Beanibazarview24.com
‘ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দিবো, আমরা যখন ফোন দিবো তখন আসতে হবে’। এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পর এভাইে হুমকি দিয়েছে ধর্ষকরা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার আশুরিঘাট এলাকায় ১৭ বছরের এক গৃহকর্মী কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হওয়া ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুকুর আলী (৩৫) নামে এক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে ওই কিশোরী। শুকুর আলী উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের গৌরী শংকর এলাকার মৃত আব্দুল্লা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার নেপথ্যে প্রেমসংক্রান্ত বিষয়ও থাকতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) ও ধর্ষিতার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী সিলেটের একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। তার বাড়ি কুলাউড়ার ভূকশীমইলে। তার বাবা মৎসজীবী বড় দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। কিশোরীর মা দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কুলাউড়া পৌর শহরের আবাসিক একটি এলাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে থাকেন এবং গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। পহেলা বৈশাখের আগের দিন শনিবার সিলেট থেকে ওই কিশোরী কুলাউড়ায় আসে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় মাকে বলে ওই কিশোরী বাসা থেকে নিজের গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এসময় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুকুর আলী নামে এক ব্যাক্তি তাকে পৌর শহরের প্রধান সড়ক থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় জোরপূর্বক তুলে কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের আশুরীঘাট এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে থাকা আরও ৬ জনসহ শুকুর আলী কিশোরীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি মোবাইলে ধারণ করে। ধর্ষণের পর ধর্ষকেরা হুমকি দিয়ে বলে ‘ধর্ষণের কথা কারো কাছে প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি ছেড়ে দেবো। আর আমরা যখনই ফোন দিবো তখন আসতে হবে।’
ঘটনার পর ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধর্ষকেরা শুকুর আলীর কাছে টাকা দিয়ে কিশোরীটিকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় পৌঁছে দিতে বলে। পরে শুকুর আলী কিশোরীকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসার সামনে এনে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে চলে যায়। ঘরে ঢুকে মাকে ধর্ষিত হওয়ার কথা জানায় কিশোরী।
পরদিন ১৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধর্ষিতার মা কুলাউড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমান উল্লাকে বিষয়টি অবগত করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমানউল্লা বলেন, ‘ধর্ষণের আলামত পেয়েছি। ওই কিশোরীকে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে সে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় হাসান (২৪) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। হাসান উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের গৌরীশংকর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.