Beanibazarview24.com
৪৮ ঘণ্টায় তুরস্ক থেকে এজিয়ান সাগর পেরিয়ে অন্তত ৪৬৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসে এসেছেন। বৃহস্পতিবার গ্রিস কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে অভিবাসী আগমনের হার বেড়ে যাওয়ার মধ্যে নতুন করে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা গ্রিসে পৌঁছালেন। গ্রীষ্মে সাগর শান্ত থাকায় পর্যটন খাতের নৌকা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে মানবপাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে গ্রিস।
একসময় উন্নত জীবনযাপনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের কাছে প্রধান প্রবেশদ্বার ছিল গ্রিস। তবে ভূমধ্যসাগরীয় প্রতিবেশী দেশ ইতালিতে এখন গ্রিসের তুলনায় প্রায় সাত গুণ বেশি মানুষ এসেছেন।
গ্রিক কোস্ট গার্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বুধবার একটি ইয়টে করে ৪২ জন পুরুষ, আটজন নারী এবং একটি শিশু মাইকোনোসে পৌঁছায়। এর কয়েক ঘণ্টা পর নৌযানটিকে পূর্ব এজিয়ান সাগরীয় দ্বীপ প্যাটমসের কাছে থামানো হয়েছিল। কারণ ওই নৌকা থেকে প্রতিবেশী দেশ তুরস্ক থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা একটি অভিবাসী পাচারকারী দলের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
সম্প্রতি তুরস্ক থেকে তুলনামূলক দূরে হওয়ার পরেও গ্রিসের মূল ভূখণ্ড সংলগ্ন দ্বীপ এভিয়াতে অভিবাসী আগমনের হার সম্প্রতি বেড়েছে। বুধবার ওই দ্বীপ থেকে ছয় শিশুসহ ৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে গ্রিসের উপকূলরক্ষীরা। অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, একটি স্পিড বোট তাদের দ্বীপে রেখে তুরস্কের দিকে চলে গেছে।
উপকূলরক্ষীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার গ্রিক জলসীমা থেকে উদ্ধার করা একশ ৮৫ জনসহ সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চারশ ৬৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছেন গ্রিসে।
গত জুনে সাত শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রলার ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের গ্রিস অংশে ডুবে যায়। ওই ঘটনায় মাত্র একশ চার জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। ওই ঘটনায় শত শত মানুষ ভূমধ্যসাগরে মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। অভিবাসীদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিল গ্রিস।
অন্যদিকে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় আবেদনের সুযোগ না দিয়ে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা তাদের ডিপোর্ট বা জোর করে ফেরত পাঠায় বলে অভিযোগ করে আসছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে গ্রিক সরকার।
২০১৫ সালের ইউরোপজুড়ে অভিবাসন সংকটের সময় প্রায় দশ লাখ মানুষ গ্রিস হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করে। এর পরই তুরস্কের সঙ্গে থাকা সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছিল গ্রিস। এরপর অনিয়মিত অভিবাসনকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিল গ্রিস।
এখন প্রায় প্রতিদিনই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন দ্বীপ থেকে। উপকূলরক্ষীরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সামোস দ্বীপে তিনটি পৃথক ঘটনায় দুর্দশাগ্রস্ত নৌকা থেকে অন্তত ৭৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.