Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মেম্বারের বাড়িতে নীলার আস্তানা, ভিড় জমে তরুণদের







দুই মাস আগে ভাড়া নেন নীলা (২৪) নামের এক তরুণী। এরপর থেকে মেম্বারের বাড়িতে আনাগোনা বেড়ে যায় তরুণদের। স্কুল-কলেজ ও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছেলেরা প্রতি রাতে আসা-যাওয়া করে। ধীরে ধীরে তরুণদের ভিড় জমে নীলার বাসায়।

কেউ কেউ আবার নীলার বাসায় ৪-৫ দিন থেকে যেত। অতিথিদের জন্য খাবার ও বিনোদনের বিশেষ ব্যবস্থা ছিল নীলার। উঠতি বয়সী ছেলেদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় সন্দেহ সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর। তবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছেলেদের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় নীলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সাহস পেত না কেউ।



অবশেষে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায় এলাকাবাসী। ৩০ নভেম্বর রাতে পুলিশ অভিযান চালায় নীলার বাসায়। এ সময় ২০ পিস ইয়াবাসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ সময় নীলা ও তিন তরুণকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- একই এলাকার কামাল পাইকের ছেলে রফিকুল ইসলাম পাইক, শাওন হালাদার ও আলী হোসেন। গ্রেফতার নীলা আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসিন্দা। নীলাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।



পুলিশ জানায়, স্কুলজীবনের বখাটে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিলে খারাপ কাজে জড়ায় নীলা। নীলার বাবা বাংলাদেশ বেতারে চাকরি করতেন। বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় থেকে পড়ালেখা অবস্থায় নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে নীলা। নেশার জগতে পা দেয়ার কারণে লেখাপড়ায় বেশি দূর না এগোতে পারেনি। বিয়ে দিলেও টেকেনি সংসার।

একাধিক বিয়ের পর নিজের পছন্দে ঢাকার মিরপুরে ওসমান গণি সাফিন নামের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে নীলা। স্বামীর আগের সংসার থাকায় স্বামীর ঘরে উঠতে পারেনি নীলা।



বাধ্য হয়ে বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। মাঝেমধ্যে নীলার কাছে আসে তার স্বামী ওসমান গণি। দাম্পত্য জীবনে নীলা এক কন্যা সন্তানের মা হলেও মেয়েটি মারা যায়। এরপর নীলা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

এভাবে মাদক সেবী থেকে নীলা পা বাড়ায় মাদক ব্যবসায়। নিজের সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিদেশ ফেরত তরুণদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে।



পাশাপাশি সখ্যতা গড়ে তোলে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। ধনাঢ্য মাদকসেবীদের টাকায় নীলা গড়ে তোলে মাদকের সিন্ডিকেট। নিজের ভাড়া বাসায় দিন-রাত চলে মাদক সেবন ও ব্যবসা। চলে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। নীলার বাসায় প্রতিদিন যাওয়া-আসা করে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছেলেরা। প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্যতার কারণে আশপাশের কেউ নীলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বেড়াতে যেত নীলা।



এর আগে গৌরনদীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা অবস্থায় নীলার মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে স্থানীয়রা। পরে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের মেম্বার মিথুনের বাড়ি ভাড়া নেয়।

মাদক আর টাকার পাহাড় গড়ে তোলার নেশায় একপর্যায়ে মাদক সম্রাজ্ঞী বনে যান নীলা। এরই ধারাবাহিকতায় নিজের বাড়িতে মাদকের আস্তানা গড়ে তোলে। সেখানে অবস্থান করা নীলার অতিথিরা ঘর থেকে বের হত না। অতিথিদের খাবার, বিনোদন ও মাদক সেবনের সব ব্যবস্থা ছিল নীলার বাসায়।



বাড়ির মালিক আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মিথুন বলেন, দুই মাস আগে বাসা ভাড়া নেয় নীলা। কিছুদিন আগে জানতে পারি নীলা খারাপ কাজে জড়িত। তাই বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার নোটিশ দিয়েছি তাকে। গত ১ ডিসেম্বর বাসা ছাড়ার কথা থাকলেও ৩০ নভেম্বর রাতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, এত বড় মাদকের সিন্ডিকেটের কথা আমি জানতাম না। নীলাকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নীলাকে গ্রেফতারের পর এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে।











You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.