Beanibazarview24.com
করোনা মহামারির কারণে গোটা দুনীয়াতেই বেকারত্ব আর দারিদ্র বেড়েছে। তার থেকে ব্যাতিক্রম নয় বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধনী রাষ্ট্র সৌদি আরব। দেশটিতে অবস্থান করা বিদেশি শ্রমিকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। বেকার হয়ে পড়েছেন দক্ষিণ এশিয়া থেকে দেশটিতে রুটি রুজির সন্ধানে যাওয়া মানুষেরা। ব্যতিক্রম নয় ভারতীয়রাও, বেকারত্বের কবলে পড়েছেন দেশটির দরিদ্র পীড়িত অঞ্চল থেকে সৌদি আরবে পাড়ি জমানো মানুষগুলো।
মহামারির জেরে কাজ হারিয়ে সৌদি আরবের রাস্তায় ভিক্ষা করতে নেমেছিলেন প্রায় সাড়ে চারশো ভারতীয় কর্মী। ভিক্ষা করার অপ’রাধে তাঁদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আ’টকও করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই সমস্ত কর্মীদের বেশির ভাগেরই ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, কাশ্মীর, বিহার, দিল্লি, রাজস্থান, কর্নাটক, হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্র থেকে। তাঁদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাধ্য হয়ে কোনো রকমে জীবনধারণের জন্য ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তাঁদের একমাত্র অপ’রাধ, তাঁরা রাস্তায় ভিক্ষা করছিলেন। এই অপ’রাধেই তাঁদের আ’টক করেন সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আ’টকের পর তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেড্ডার শুমাইসি ডিটেনশন সেন্টারে।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আ’টক হওয়া ভারতীয় কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ৩৯ জন, বিহারের ১০ জন, তেলঙ্গানার পাঁচ জন, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, জম্মু ও কাশ্মীরের চার জন করে। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে রয়েছেন এক জন।
একে হাত কাজ নেই, তার উপর আ’টক হয়ে চরম ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন ওই কর্মীরা। এক কর্মী অভিযোগ করেন, “আমরা কোনো অপ’রাধ করিনি। কাজ হারিয়ে চরম দুর্দশায় পড়ে শুধু মাত্র ভিক্ষা করছিলাম। এখন ডিটেনশন সেন্টারে আ’টকে পড়ে চরম হতাশায় ভুগছি”।
আরেক জন বলেন, “গত চার মাস ধরে আমরা অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমরা চোখের সামনে দেখেছি, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া এবং শ্রীলঙ্কার কর্মীরা তাঁদের নিজের নিজের দেশের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। তাঁরা নিজের দেশে ফিরেও গিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখানে এ ভাবে আ’টকে রয়েছি”।
গত বুধবার আ’টকে এক ভারতীয়র পরিবারের তরফে টুইটারের মাধ্যমে প্রবাসী ভারতীয় সহায়তা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সর্বশেষ খবর, সহায়তা করার জন্য আ’টকে পড়া ভারতীয় এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ নম্বর জানতে চাওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, ভারতে ফিরে আসার জন্য ২.৪ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক নথিভুক্ত করলেও, শুধুমাত্র ৪০ হাজারই ফিরে আসতে পেরেছেন বলে জানা গিয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.