Beanibazarview24.com
‘মহিমা’ বয়স মাত্র ৬ পেরিয়ে ৭ এ পড়েছে। নামের সাথে রয়েছে অসাধারণ মিল। বাবার প্রতি এইটুকু মেয়ের ভালোবাসা দেখে অনেকে হতবাক। ঘটনাটি সোমবার বিকেলের।
পাঠকদের উদ্দেশ্য ঘটনাটি তুলে ধরা হলো।
মহিমার বাবা মজিবর মা’দক মামলার আ’সামি হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে হা’জতবাস করছেন। বাবাকে না পেয়ে বারবার তার মায়ের কাছে বায়না ধরেছে বাবাকে দেখার জন্য। অনেক দিনে বাড়িতে না আসায় বাবার জন্য প্রায়ই কা’ন্নাকা’টি করে মহিমা। এজন্য মায়ের হাতে তাকে মা’রধ’রও খেতে হয়েছে কয়েকবার।
তবুও নাছোড় বান্দা সে। বাবার সাথে দেখা করবেই। বাবার প্রতি মেয়ের টান তাকে ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। মায়ের কাছে জানতে পারে তার বাবা জে’লখা’নায় আছে। তাই ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাবাকে এক নজর দেখার জন্য ফতুল্লার মাহমুদপুর করিম মার্কেট এলাকা থেকে একা একা নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে ছুটে আসে ছোট্ট মহিমা ।
কারাগারের সামনে এসে কীভাবে দেখা করতে হবে তা তো জানে না সে। উপায় না পেয়ে কাঁ’দতে থাকে। তার কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে কারাগারের পরিবেশ। একা একা একটা ছোট্ট মেয়ে কারাগারের সামনে কাঁ’দতে দেখে এগিয়ে আসে কা’রারক্ষী’রা।
ছোট্ট মহিমাকে জিজ্ঞাসা করতেই হাউমাউ করে কেঁ’দে ওঠে সে। বলতে থাকে, সে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। মা তার বাড়িতে নি’র্যাতন করে বলে জেলখানায় বাবার খোঁ’জে একা একাই চলে এসেছে। কারা কর্তৃপক্ষ মেয়েটির সাথে কথা বলে তার বাবার সাথে দেখা করিয়ে দেয়। পরে কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা কা’রাগা’রের ডেপুটি জেলার তানিয়া জামান বলেন, বাচ্চা মেয়েটি কান্না করতে থাকে। এক পর্যায়ে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার বাবার সাথে দেখা করতে এসেছে। বাবার নাম বলতে পারায় তার বাবাকে খবর দেয়া হয়। বাবা নিজের মেয়ে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে। পরে মেয়ের বাবার থেকে ঠিকানা নিয়ে মেয়েটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।
এদিকে মহিমার সাথে তার বাবার সাক্ষাতের পর কয়েকটি ছবি নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের ফেসবুকে আপলোড করার পর আলমগীর নামের একজন মন্তব্য করে লিখেছেন,
এ ধরনের ভাল কাজগুলি কারা অধিবদপ্তর আশা করি নোট করে রাখবেন এবং কারা সপ্তাহে সম্মানোনা প্রদান করবেন যাহাতে সবাই মা’নবিকতা ও মহৎ কাজের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে আগামীতে।
শামসুল আলম নজরুল লিখেছেন, বাবার প্রতি মেয়ের এক অফুরন্ত ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আর কারা কতৃপক্ষের মা’নবিকতা। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন।
শুভ্র ঘোষ লিখেছেন, সহনশীলতা, মানবিকতা, সর্বোপরি আমাদের প্রত্যেকের এক সাথে কাজ করার মা’নসিকতায়, নারায়ণগঞ্জ কারাগার একের পর এক সফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। এই কারাগারের উন্নয়নমূলক ও ভালো কাজ করার পিছনে কা’রাগা’রের প্রত্যেক সদস্যদের অবদান অতুলনীয়। ধন্যবাদ এই পরিবারের সকল সদস্যদের।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.