Beanibazarview24.com
মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে গত বুধবার হোয়াইট হাউজে মতবিনিময় করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাংলাদেশের হয়ে ট্রাম্পের কাছে অদ্ভুত নালিশ করেন এক নারী। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই নালিশ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা পর ওই নারীর পরিচয় বেরিয়ে এসেছে।
নালিশ করা ওই নারীর নাম প্রিয়া সাহা। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বাড়ি চরবানিরী, মাটিভাঙ্গা, নাজিরপুর, পিরোজপুর বলে জানা গেছে। প্রিয়ার স্বামী মলয় সাহা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)এর সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
এছাড়া প্রিয়া সাহা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘শারি’-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন। একইসাথে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদেরও একজন সংগঠক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন প্রিয়া সাহা।
প্রিয়া সাহার এরকম দেশদ্রোহী মিথ্যাচারের কারনে সারাদেশের মানুষ তার প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেই মিথ্যাচারের ভিডিও। কেউ কেউ দাবি করছেন এটি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখার।
এ নিয়ে সাংবাদিক রুদ্র সাইফুলের তথ্যবহুল একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। পোস্টে তিনি লিখেন,প্রিয়া সাহা মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, রোকেয়া হলে থাকতেন। এখন একটি এনজিও আছে ওনার।
বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নাটক করে প্রচুর বিদেশি ফান্ড কালেক্ট করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চরবানিরী, মাটিভাঙ্গা, নাজিরপুর, পিরোজপুর।
প্রিয়ার স্বামী মলয় সাহা সহকারী পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), তাদের দুই মেয়ে কয়েক বছর ধরে মলয় সাহার দুর্নীতির টাকায় আমেরিকায় বসবাস করছেন, কিছুদিন পূর্বে প্রিয়া সাহাকে দুদকের অফিসিয়াল গাড়ি ব্যবহার করে এয়ারপোর্টে পৌছে দেন তার স্বামী, দুদকের সহকারী পরিচালক মলয় সাহা।
সকালে এয়ারপোর্ট পৌছে ফ্লাইট মিস করেন প্রিয়া, তারপর সেদিন রাতেই আরেকটি ফ্লাইটে তিনি আমেরিকায় রওনা হন, তার বিদায় মুহূর্তে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আকবর কবিরের কন্যা তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির।
প্রিয়ার সাহার এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গী হওয়ায় তার স্বামী মলয় সাহাকে অতিদ্রুত চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক; ভুলে গেলে চলবে না তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে অলরেডি অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছেন বাংলাদেশের।
বুধবার (১৭ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ধর্মীয় নীপিড়নের শিকার হওয়া ১৯টি দেশের ২৭ জন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে প্রিয়া সাহা নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, ‘স্যার আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান বিলীন হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই। সেখানে এখনো ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু থাকার জন্য সাহায্য করুন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি-ঘর হারিয়েছি, তারা আমার বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা আমরা জমিজমা দখল করে নিয়েছে। কিন্তু তারা (সরকার) কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এখন পর্যন্ত।’
এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই নারীকে প্রশ্ন করেন, ‘কারা জমি দখল করেছে, করা বাড়ি-ঘর দখল করেছে?’
ট্রাম্পের প্রশ্নের উত্তরে ওই নারী বলেন, ‘তারা মুসলিম মৌলবাদি গ্রুপ এবং তারা সব সময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়। সব সময়ই পায়।’
এ খবর সম্প্রচার করে মার্কিন টিভি চ্যানেল এবিসি নেটওয়ার্কের চ্যানেল এবিসি ফোর ইউটাহ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ভিডিওটি এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে নানা ধরণের মন্তব্য করছেন অনেকেই।
তবে, প্রিয়া সাহা কোন সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং কিসের ভিত্তিতে এসব অভিযোগ করেছেন সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানার জন্য প্রিয়া সাহার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে হিন্দু বৗদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিউবার্ট গোমেজের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে ফোন রেখে দেন।
এ বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রিয়া সাহা যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা তার একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। এ বিষয়ে তিনিই ভালো ব্যাখা দিতে পারবেন।’
প্রিয়া সাহার আমেরিকা যাওয়ার প্রসঙ্গে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রিয়া সংগঠনের ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে একজন। তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সেখানে পাঠানো হয়নি। ট্রাম্পের সাথে তার সাক্ষাতের বিষয়টি আমি জানি না।’
পরে প্রিয়া সাহার বেসরকারি সংস্থা সংস্থা ‘শারি’-এর কার্যালয়ে ফোন করা হলেও কেউ তা রিসিভ করেননি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.