Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

করোনারোগীকে ‘প্লাজমা’ দিলেন ভাইবোন


এই করোনাকালে পজিটিভ ও নেগেটিভ শব্দের পাশাপাশি এখন আরেকটি শব্দ খুব প্রচলিত—প্লাজমা। ফেসবুকে এখন প্লাজমা চেয়ে প্রচুর পোস্ট দেখা যায়। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত জটিল অবস্থার রোগীর স্বজনদের ছোটাছুটি চলে প্লাজমা সংগ্রহে। করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তি অনেকের সাহায্যে এগিয়ে আসছেন। মাহপারা তাসনীম ও মাশরুর তাহমিন—এই বোন আর ভাইও এক করোনারোগীকে প্লাজমা দিয়েছেন।

করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিরা শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনায় আক্রান্ত অন্য রোগীকে প্লাজমা দেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, আশাব্যঞ্জক সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত রোগীদের সারাতে প্লাজমা থেরাপির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সরকারের করা কারিগরি উপকমিটির প্রধান অধ্যাপক এম এ খান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘রক্তের জলীয় অংশকে প্লাজমা বলে।

কোনো ব্যক্তি ভাইরাস–ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে তার শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয়। ফলে তার রক্তে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে ও এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়া ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় এই অ্যান্টিবডি রয়েছে, যা সংগ্রহ করে কোভিড আক্রান্ত রোগীর শরীরে দিলে সাময়িক প্যাসিভ ইমিউনিটি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি সার্চ করোনা-২ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে এবং রোগী সুস্থ হতে থাকে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহপারা তাসনীমের মা–বাবা দুজনেই চিকিৎসক। বাবা মশিউর রহমান হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক। মা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক হেলেনা আফরিন। মাহপারা, তাঁর ভাই ‘এ’ লেভেলে পড়ুয়া মাশরুর তাহমিন ও মা হেলেনা করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। ২৭ মে এই ভাইবোন এক চিকিৎসককে প্লাজমা দেন।

মাহপারা বলেন, ‘আমাদেরকে যখন বলেছে যে একজন অসুস্থ, আমাদের প্লাজমাটা ওনার কাজে লাগবে। তখন মনে হলো যে এটা তো আমাদের দায়িত্ব। আমাদের জন্য এটা একটা সুযোগ যে কাউকে সাহায্য করতে পারছি। যাঁরা শারীরিকভাবে সক্ষম, সবার উচিত প্লাজমা দিয়ে সাহায্য করা।’ তিনি জানান, যখন আক্রান্ত ছিলেন, তখন খারাপ একটা সময় গেছে। ভাই আর তিনি সুস্থ হয়ে গেলেও তাঁদের মায়ের সুস্থ হতে সময় লেগেছে। তবে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে এবং আরেকজনকে একই রোগ থেকে সেরে ওঠায় সাহায্য করতে পেরে মাহপারার পরিবার খুশি।

মাহপারা ও মাশরুরের বাবা মশিউর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়েরা ছোট হয়েও এগিয়ে এসেছে। সাহস করেছে। মানুষের ভীতিটা কাটুক। যাঁরা সুস্থ হয়েছেন, তাঁরাও এগিয়ে আসুন। কারও জন্য কিছু করতে পারা অনেক বড় ব্যাপার। এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবাই যদি এগিয়ে না আসে, বিপদ বাড়বেই। এখন পর্যন্ত প্লাজমা চিকিৎসা কিছুটা কার্যকর দেখা যাচ্ছে।’

ছেলেমেয়ের প্লাজমা একজন গুরুতর রোগীর জন্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মশিউর রহমান বলেন, দুজনের প্লাজমা আইসিউতে নিয়ে রোগীকে দেওয়া হয়েছে। এরপর জানতে পারেন যে রোগীর কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মশিউর রহমানের পরিবার সাহসের সঙ্গে নিজেদের বিপদ সামলেছে। এখন অন্যের বিপদেও এগিয়ে এসেছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.