Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ছেলের মতো আদর দেয়া ইমামের হাতে খু’ন হলেন নিঃসন্তান দম্পতি


পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লায় স্ত্রী ও পালিত মেয়েসহ সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা হ’ত্যার রহ’স্য উদ’ঘাটন করেছে পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ হ’ত্যাকা’ণ্ডের একমাত্র ঘা’তক তানভির হোসেনকে (২৬) গ্রে’ফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর তানভির হ’ত্যাকা’ণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং হ’ত্যাকা’ণ্ডের বর্ণনাও দিয়েছেন। গ্রে’ফতারের সময় তার নিজ বাড়ি থেকে লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উ’দ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া হ’ত্যাকা’ণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি চা’কু, ১টি গা’মছা ও ৪টি মোবাইল ফোন উ’দ্ধার করা হয়।

ঘা’তক তানভির নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার হরিপুর গ্রামের মৃ’ত হাতেম আলীর ছেলে। তিনি দিলালপুর মহল্লায় অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম। ওই দম্পতি নিঃসন্তান হওয়ায় তারা তানভিরকে নিজের ছেলের মতো আদর করতেন।

রোববার (৭ জুন) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম পাবনা পুলিশ লাইনস অডিটরিয়ামে এই চাঞ্চল্যকর হ’ত্যাকা’ণ্ডের বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। সেখানে তিনি জানান, তানভির একাই তিনজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় গামছা পেঁ’চিয়ে শ্বা’সরোধ করেন এবং ধারালো অ’স্ত্র দিয়ে কু’পিয়ে ও কা’ঠের বাটাম দিয়ে মা’থায় আঘা’ত করে নৃশং’সভাবে হ’ত্যা করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, আব্দুর জব্বার দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। সানজিদা জয়া (১২) তাদের পালিত মেয়ে। সানজিদা শহরের কালেক্টরেট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

পুলিশ সুপার জানান, পাবনা শহরের দিলালপুরে ব্যাংক কর্মকর্তা (অব.) আব্দুল জব্বারের ভাড়া বাসার পাশেই ফায়ার সার্ভিস অফিসের মসজিদ অবস্থিত। ওই মসজিদের ইমামতি করা তানভির হোসেনের সঙ্গে দেড় বছর আগে আব্দুল জব্বারের পরিচয় হয়। তার আচার ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে তাকেও আব্দুল জব্বার দম্পতি সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। সেই সূত্রে ওই বাড়িতে তানভিরের অবাধে যাতায়াত ছিল। এমনকি সন্তানের মতোই ব্যাংক, পোস্ট অফিসের টাকা তোলাসহ সব বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করতেন এই নিঃসন্তান দম্পতি। আর এটাই ওই দম্পতির জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

পুলিশ সুপার ঘাতকের বরাত দিয়ে জানান, তানভিরকে তারা সন্তানের মতো ভালোবাসলেও তিনি মনে মনে তাদের অর্থ সম্পদ লু’টপা’টের পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৫ মে ইমাম তানভির ছুটি নিয়ে নিজের বাড়ি নওগাঁর হরিপুর চলে যান এবং ৩১ মে রাতে পাবনায় ফিরে আসেন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তানভির আব্দুল জব্বারের বাসায় এসে ওঠেন। আ. জব্বার রাতে তানভিরকে তার নিজ বিছা’নায় ঘু’মানোর ব্যবস্থা করে দেন। অর্থ্যাৎ এক রুমে তানভির ও আব্দুল জব্বার এবং অন্য রুমে আব্দুল জব্বারের স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও তানভির ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়।

ওই দিন ভোর ৪টা ৫ মিনিটের দিকে আব্দুল জব্বার ঘুম থেকে উঠে বাথরু’মে যাওয়ার চেষ্টা করলে তানভির পেছন থেকে তার গ’লায় গা’মছা পেঁচিয়ে শ্বা’সরো’ধ করে বিছানার ওপর ফেলে দেন। পরে তাকে উ’পর্যুপরি কু’পিয়ে মৃ’ত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর তিনি অন্য রুমে গিয়ে ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদাকে ঘুমের মধ্যেই কু’পিয়ে হ’ত্যা করেন। এরপর তিনি আলমারি থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ১ লাখ ভারতীয় মুদ্রাসহ বেশ কিছু সোনার গহনা নিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে নওগাঁয় নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

ছেলের মতো আদর দেয়া ইমামের হাতে খুন হলেন নিঃসন্তান দম্পতি
ছেলের মতো আদর দেয়া ইমামের হাতে খুন হলেন নিঃসন্তান দম্পতি

পুলিশ সুপার জানান, আব্দুল জব্বার দম্পতি ও তাদের মেয়ের মর’দে’হ উ’দ্ধারের পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোর্য়টার) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন, সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ ও ওসি (ডিবি) ফরিদ হোসেনের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়।

ওই টিম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতক তানভিরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রে’ফতার এবং লুণ্ঠিত টাকা ও সোনার গহনা উ’দ্ধার করে। এছাড়া হ’ত্যাকা’ণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি চাকু, ১টি গা’মছা ও ৪টি মোবাইল ফোন উ’দ্ধার করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ের পরই দুপুরে তানভিরকে পাবনার ১নং আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য সোপর্দ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোর্য়াটার) আরাফাত লেনিন বলেন, আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানব’ন্দির পর তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমা’ন্ডের আবেদন করা হবে।

দুপুর দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তানভিরকে আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছিল। এর আগে নিহ’ত আব্দুল জব্বারের ভাই আব্দুল কাদের বাদী হয়ে পাবনা থানায় একটি হ’ত্যা মা’মলা দায়ের করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শামিমা আখতার, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোর্য়টার) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন, সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ, ওসি ডিবি ফরিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুরের একটি ভাড়া বাসা থেকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পাবনা শাখার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার(৬২), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫৬) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুনের (১২) অর্ধগলিত ম’রদে’হ উ’দ্ধার করে।

নিহ’ত আব্দুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের পাইকরহাটি গ্রামে। এর আগে জব্বার দম্পতি একটি ছেলেকে দত্তক নিয়ে তাকে লালন পালন করে বিয়ে দেন। এরপর একটি মেয়েকে দত্তক নেন। পাবনা শহরের শালগাড়িয়াতে আব্দুল জব্বারের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। তবে তিনি দিলালপুরে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.