মরদেহটি অতি দ্রুত বাংলাদেশে পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এ বিষয়ে লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার তার এই অকাল মৃত্যুতে বিদেহী আত্মা ও পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, হায়াত এবং মৃত্যুর মালিক মহান আল্লাহতালা। আমাদের দূতাবাসের পক্ষ থেকে মাসুদের চিকিৎসার কোন কমতি ছিল না। এই রকম জটিল সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আগে কম থাকতে যদি চিকিৎসা দেওয়া হতো মাসুদকে হয়তো বাঁচানো যেতো। এখন যত দ্রুত সম্ভব আইনি ঝক্কিঝামেলা সেরে মাসুদের মরদেহ বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার চেষ্টা করবো।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.