Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

রাতারাতি সেলিব্রেটি হতে ফেসবুক লাইভে অসভ্যতা








ফেসবুক লাইভ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের একটি নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে ফোনে ভিডিও ধারণ করার সঙ্গে সঙ্গে তা ফেসবুকে সরাসরি সমপ্রচারের সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধার যেমন সদ্ব্যবহার হচ্ছে। তেমনি অপব্যবহার হচ্ছে অহরহ। ভ্রান্তপথে হাঁটছেন অনেকে। রাতারাতি সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিতি গড়ার জন্য ফেসবুক লাইভে নোংরামিতে মেতে উঠছেন। কেউ কেউ নিজেদের পর্নো তারকা সানি লিওন বলে ঘোষণা দিচ্ছেন।



কেউ কেউ নিচ্ছেন বাণিজ্যিক সুবিধাও। ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলার পর তা ছড়িয়ে যাচ্ছে ইউটিউবে। ভাইরাল হচ্ছে অনেক ভিডিও। ইন্টারনেটে সার্চ করে দেশের অর্ধশতাধিক তরুণীদের অশালীন ভিডিও পাওয়া গেছে। দীর্ঘ সময় ধরে লাইভে থাকা এসব তরুণীরা মূলত বিভিন্নভাবে যৌন আবেদন সৃষ্টি করেন। কেউ নানা কথায়, অঙ্গভঙ্গিতে। কেউ কেউ নগ্ন হয়ে যান লাইভে। বন্ধুদের কাছ থেকে মন্তব্য চান।



ফেসবুক বন্ধুরা উৎসাহ দিলে এই কর্মে আরও অনেক দূর এগিয়ে যান। এরকম কয়েক তরুণীর মধ্যে রয়েছেন, মাহির, মোহনা, শারমিন, জুলিয়া, রেশমি, শানহা শিকদার, সাদিয়া, আঁখি, নায়লা, সোনিয়া, জ্যাকলিন।



ঢাকার গুলশানে বসবাসকারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী রেশমি। নিজেকে মডেল, অভিনেত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক ফিল্মে, মিউজিক ভিডিওতে কাজও করেছেন। তাকে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ফেসবুক লাইভে। দেখা গেছে লাইভে এসেই নিজের শরীর প্রদর্শন করতে। ইউটিউবে তার এসব ভিডিও তিনি নিজেই প্রচার করেন। মাত্র কয়েকদিন আগে আপলোড করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে ২ লাখ ৫১ হাজার ভিউয়ার্স।



এটি প্রায় ৫ হাজার শেয়ার হয়েছে। শুধু এই তরুণী না। এরকম অর্ধশত তরুণীর মধ্যে চলছে একটি নীরব প্রতিযোগিতা। শরীর প্রদর্শনের এই প্রতিযোগিতার বিষয়টি তারা নিজেরাই বিভিন্ন লাইভে প্রকাশ করেন। নোংরামির মাধ্যমেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে যেতে চান। রেশমি নামের এই তরুণী স্পর্শকাতর অঙ্গ প্রদর্শন করে একটি লাইভে এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার যা আছে তা তোমাদের নেই। আমি যা দেখাচ্ছি, পারলে তা দেখাও। একেক জনের কত টাকা আছে যে দেশের বাইরে গিয়ে সার্জারি করাবে।’ কোনো প্রকার পোশাক ছাড়াই লাইভে আসার চ্যালেঞ্জ দিয়ে এই তরুণী বলেন, ‘উইদাউট ড্রেস, এসো… শো করি। দেখবো কার… টা কেমন।’ শেখ শামীম পরিচালিত একটি ফিল্মসহ বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন এই তরুণী।



পর্নো তারকা সানি লিওনকেই অনুসরণ করছেন এসব তরুণী। নিজেকে কেউ কেউ বাংলার সানি লিওন ঘোষণা দিয়েই এই নোংরামিতে গা ভাসাচ্ছেন। মোহনা নামে এক তরুণীকে দেখা গেছে, কথা বলতে বলতে নিজের শরীর প্রদর্শন করছেন। একইভাবে আরেক তরুণীর ফটোশুটের একটি ভিডিও দেখা গেছে ইউটিউবে। যেখানে শার্ট ও প্যান্ট পরে ফুটোশুট করছিলেন। হঠাৎ শার্টের বোতাম খুলে দেন। টপলেস অবস্থায় ফটোশুটের এক পর্যায়ে আলোকচিত্রি নিজেই এ নিয়ে প্রশংসা করলে চটে যান এই তরুণী। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্রী হিসেবে পরিচয় দেন কুমিল্লার মেয়ে শানহা সিকদার।



প্রায়ই লাইভে এসে খোলামেলাভাবে কথা বলেন, নিজেকে প্রদর্শন করেন। শানহাকে নিয়ে তোলপাড় টিনেজদের মধ্যে। এ সম্পর্কে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে যেখানে তার সম্পর্কে একাধিক প্রেমের তথ্য দেয়া হয়েছে।

নিজেকে সানি লিওন ঘোষণা দিয়ে ইউটিউবে, ফেসবুকে নানাভাবে নিজেকে প্রকাশ করতেন জ্যাকলিন মিথিলা যার প্রকৃত নাম জয়া শীল। নগ্ন হয়ে ফেসবুক লাইভে হাজির হতেন তিনি। লাইভে থেকেই খুলে ফেলতেন শরীরের বস্ত্র। গত ২রা ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যা করেছেন মিথিলা। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে ঘটছে অন্যরকম ঘটনা। সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো তরুণী তার বন্ধুদের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে হাজির হন। তাদের বন্ধুদের সংখ্যা কম। এবং বন্ধুরা সবাই পরিচিত। যে কারণে এতকিছু না ভেবেই স্বল্প পোশাক পরেই হাজির হন। পরে ওই ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। পরে নানাজনের নানা মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও অপরাধ বিজ্ঞানী তৌহিদুল হক বলেন, বিভিন্নভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের তরুণীদের অনেকে অশ্লীল ছবি বা ভিডিও দিয়ে স্টার হতে চাচ্ছে। এটা এক ধরনের সামাজিক ডিজিজ। ভিনদেশিরা কিভাবে ফেসবুক, লাইভ কিভাবে ব্যবহার করছে তা অনুসরণ করে তারা। ভিন্ন সংস্কৃতিকে অনসুরণ করছে।



ফেসবুক লাইভে কোনটা এক্সপ্রেস করা যাবে, কোনটা যাবে না বিষয়টি না ভেবেই অনেকে লাইভে হাজির হন। তাদের বুঝতে হবে- বহির্বিশ্বের মানুষের মানসিকতা আর আমাদের মানসিকতা এক না। এসব কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। এজন্য যুবসমাজকে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, মূলবোধকে প্রাধান দিয়ে যদি যুবসমাজ সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহার করে তাহলে মানবিক বোধ জাগ্রত হবে। সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি পাবে।

এজন্য যুবদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সরকারকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এ সমাজ বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, তা না হলে এক ধরনের বিপর্যয় তৈরি হবে।





You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.