Beanibazarview24.com
হাতে স্মার্ট ফোন থাকার কারণে খুব সহজেই কোনো ঘটনার ছবি, ভিডিও ধারণ করে ছেড়ে দেয়া যায় সামাজিক মাধ্যমে। অনেক সময় ঘটনার আদ্যোপান্ত না জেনেই মনের মতো ক্যাপশন বসিয়ে দেয়া হয় ছবি বা ভিডিওর ওপর। এতে ভিকটিমের (ভোক্তভুগী) অবস্থা কতটা নাজুক হতে পারে সেটা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে ‘ভাইরাল গার্ল’ নামের একটি নাটকে। ২৮ ডিসেম্বর ইউটিউবে প্রকাশ হওয়া নাটকটি রোববার বিকেল নাগাদ সাড়ে ১৪ লাখ ভিউ হয়েছে। কাজল আরেফিন অমি’র পরিচালনায় এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী ও মনোজ প্রামাণিক।
এ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে মেহজাবীন বলেন, সত্য-মিথ্যা যাচাই না করার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন মানুষকে কতটা হ্যারেজম্যান্ট করা যায় তার উদাহরণ ‘ভাইরাল গার্ল’। এই নাটকের গল্প পড়েই ভালো লেগে ছিল। নির্মাণশৈলীর কারণে সেটা আরো সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। আমার মনে হয় এই নাটকটি দেখার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কিছু শেয়ার করার আগে মানুষ কয়েক বার চিন্তা করবে। এটা হলো এই নাটকের স্বার্থকতা।’
অনেক সময় প্রতিপক্ষকে গায়েল করতে ফেক আইডি খুলে যা ইচ্ছে করে যায় লোকজন। তাদের উদ্দেশে মেহজাবীন বলেন, একবার ভিকটিমের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে চিন্তা করুন, দেখবেন নিজের সামান্য আনন্দের জন্য অন্যের কত বড় ক্ষতি আপনি করে দিচ্ছেন। আরেকটা ব্যাপার হলো কেউ কিছু না দেখলেও আল্লাহ সব কিছু নজরে রাখেন। তার কাছে প্রত্যেকটা বিষয়ের হিসাব দিতে হবে।
মেহজাবীনের অভিনয় ক্যারিয়ার প্রায় একযুগ। এই সময়ে অনেক নাটকেই অভিনয় করেছেন। তবে ২০১৭ সালে ‘বড় ছেলে’ নাটকের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি। বিদায়ী বছর ‘ইরিনা’ নামের আরেকটি নাটক তাকে জাত অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। নতুন বছর ‘ভাইরাল গার্ল’ দিয়ে শুরু হলো তার সফলতার নতুন যাত্রা। এই সফলতার কারণেই তার হাতে এখন সবচেয়ে বেশি নাটক। যার কারণে অনেকেই তার সাথে যোগাযোগ করতে চান কাজের খবর জানতে।
কিন্তু তাই বিরুদ্ধে অভিযোগ, মেহজাবীনকে খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেক জনপ্রিয় গণমাধ্যমের কর্মীরাও এই অভিযোগ করেছেন তার বিরুদ্ধে। এর কারণ জানতে চাইলে মেহজাবীন বলেন, যোগাযোগ করলে পাওয়া যায় না অভিযোগটা সঠিক নয়। অনেকেই ফেসবুকে না পেয়ে এমন অভিযোগ করেন। আমি মনে করি ফেসবুক কখনোই ব্যক্তিগত যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হতে পারে না। আপনি যদি আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড না হয়ে থাকেন, তাহলে কিন্তু ভেরিফাইড পেইজে মেসেজ পাঠালে সেটা সরাসরি আমার এখানে আসবে না। তখন রিপ্লে না পেয়ে অনেকে নিজের মতো মন্তব্য করেন। আমার মনে হয় যোগোযোগের ক্ষেত্রে কনটাক্ট নম্বর এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করাটা শ্রেয়। এতে আমি যদি ফোনটা নাও ধরি মেসেজ দিয়ে রাখলে বুঝতে পারব কে আমার সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছেন।
নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি বলেন, নাটকটি গ্রহণ করার জন্য আমি দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ। এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো সিরিয়াস গল্পের নাটক দিয়েও আলোচনায় আসা যায়।
‘সে নো টু অনলাইন হ্যারেসমেন্ট’ স্লোগান নিয়ে নির্মিত নাটকের গল্পে দেখা যায়, বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন মেহজাবীন। পার্লার থেকে সেজে যাওয়ার পথে শিকার হন দুর্ঘটনার। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর করে কয়েকজন। মারধরের ভিডিওটি রীতিমতো ভাইরাল হয় নেটদুনিয়ায়। চাকরি হারান মেহজাবীন। নাটকের শেষে জানা যায়, ফেক আইডির মাধ্যমে অনলাইনে প্রতারণা করে একটি চক্র। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ওই চক্রের সদস্যরা। উদঘাটন হয় সত্য ঘটনা। কিন্তু ততক্ষণে নিভে যায় বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাওয়া নাজিয়ার জীবন প্রদীপ।
নির্মাতা বলেন, ‘গল্পটি বাস্তবধর্মী। সমসাময়িক এমন গল্পের নাটক প্রচারের পর লুফে নিয়েছে দর্শক। নাটকের কমেন্টস বক্সের মন্তব্যই তার প্রমাণ।’ অমি বলেন, ‘একজন স্বাধীনচেতা মেয়ের গল্প ভাইরাল গার্ল। ভাইরাল হওয়ার পর তার জীবনে কেমন কালো অধ্যায় নেমে আসে সেটাই দেখানো হয়েছে নাটকে। ভাইরাল হয়ে পড়ার পরের ঘটনা নিয়েই নাটকের গল্প। নাটকটিতে দর্শকদের রেসপন্স আমাদের মুগ্ধ করেছে।’
‘ভাইরাল গার্ল’ প্রযোজনা করেছে টার্ন কমিউনিকেশন। পরিচালনার পাশাপাশি এটির রচনা ও চিত্রনাট্য করেছেন কাজল আরেফিন অমি। মনোজ-মেহজাবীন ছাড়া এতে আরো অভিনয় করেছেন শাহেদ আলী সুজন, মিলি বাশার, রাজু সরকার, রকি খান, রত্না খান প্রমুখ। নাটকটি লাইভ টেকনোলজির ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি সিনেমাটিক অ্যাপেও ফ্রি দেখার সুযোগ রয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.