Beanibazarview24.com
মাহমুদ হোসেন শওকত। ২০১২ সালে খুন হয়েছে দলীয় কোন্দলের জেরে। কিন্তু ২০১৮ সালে কবর থেকে উঠে এসে নির্বাচনী সহিংসতায় যোগ দিয়েছেন তিনি।
এসএমপির কোতোয়ালী থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, মারা যাওয়ার ৬ বছর পর গত ২৩ ডিসেম্বর নগরীর কানিশাইল খেয়াঘাটের সামনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেনের নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত হয়ে হামলা চালান শওকত।
এঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা (নং-৩১ (১২) ১৮) দায়ের করা হয়। এতে ২৭ নং আসামি শওকত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও ঘটনার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমান পেয়ে মামলার এফআইআর-এ তার নাম অন্তর্ভূক্ত করেন। এনিয়ে নগরজুড়ে তোলপাড় চলছে।
মামলার বাদী মো. ফাহিম আহমদ হামীম তার এজাহারে উল্লেখ করেন- গত ২৩ ডিসেম্বর রাত ৯টায় খেয়াঘাটের সামনে রিকশায় করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নৌকা মার্কা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় আসামিরা পথরোধ করে রিকশা থেকে প্রচার মাইক খুলে নেন। বাধা দিলে তাকে গালিগালাজ, মারধরসহ হুমকি দেন এবং তার চারপাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনে টহল পুলিশ এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাল স্কচটেপ মোড়ানো দু’টি ককটেল উদ্ধার করেছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
আর এই মামলায় সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহমুদ হোসেন শওকতকে আসামি করেছেন তিনি। যিনি ২০১২ সালের ২২ মার্চ নগরীর উপশহরে খুন হন।
শওকত ছাড়াও ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল কাহের শামীম, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হুসাইন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক, মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন শামীম ও হুমায়ন কবীর শাহীন, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদি, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জিল্লর রহমান উজ্জ্বল, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিম নাচন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমনসহ অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েকজন।
সর্বমোট ১২০ জনের নামোল্লেখ করে করা এই মামলায় আসামি করা হয়েছে চার কাউন্সিলর, তিন আইনজীবী এবং স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের। এদের মধ্যে আবার আবুল কাহের শামীম, কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনীম, আজমল বখত সাদেক, তৌফিকুল হাদীর নাম উল্লেক করা হয়েছে দুইবার করে।
সরেজমিন কানিশাইল খেয়াঘাট এলাকায় গেলে স্থানীয়রা জানান ককটেল বিষ্ফোরণের কোন ঘটনাই ঘটেনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাদেক আহমদ বলেন, সেদিন এখানে বিএনপির পথসভা ছিল। পথসভা শেষ করে বিএনপির কয়েকজন কর্মী এখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পুলিশের একটি গাড়ি এলে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যায়। ককটেল বিষ্ফোরণ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না না এমন কিছু হলেতো আমরা জানতাম। তারা ছাড়াতো আর কেউ ছিলো না।।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ কমিশনার জেদান আল মূসা বলেন, ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে, দীর্ঘ এজাহার তাই তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয় নি। তদন্তে যদি মৃত, ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না এমন কিছু পাওয়া যায় তবে অবশ্যই তাঁদের নাম বাদ পড়বে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী এটিকে গায়েবি মামলা অভিহিত করে বলেন- এটাতো নতুন নয়। পুলিশ বিএনপির মৃত, প্রবাসী, হাসপাতালে শয্যাশায়ী কাউকেই মামলা থেকে রেহাই দিচ্ছেনা। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে এসব উদ্ভট মামলা দেয়া হয়েছে। এটা শুধু হাস্যকর নয়, অবাস্তব ও অবান্তর।
সূত্রঃ আজকের সিলেট ডটকম
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.