Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

করোনা ঠেকাতে পারলো না পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রেমিক যুগলের বিয়ে


করোনা ভাইরাসও দমাতে পারেনি ভালোবাসাকে। তাই এই লকডাউনের মধ্যে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতান শাহরুখনে আলম কলোনীর ছেলে মুহাম্মদ উমেরকে অনলাইনেই বিয়ের কাজ সেরে ফেললেন জয়পুরহাট পৌর শহরের কাশিয়াবাড়ি এলাকার মেয়ে মুরসালিন সাবরিনা।

বৃহস্পতিবার (২১শ মে) বিকেলে কনের বাড়িতে অল্প কিছু সংখ্যক স্বজন ও স্থানীয় প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতে অনলাইনে এ বিয়ে পড়ান মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট পৌর শহরের কাশিয়াবাড়ি এলাকার পাঁচবিবি সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোজাফ্ফর হোসেনের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মুরসালিন সাবরিনা আমেরিকান অনলাইন বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অফ দ্য পিপল’এ লেখাপড়া করছেন ২০১৮ সাল থেকে। সেখানে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন সাবরিনা। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ‘ইয়েমার’র মাধ্যমে সাবরিনার পরিচয় হয় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতান শাহরুখনে আলম কলোনীর যুবক প্রকেীশলী মুহাম্মদ উমেরের সঙ্গে। উমেরের বাবা বিলাল আহম্মেদ সবজি ও ফল ব্যবসায়ী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। ২০১৯ সালে তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হয় অভিভাবকদের মাঝে। এরপর উভয় পরিবারের অভিভাবকরা তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক উমের এবং তার পরিবার বাংলাদেশে আসার জন্য ২০২০ সালের ৭ ফেরুয়ারি ভিসার আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জয়পুরহাটে সাবরিনা এবং তার পরিবারের খোঁজখবর নেয় স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ভিসা নিয়ে মার্চ মাসেই উমেরের পরিবারের বাংলাদেশে এসে বিয়ে সম্পন্ন করার কথা ছিলো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আর আসা হয়নি। ফলে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত হয়ে যায় তাদের বিয়ে।

তাদের প্রেমের এই সম্পর্ক উভয় পরিবার মেনে নিলেও আপত্তি তোলেন উমেরের বাবা বিলাল আহম্মেদ। তিনি তাদের সম্পর্কের বৈধতা দিতে সাবরিনার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে অনলাইনে বিয়ে সম্পন্নের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি মেনে নিয়ে উভয় পরিবার বৃহস্পতিবার বিকেলে অনলাইনে তাদের বিয়ে সম্পন্নের সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী ওইদিন বিকেল ৫টায় সাবরিনার বাড়িতে স্বজন ও স্থানীয় প্রতিবেশীদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়।

করোনা ঠেকাতে পারলো না পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রেমিক যুগলের বিয়ে

অনলাইনে তাদের বিয়ে পড়ান মওলানা মোস্তাফিুজর রহমান। এ সময় অনলাইনে সাবরিনার কবুল পড়া শোনানো হয় বর উমের এবং তার বাবা বিলাল অহম্মেদকে। একইভাবে অনলাইনে উমেরও সাবরিনাকে স্ত্রী হিসেবে কবুল করে নেন।

কনে মুরসালিন সাবরিনা বলেন, আমি সবার কাছে দোয়া চাইছি। আসলে এভাবে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল না। উমেরের পরিবার বাংলাদেশে আসবে, আমরা একত্রিত হব। তারপর বিয়ে হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ওরা বাংলাদেশে আসতে পারল না। এদিকে দেরি হচ্ছে। সেই কারণে ওর বাবা আমার বাবাকে ফোন করে বলেন কবুলটা অনলাইনের করে ফেলি। ওর বাবা খুব ধার্মিক মানুষ।

এজন্যই আমার পরিবার তাতে রাজি হয়ে যায়। আসলে দেশ কোনো বিষয় নয়। মানুষ যদি ভালো হয় তাহলে যেকোনো দেশেই যাওয়া সম্ভব। এখানে মানবিকতা বড় বিষয়। সেটা পাকিস্তানই হোক আর সিরিয়াই হোক। তারপরও আমার পরিবারও বিষয়টাকে মেনে নেয়াতে সম্ভব হয়েছে।

মুরসালিন সাবরিনার বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, পাকিস্তানি ছেলের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক প্রথমে আমি মানতে চাইনি, কিন্তু পরে খোঁজখবর নেয়ার পর তাদের খুব ভালো লেগেছে। পরিবারও খুবই ভালো।

তাই মেয়ের বিয়ে দিতে সম্মত হয়েছি। অনলাইনেই বিয়ে সম্পন্ন করেছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই জামাই এবং তার পরিবার দেশে এসে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মেয়েকে নিয়ে যাবে। তিনি মেয়ে-জামাইয়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

পৌর এলাকার কাশিয়াবাড়ী মহল্লার নূরানী মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আবু হাসান বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয় এজন্য এখন অনলাইনেই বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.