Beanibazarview24.com
চীনের উইঘুর গোত্রভুক্ত মুসলিম নারীদের জো’রপূর্বক ব’ন্ধ্যা বানানো হচ্ছে। দেশটির জিনজিয়াং প্রদেশে কথিত ‘পুনঃশিক্ষা’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আ’টক ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমের মধ্যে যেসব নারী রয়েছেন তাদের সঙ্গে এমনটা করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
জিনজিয়াংয়ের সেসব শিবিরে একসময় বন্দি থাকা নারীর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। চীনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এসব মুসলিম দীর্ঘদিন ধরে জিনজিয়াংয়ে নি’র্যাত’নের শি’কার হচ্ছেন।
জিনজিয়াং প্রদেশ চীনের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত। ওই অঞ্চলটি স্বর্ণ, তেল ও গ্যাসসম্পদে সমৃদ্ধ। সেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা সবাই উইঘুর সুন্নি মুসলমান। তারা চীনা নয়, তুর্কি ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত। কথাও বলেন উইঘুর ভাষায়। স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন করতে পারে ভেবে তাদের আ’টকে রেখে নি’র্যাত’ন চালাচ্ছে চীনা সরকার।
গুলবাহার জালিলোভা। চীনা সরকারের কথিত ‘পুনঃশিক্ষা’ ব’ন্দীশিবিরে এক বছরের বেশি সময় আ’টক ছিলেন তিনি। পরে বুদ্ধি খাটিয়ে একসময় তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘নি’য়মিত বিরতিতে আমাদের শরীরে ই’নজেকশন দেয়া হতো।’
চীনা সরকারের নি’র্যাত’নের শি’কার ৫৪ বছর বয়সী ওই উইঘুর মুসলিম নারী বলেন, ‘দরজার ছোট্ট একটি খোলা অংশে আমাদের হাত-পা বেঁধে রেখে ই’নজেকশন দেয়া হতো। ই’নজেকশন দেয়ার পর আমরা বুঝতে পারলাম কোনোভাবেই আমাদের আর ঋ’তুস্রা’ব (পিরিয়ড) হচ্ছে না।’
গুলবাহার আরও জানান ১০ ফুট বাই ২০ ফুট ছোট্ট একটি বন্দিশালায় (সেলে) ৫০ জনের বেশি মানুষের সঙ্গে বসবাস করতে হতো তাকে। তখন নিজেকে একটি মাংসের টুকরো বলে মতে হতো তার। চলাফেরা করতে পারতেন না।
গুলবাহারের মতো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে ৩০ বছরের মেহেরগুলকে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত। ২০১৭ সালে যখন জিনজিয়াংয়ের ব’ন্দীশিবিরে ছিলেন তখনকার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘নাম জানা কত ওষুধ সে’বন এবং ই’নজেকশন নিতে বাধ্য করা হতো আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘আমি এক সপ্তাহ অ’চেতন হয়ে পড়েছিলাম। সেসব দিনের কথা কিছুই মনে করতে পারি না। আমার স্মৃতিশক্তি লো’প পেয়েছিল এবং আমি সম্পূর্ণ হ’তাশ হয়ে পড়েছিলাম। চার মাস পর যখন প্রমাণিত হল আমি মা’নসিকভাবে অ’সুস্থ তখন আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
মেহেরগুল জানান, যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পর তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায়, তাকে ই’নজেকশনের মাধ্যমে ব’ন্ধ্যা বানানো হয়েছে। তিনি আর কখনও সন্তান জন্ম দিতে পারবেন না। আরও লাখ লাখ নারীকে এভাবে জো’রপূর্বক ব’ন্ধ্যা করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসব নারী।
চীনের উগ্রপন্থী বিরোধী কথিত রাজনৈতিক পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে উইঘুর সম্প্রদায়ের ১০ লাখ মুসলিমকে আ’টক রাখা হয়েছে জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মা’নবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে চীন সরকার।
গবেষকরা বলছেন, ‘যুদ্ধের সময় ব’ন্দীশিবিরগুলোতে যেভাবে পুনঃশিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয় ঠিক সেভাবে নি’র্যাত’ন করা হচ্ছে উইঘুর মু’সলিমদের। পদ্ধতিগতভাবে তাদের সামাজিকভাবে দীক্ষায়ন করার কাজটি করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা প্রকৃতপক্ষে সাংস্কৃতিক গণহ’ত্যা।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.