Beanibazarview24.com
কুষ্টিয়ার শহরের পিটিআই রোডে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের বাড়িতে চলছে শো’কের মা’তম। আ’কস্মিক এই হৃদয় বিদারক ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না পরিবার ও স্বজনরা।
ফাহাদের শোকার্ত মা রোকেয়া খাতুন আহাজারি করে বলেন, ছেলেটা ঢাকা মেডিকেল, ঢাবি আর বুয়েটে চান্স পেয়েছিল। সব বিসর্জন দিয়ে ভর্তি হয় বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ার হবে বলে! আজ ছেলেটা লা’শ!
তিনি বলেন, তাকে মেডিকেলে পড়তে বলেছিলাম, সে পড়ে নাই; ছেলেটা আজ মেডিকেলের ম’র্গে!!
নি’হত আবরার ফাহাদ কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির পেছনের বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত ব্র্যাক কর্মী বরকত উল্লাহ-রোকেয়া দম্পতির বড় ছেলে।
গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বরকত উল্লাহর ছেলে বড় ছেলে আবরার ফাহাদ ২০১৫ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে এইচ এসসি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন ঢাকা নটরডেম কলেজে। সেখান থেকে ২০১৭ সালে এইচ এসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন এ প্লাসসহ উত্তীর্ণ হন। পরে বুয়েটের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস বিভাগে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। ফাহাদ সেখানে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
রবিবার রাত ৩টার দিকে হলের এক বড় ভাইয়ের মোবাইল কলে জানতে ফাহাদের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ এইচ এস সি ২য় বর্ষের ছাত্র আবরার ফায়াজ।
ফায়াজ বলেন, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন ফাহাদ ছাত্রশিবির করত। প্রকৃত পক্ষে ফাহাদ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কালাম পড়ত কিন্তু রাজনৈতিক কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নয়।
ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ফাহাদ ছুটিতে বাড়িতে এসে ১০দিন ছিল। আগামী ২০তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তাই রবিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কে বা কারা কি কারণে ছেলে ফাহাদকে নৃশংস হত্যা করেছে তার কিছুই জানেন না তিনি। যারাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।
কুষ্টিয়া শহরের বাড়ির আশপাশের লোকজন ফাহাদ ও তার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলতে না পারলেও তাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে ফাহাদরা সবাই খুব পরিচিত। একসময় এরা সবাই কৃষি পরিবার ছিল। পরে এদের পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বিভিন্ন জায়গায় চাকরি নিয়ে থিতু হন।
কয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপন বলেন, ছেলেটি খুব ভালো এবং ওকে কোনো দিন কোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে দেখিনি। কুষ্টিয়া থেকে এসএসসি পাশ করার পরই ঢাকায় পড়তে চলে যায় সে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.