Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

স্বপ্নে হলেন ডাক্তার, নিঃসন্তান নারীদের দেখাচ্ছেন সন্তানের মুখ!







মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার গ্রামের নাম নয়ানন্দ। এ গ্রামের বাসিন্দা মান্নান কবিরাজ। তার বাবা মৃত হাজী ইউসুফ আলী কবিরাজ। তিনি স্বপ্নে পেয়ে ডাক্তার হয়ে সর্বরোগের চিকিৎসা করতেন। বাবার মৃত্যুর পর ২৬ বছর আগে নয়ানন্দ গ্রামে নিজ বসত-ঘরে রোগী দেখার জন্য খুলে বসেছেন চেম্বার। সেখানে হাড়-ভাঙ্গা চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। গ্যারান্টি সহকারে করছেন গাইনী সংক্রান্ত চিকিৎসা। ঝাঁড় ফুক দিয়ে নি:সন্তান নারীকে দেখাচ্ছেন সন্তানের মুখ। শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন সনদ না থাকলেও হাড়-ভাঙ্গা ও গাইনী চিকিৎসার মধ্য দিয়ে মান্নান কবিরাজ এখন এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার।



সরেজমিনে নয়ানন্দ গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চেম্বারে বসে রোগী দেখেন। মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলা ছাড়াও বরিশাল, চাঁদপুর, ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকেও তার কাছে রোগী আসে। হাত-পা ভেঙ্গে গেলে সাধারণত বাঁশের কঞ্চি ও লতাপাতা দিয়েই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন এই ডাক্তার। তবে জটিল ধরনের হাড়-ভাঙ্গা সেই সব রোগীকে সার্টিফিকেটধারী চিকিৎসকদের মতো ব্যান্ডেজ করে থাকেন। এক্স-রে রিপোর্টের প্রয়োজন নেই তার। খালি চোখে এক্স-রে পেপার দেখেই তিনি সব বুঝতে পারেন। আর সেই মোতাবেক হাড়-ভাঙ্গার চিকিৎসা করে থাকেন তিনি। চিকিৎসা কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি তার চেম্বারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। যখন যে রোগী আসেন, তা দিয়েই চিকিৎসা দিচ্ছেন গ্রামের এই ডাক্তার।



এদিকে, ২৬ বছরের ডাক্তার জীবনে তিনি একবার গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। ভুয়া ডাক্তার হিসেবে উত্তেজিত গ্রামবাসী তাকে গ্রাম ছাড়া করে। মাস খানেক পলাতক থাকার পর আবার তিনি গ্রামে ফিরেন। আবার শুরু করেন রোগী দেখা। হয়ে উঠেন পুরোদস্তুর ডাক্তার।



কেন গ্রামে ফিরে আবার চিকিৎসা শুরু করলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার মান্নান জানান, নিজের গ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দরিদ্র রোগীদের কথা চিন্তা করে আবার চিকিৎসা সেবায় নেমেছেন তিনি। দাবি করেন, রোগীদের কাছ থেকে নির্ধারিত কোন ফি নেন না। রোগীরা যে যার সামর্থ অনুযায়ী টাকা নেন। তার হাতে এ পর্যন্ত কোন রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠেনি-এমন নজির নেই। তার এই চিকিৎসা পদ্ধতি আইন সম্মত কিনা জানতে চাইলে -তা জানার বিষয় নয় বলে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন তিনি।



চিকিৎসার সময় কোন রোগী ক্ষতিগ্রস্থ হলে কি করে থাকেন এমন প্রশ্নে ডাক্তার মান্নান কবিরাজ বীরদর্পে বলেন, চিকিৎসা করলে রোগীর ক্ষতি হতেই পারে। ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগী মরলে-তার দায়িত্ব কি ডাক্তার নেয়। তবে আমি কেন দায়িত্ব নেব।



চিকিৎসা সেবার নানা প্রসঙ্গে ডাক্তার মান্নান কবিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, আমি গাছ, লতা পাতা দিয়া চিকিৎসা করে থাকি। আমার কোন একাডেমিক শিক্ষা নাই। বাবার কাছ থেকে ডাক্তারি শিখেছি। আমার বাবা স্বপ্নে পেয়ে ৮০ বছর ডাক্তারি করেছেন আমার বাবা। আর আমি ২৬ বছর যাবত ডাক্তারি করছি। আমার বাবা করে গেছেন, আমি করে যাচ্ছি। এটা আইন সম্মত না হলে সরকার বন্ধ করে দিবে। সরকার মানুষের ভাল না চাইলে, সরকার মানুষের উপকার না চাইলে আমার কি করার আছে।

মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বী বলেন, মান্নান নিজেকে কবিরাজ বা ডাক্তার পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীর যে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন তা অপচিকিৎসাই বলব আমি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর প্রমাণ পেলে প্রশাসনের সহায়তায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে অন্যদের ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.