Beanibazarview24.com






গত অক্টোবর মাসের এই দিনে (২৩ অক্টোবর) ইরান থেকে তুরস্ক যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন নবীগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা আবু তাহের (২৩)। প্রথমে তার মৃত্যুর সংবাদটি নিয়ে ধূম্রজাল থাকলেও ঘটনার ১১ দিন পরে তার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন তার এক আত্মীয়।



তখন থাকেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তাহেরের মৃত দেহটি কবে দেশে আসবে তারই অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকেন তার স্বজনরা। কিন্তু মৃত দেহটি আর দেশে না আসায় যেন অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চায় না নিহতের পরিবারের। এদিকে মরদেহটি পাঠাতেও মোটা অংকের টাকা দাবী করে আসছিল একটি দালালচক্র।
অবশেষে দীর্ঘ ১মাস অপেক্ষার পর সুন্দর ভবিষ্যৎ আর সোনালী দিনের স্বপ্ন নিয়ে ইউরোপের দেশে পাড়ি দিতে গিয়ে লাশ হওয়া নবীগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা আবু তাহের লাশ স্বজনদের কাছে এসেছে বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর)। একই দিন তার সন্ধ্যায় জানাযা শেষে লাশ দাফনও করা হয়েছে। নিহত আবু তাহের উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ছোট সাকোয়া (মুড়ার পাঠলি) গ্রামের আতাব উল্লার পুত্র।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১০ অক্টোবর আবু তাহের ইরানে পাড়ি জমায় ফ্রান্সে যাওয়ার আশায়। উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের এক দালালের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকার চুক্তিতে গত ১০ অক্টোবর রাত ৪ টার ফ্লাইটে ইরাক হয়ে ইরানে যায় সে।
ইরানে পৌছার পর তাহেরের পরিবার দালালের টাকা পরিশোধ করলে দালাল তাকে ছেড়ে দেয়। তাহের ইরানে কয়েকদিন থাকার পর গত ২৩ অক্টোবর সকালে আরেক দালালের মাধ্যমে তুরস্ক যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এরপর থেকেই তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি আবু তাহেরের। কয়েকদিন সে নিখোঁজ থাকায় চরম হতাশায় ভুগছিলেন তার পরিবারের লোকজন।
গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে ইরান থেকে এক লোক মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানায় আবু তাহের ইরান থেকে প্রাইভেট কার যোগে তুরস্ক যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এ খবর কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না তাহেরের পরিবারের লোকজন। তারা দুর্ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে দুবাই থেকে তাদের এক আত্মীয় দুর্ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ইরানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। তিনি ইরানের শাহরিয়ার হসপিটালে গিয়ে লাশ ও পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হন আবু তাহের মারা গেছে।
মৃত্যুর ঘটনাটি কোনভাবেই বিশ্বাস না হওয়ায় দালালরা বলে ২০ হাজার টাকা দিলে তারা তাহেরের মৃত দেহের ছবি তুলে পাঠাবে। তাদের কথামতো ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর তারা ছবি তুলে পরিবারের ইমোতে পাঠায়। এমনকি দালালরা বলছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিলে তাহেরের মৃত দেহ দেশে পাঠাবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.