Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বৃটেনে সিলেটিরা নজিরবিহীন সঙ্কটে, তবুও…


বৃটেনজুড়ে থাকা লাখ লাখ সিলেটির জীবনে এমন কঠিন সময় অতীতে কখনও আসেনি। প্রায় অর্ধশত বছর ধরে লন্ডনে তাদের বাস। তারা ডুয়েল সিটিজেন। দুই দেশের সমাজ ও রাজনীতিতে বৃটিশ-বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বন্যা কিংবা মানবতার যে কোনো সঙ্কটে সিলেটি বংশোদ্ভূত বৃটিশরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সর্বোতভাবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামা’রি করোনার এই সময়ে আজ তারা বড় বিপদে। ঘরবন্দি, কর্মহীন অবস্থায় জীবন কাটছে চরম অনিশ্চয়তায়। তুলনামূলক প্রশান্তিময় জীবনে আচমকা ঝুঁকিতে তারা!

দৃশ্যত বাংলাদেশের তুলনায় বৃটেনের সঙ্কট শতগুন বেশি।

দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৪ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৭শ ৩৭ জনের প্রাণ গেছে। লন্ডন মিশনের হিসাব মতে, কেবল হাসপাতালেই ৪৫ বাংলাদেশির প্রাণ কেড়েছে প্রাণঘাতি করোনা। বাসা-বাড়িতে কিংবা ওল্ডহোমে আগে থেকে অন্য রোগ-শোকে ভোগে এই সময়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের হিসাব বাদ। করোনায় খোদ বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী আক্রান্ত। আইসিইউতে ৩০ ঘন্টা জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে তাকে।

বৃটিশ রাজপরিবারও স্বস্তিতে নেই। করোনা আক্রান্ত প্রিন্স অবশ্য সেরে ওঠেছেন। পরিস্থিতি এমন কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের কারণে এখন আর কেউই ঝুঁকির বাইরে নন। এই যখন অবস্থা, তখনও দেশে থাকা স্বজনদের নিয়মিত খোঁজ রাখছেন বৃটেনের বাংলাদেশিরা। তারা জানার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের সরকারী ভাষ্য আর বাস্তবতার মধ্যে কোনো ফারাক বা গ্যাপ আছে কি-না? দেশে বেড়াতে এসে নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধের কারণে অাটকেপড়া দুই হাজারের বেশি বৃটিশ বাংলাদেশির ফেরা নিয়েও উদ্বিগ্ন কমিউনিটি!

দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা বৃটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েথ অফিসে যোগাযোগ করছেন। মনের শ্বান্তনার জন্য খোঁজ নিচ্ছেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনেও। আবদুর রহমান নামের মৌলভীবাজারের এক বয়োজ্যেষ্ঠ লন্ডন প্রবাসী (পিতার কর্মসূত্রে তার পুরো পরিবার দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছে) শনিবার মানবজমিন প্রতিবেদককে ফোন করেন পূর্ব পরিচয়ের জেরে। দেশে তার পরিবারের কেউই থাকেন না।

যারা আছেন হয় স্বজন না হয় আত্মীয়। তাদের খোঁজ খবর নিয়মিত নিচ্ছেন জানিয়ে মিস্টার রহমান বলেন, বৃটেনের মত উন্নত রাষ্ট্র যখন করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদশ নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায়। আদতে কি করোনা কমিউনিটিতে ছড়ায়নি, নাকী টেস্ট কম হওয়ার কারণে শনাক্তের হার কম। লন্ডনে থাকা সাজু বখতের সমস্ত চিন্তা দেশে থাকা তার বয়স্ক মাকে ঘিরে। মাকে দেখতে গত ৪ঠা এপ্রিল দেশে আসার টিকেট কনফার্ম করেছিলেন। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তা বাতিল হয়ে গেছে। সাজু ওই প্রতিবেদককে বলেন, অন্যদের নিয়েও ভাবি, তবে মাকে নিয়েই বেশি টেনশন হয়। জানি না কি হবে। মা গ্রামে আছেন। বাড়ির-পরিবারের অন্যরা তাঁর বিষয়ে সতর্ক আছেন। এখন বাকীটা আল্লাহ ভরসা।

স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে যাওয়া তাহমিনা বেগম স্বামী সূত্রে বৃটেনের নাগরিক। মৌলভীবাজার সদরের দুর্লভপুরে তার পৈতৃক নিবাস। বাবা আমিরাত প্রবাসী। মা এবং পরিবারের অন্যরা এখনও দেশে। অবশ্য তাহমিনার চাচা আবদুল মুকিত পরিবার নিয়ে লন্ডনে বাস করছেন বহু বছর ধরে। কিন্তু চাচা-ভাতিজির দেখা নেই আজ মাস। স্কাইপ ও হোয়ার্টসআপে ভিডিও কলে তাদের কথা হয়, দেখা হয়।

মিজ তাহমিনার এখনকার সব চিন্তা তার দুবাই প্রবাসী বাবাকে ঘিরে। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে বলেন, বাড়িতে না হয় মায়ের সঙ্গে সবাই আছেন। বাবা তো একা, আমাদের সবার থেকে অনেক দূরে। তাছাড়া তার বয়স হয়েছে তো। শুনেছি করোনা থেকে বাঁচতে তার অফিস নাকি মরুভূমিতে শিফট করেছে। জানি না, তিনি কতটা নিরাপদে আছেন?

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.