Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মেলার আড়তে একদিনেই ১৮ কোটি টাকার মাছ বিক্রি


প্রায় চারশ’ বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে বগুড়ার পোড়াদহ মেলা।

মাছের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পোড়াদহ মেলায় গড়ে উঠেছে অস্থায়ী পাইকারি মাছের আড়ত।

প্রতিবছরের মতো এবারও মেলা শুরুর একদিন আগে বসানো এসব আড়তে এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকার মাছ।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয়েছে। এদিন দুপুর ১২টার মধ্যেই এসব আড়তে পাইকারি দর হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির মাঝারি ও বড় আকারের প্রায় ১৮ কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়েছে।

আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, মেলা প্রাঙ্গণের পূর্বপ্রান্তে রাস্তা ঘেঁষে ১৪টির মতো বড় আড়ত বসেছে। ভোর ৪টা থেকে মেলায় আসা বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা এসব আড়ত থেকে মাছ কিনছেন। এরপর তারা মেলায় বসানো দোকানে

সেসব মাছ তোলেন। পরে বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। গেল বছরগুলোর তুলনায় এ বছর মেলায় সর্বোচ্চ মাছ আমদানি করেছেন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
এর মধ্যে ব্ল্যাক কার্প, গাঙচিল, চিতল, বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্প, বিগহেড, কালিবাউশ, পাঙ্গাস, হাংড়ি, গ্রাস কার্প, সিলভার মাছ অন্যতম।

জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এ মেলা শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাছ কিনতে শুরু করেন। এসব মাছ তারা সংরক্ষণ করেন ছোট ছোট পুকুরে। মেলা শুরুর একদিন আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছোট-বড় ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মাছগুলো মেলায় নিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় আড়তদারের মাধ্যমে তা মেলায় আসা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।

মেসার্স বায়েজীদ মৎস্য আড়তের মালিক মো. আবু বায়েজীদ পলাশ বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও পোড়াদহ মেলায় আড়ত বসিয়েছন তিনি। এ মেলায় আড়তদাররা ভোর ৪টা থেকে পাইকারি মাছ বিক্রি শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে তিনি মাঝারি ও বড় আকারের বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে ৫-১৫ কেজি ওজনের মাছ সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে।

মেলায় এবার মোট ১৪টি আড়ত বসেছে। প্রতিটিই কোটি টাকার ওপরে মাছ বিক্রি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুই ভাই মৎস্য আড়তের মালিক ফিরোজ আলী ও বিসমিল্লাহ মৎস্য আড়তের মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বাবু বাংলানিউজকে বলেন, তারা প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা মাছ বিক্রি করেছেন। বিক্রি করা মাছের মধ্যে রুই, মৃগেল, সিলভার, বিগহেড, কাতলা অন্যতম।

তারা বলেন, এ মেলায় ৬শ’ থেকে ৮শ’র মতো খুচরা মাছ ব্যবসায়ী দোকান বসিয়েছেন। তারা নিজেরাও বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতা ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে আড়ত থেকেও মাছ কিনেছেন। রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ব্যবসায়ীরা এ মেলায় পাইকারি মাছ বিক্রি করতে আসেন।

এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের মাছ বিক্রির হিসাব জানতে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান আড়তদাররা।

প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় প্রধান আকর্ষণ হয়ে থাকে বড় আকৃতির বাঘাইড় মাছ। তবে, গেল বছর মহাবিপন্ন বাঘাইড় মাছ আহরণ, প্রদর্শন ও বিক্রি বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

চিঠিতে বলা হয়, বাঘাইড় মাছ একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। তাই পোড়াদহ মেলায় মহাবিপন্ন মাছটি কেনা-বেচা বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০০২ অনুযায়ী মেলায় মহাবিপন্ন বাঘাইড় কেনাবেচা করা হলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

স্থানীয়রা ও মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক মাছচাষি কেবল মেলায় বেশি লাভে বিক্রির জন্য মাছ বড় করেন। মেলায় বিক্রির জন্য বেশ আগে থেকেই নদী থেকে বাঘাইড়, আইড়সহ বিভিন্ন মাছ ধরে পুকুরে বা জলাশয়ে বেঁধে রাখা হয়। গেল বছর থেকে মেলায় বাঘাইড় আমদানি বন্ধ হয়েছে। মেলার স্থান পরিবর্তন হওয়ায় আগের মতো বড় আকারে মেলাটি হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। আগে গোলাবাড়ি-সারিয়াকান্দি সড়কের পূর্বে বসতো এ মেলা। কিন্তু গেল কয়েক বছর এ মেলা বসছে রাস্তার পশ্চিমে।

অর্থনৈতিকভাবে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা প্রতি বছর এ মেলায় কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। লেনদেনের বড় অংশ উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তগামী হওয়ায় মেলাটি গুরুত্বপূর্ণ।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.