Beanibazarview24.com
সিলেটের বিয়ানীবাজারে প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা তরুণীর প্রবীণ শিক্ষক বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ গ্রামের বাড়িতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বলে জানিয়েছেন প্রয়াতের ছেলে বসুদেব চক্রবর্তী।
পেট্রলের আগুনে দগ্ধ প্রবীণ শিক্ষক বিয়েন্দুভূষণ চক্রবর্তী ছয়দিন ভোগার পর বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় বিয়ানীবাজারের গ্রামের বাড়িতে।
লোমহর্ষক এ ঘটনার আড়ালে আছেন এক কানাডা প্রবাসী। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করলে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে পুরো পরিকল্পনা বিচারকের খাসকামরায় স্বীকার করে আসামি জয় লাল নাথ। বৃহস্পতিবার জয় লাল নাথ আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে লোমহর্ষক ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
আদালত সূত্র জানায়, এলাকার এক প্রভাবশালী কানাডা প্রবাসীর নির্দেশ মতো এমন লোমহর্ষক ঘটনা ঘটানো হয় বলে জয় লাল আদালতকে জানান। জয়ের দাবি, কানাডা প্রবাসীর সঙ্গে নিহত বিয়েন্দুভূষণের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি এমবিবিএস পাসের পর তা অস্বীকার করে। সম্প্রতি বিয়ের প্রস্তাব দিলেও তার বাবা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
সেই ক্ষোভ থেকেই বিয়েন্দুভূষণের ওপর ক্ষেপে যান কানাডা প্রবাসী। প্রতিশোধ নিতে ভাড়া করেন দুর্বৃত্ত। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর বিয়েন্দুভূষণের বাড়িতে যান।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বাইরে থেকে ডাক দিলে বেরিয়ে আসেন প্রবীণ শিক্ষক বিয়েন্দুভূষণ। বেরিয়ে আসা মাত্রই মুখে পেট্রল ছুড়ে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে বিয়েন্দুভূষণের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রবীণ শিক্ষকের শরীরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠার পর দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী শিপ্রা রাণী চক্রবর্তী।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি অবনী শংকর কর বলেন, প্রবীণ শিক্ষকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনায় দুই সহোদরকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা হল- জয় লাল নাথ ও জয়ন্ত লাল নাথ। পুলিশ জানায়, ৩০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ গ্রামের নিজ বাড়ির উঠানে পেট্রল ছুড়ে পুড়িয়ে দগ্ধ করে দুর্বৃত্তরা।
পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা তাকে প্রথমে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিন তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার সিটি হাসপাতালে ছয় দিন চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি মারা যান।
তথ্যসূত্রঃ যুগান্তর
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.