Beanibazarview24.com
বিদেশি কর্মী নিয়োগে শূন্য ব্যয় নীতিতে ফিরে আসছে মালয়েশিয়ার দুটি কোম্পানি। আর এ নীতির কারণে অভিবাসন ব্যয় ফিরে পাচ্ছেন মালয়েশিয়ায় কর্মরত ১,২৮১ জন বাংলাদেশি।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ১,২৮১ বাংলাদেশিসহ ১,৬০০ বিদেশি কর্মীর অভিবাসন ব্যয় ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় গ্লোভস প্রস্তুতকারক কোম্পানি ডব্লিউআরপি ও নাইট্রিটেক্স। এর মধ্যে ডাব্লিউআরপি ১০৮২ জন এবং নাইট্রিটেক্স ১৯৯ জন বাংলাদেশির অভিবাসন ব্যয় ফিরিয়ে দিচ্ছে। কিস্তিতে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত, যা তাদের নিয়োগ ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে ডাব্লিউআরপি কোম্পানির কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। সে সময় কোম্পানির বকেয়া বেতন পান কর্মরত ১১৩৭ জন বাংলাদেশি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর দেশটির বৃহত্তর এই কোম্পানিকে হাইকোর্ট দেউলিয়া ঘোষণা করে লিকুইডিটর নিয়োগ করে।
সেসময় টায়েল পার্টনার্স নামক একটি কোম্পানি ২২ মিলিয়ন রিঙ্গিত বিনিয়োগ করে ডাব্লিউআরপি গ্রুপের দায়িত্ব গ্রহণ করে নতুন প্রধান নির্বাহী নিয়োগ দেয়।
কোম্পানির পক্ষে নিযুক্ত আইন সংস্থা থমাস ফিলিপ সেসময় জানিয়েছিল, দ্রুতই উৎপাদন শুরু করতে পারবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কাটানোর প্রচেষ্টা শুরু করে। ক্রমান্বয়ে সব সমস্যার সমাধান হওয়ায় কর্মীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে।
গত বছরের শুরুতে বাংলাদেশি কর্মীসহ বিদেশি কর্মীদের বকেয়া বেতনের দাবিতে স্ট্রাইক করলে বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। মালয়েশিয়ার লেবার ডিপার্টমেন্ট সরেজমিন তদন্ত করে সময়মত বেতন না দেয়া, বেতন আটকে রাখা, ওভারটাইম না দেয়া, অযৌক্তিকভাবে বেতন থেকে কর্তন, অন্যায়ভাবে সরকারি ছুটির দিনে বা বন্ধের সময় কাজ করিয়ে নেয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখতে পায়। তখন কোম্পানি কর্মীদের বকেয়া বেতন দেয় এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়।
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন মানবাধিকার, শ্রম ও অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড ডিপার্টমেন্টকে সমস্যা সম্পর্কে জানালে আমেরিকার বর্ডার অ্যান্ড কাস্টমস কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষ কোম্পানির উৎপাদিত গ্লোভস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা লিকুইডেটরদের এবং মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় ও লেবার ডিপার্টমেন্ট, কোম্পানি ও ইমিগ্রেশন বিভাগের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেন।
বাংলাদেশিসহ সব বিদেশি কর্মীর কল্যাণকে গুরুত্ব দিয়ে আইনগতভাবে সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ।
হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকায় শূন্য ব্যয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণে মিশন নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অন্যান্য আরও অনেক কোম্পানিকে একই ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা জানান।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.