Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সৌদি আরবে বাংলাদেশের নারী মুনাজ্জিম আয়েশা


বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের অর্জনের তালিকা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, গবেষণা কিংবা সৃজনশীলতা। প্রত্যেকটি অঙ্গনে বাংলাদেশিরা এখন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।

এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশি এক নারীর নাম। তিনি হলেন আয়েশা চৌধুরী। যিনি হাজীদের নিয়ে কাজ করে সৌদিতে প্রথম নারী ‘মুনাজ্জিম’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন। সৌদি আরবে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবেও তিনিই একমাত্র নারী মুনাজ্জিম। মুনাজ্জিম মূলত বাংলাদেশ সরকার কর্র্তৃক নির্বাচিত সৌদি আরবের প্রতিনিধি।

কেন এলেন এ পেশায় আয়েশা, আর কি করেই বা এ পেশার প্রতি তার আগ্রহ হলো। তা নিয়ে কথা বলেছেন। বিষয়টি জানতে শুরুতেই আয়েশা বলেন, ‘সময়টা ছিল ২০০৪ সাল। যখন আমি শিক্ষার্থী ছিলাম।

মক্কা-মদীনায় যারা হজ করতে যেতেন তাদের প্রতি একটা প্রবল আগ্রহ ছিল আমার। আশে পাশে যারা হজে যেতেন তাদেরকে সহযোগিতা করার একটা বাসনা কাজ করতো আমার মধ্যে। কারণ হজযাত্রীদের সহযোগিতা করলে নাকি অনেক সওয়াব পাওয়া যায়।’

২০০৪ সালে মায়ের সঙ্গে হজে যাওয়ার প্রথম সুযোগ হয় আমার। সেখানে যাওয়ার পর দেখি অনেক মহিলা হাজী ভাষাগত কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তখন আমার মনে হজযাত্রীদের নিয়ে কাজ আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো।

ভাবলাম যদি নিজেকে তাদের সহায়ক হিসেবে কোনো কাজ লাগানো পারি তাহলে অনেক সওয়াব পাওয়া যাবে। এরপর দেশে এসে সেই চিন্তা থেকেই কাজে নেমে পড়ি। কিন্তু হজযাত্রীদের নিয়ে এ ধরণের কাজ করতে হলে প্রথমেই হজ এজেন্সির একটা লাইসেন্স প্রয়োজন।

যেটার মাধ্যমে হাজীদের সেবা দেওয়ার কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে শুরু করা যাবে। একটা বিষয় বলে রাখি হাজীদের যারা সহযোগিতা, নির্দেশনা এমনকি তাদের তদারকি করেন তাদেরকে মুনাজ্জিম বলা হয়। ’

নারী মুনাজ্জিম হিসেবে এ ধরণের কাজ করতে গেলে কোনো সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে আয়েশা বলেন, ‘সমস্যার সম্মুখীন তো হতে হয়ই। কারণ প্রথমত যারা হ্জ করতে যান তারা চিন্তা করেন হুজুরের মাধ্যমে যাবো। হুজুরের মাধ্যমে হজ করবো। গ্রামের মানুষরা এটি সাধারণত বেশি বিশ্বাস করে। তাই এ কাজে নারী মুনাজ্জিম থাকতে পারে এটা তারা ভাবতেই পারেন না।’

‘তবে আমার যে চিন্তাটা সেটি হলো-হজ করতে হলে আপনাকে হজের নিয়মগুলো জানা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আমরা হজের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করি। এবং সেটি আমরা হুজুরের মাধ্যমেই করিয়ে থাকি।

হজ করতে যাওয়ার সময় হজের ৫দিন যে কার্যক্রম থাকে সেখানে আমাদের এজেন্সির কর্মীরা কাজ করেন। অর্থাৎ হজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে কাজ করা হয় তা পুরুষ কর্মীরাই করে থাকেন। যেখানে নারীর প্রয়োজন সেগুলো আমি করে থাকি।’

২০১৬ সালে ‘হজ উইথ আয়েশা’ নামে এজেন্সির লাইসেন্স বের করে কাজ শুরু করেন আয়েশা। ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সদর থানার চিনাইর গ্রামের এস বি চৌধুরীর মেয়ে আয়েশা তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তৃতীয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে এম. ফিল – এ অধ্যয়নরত।

পড়াশুনার পাশাপাশি বর্তমানে মুনাজ্জিম হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি হাজীদের হজের কার্যক্রম বিশেষ করে ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে হজ ট্রেনিং, হজের গাইডলাইন দিয়ে থাকেন। এছাড়া হজের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে আয়েশার এজেন্সি।

নারী মুনাজ্জিম হিসেবে নারীদের কতটুকু অগ্রাধিকার সে বিষয়ে জানতে চাইলে আয়েশা বলেন, ‘এখন প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নারীদের পদচারণা। নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। অনেক নারী এ কাজে এগিয়েও আসছেন। হজের জন্য যে অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে (হ্যাব) সেখানেও যদি নারী নেতৃত্ব থাকে তাহলে নারীরা আরও বেশি আগ্রহী হবেন।’

হজের কার্যক্রমের পাশাপাশি আয়েশা চৌধুরী ‘স্বপ্নফেরী সোস্যাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটি’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত আছেন। যেখানে নারীদের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে, তাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

আয়েশা চৌধুরী নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ভিন্ন একটি সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তিনি দেখিয়েছেন ইচ্ছা থাকলেই যেকোনো মানুষ যেকোনো কিছু করে দেখাতে পারেন।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.