Beanibazarview24.com
স্ত্রীর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে বখাটেদের হাতে মার খেলেন ‘প্রধানমন্ত্রী গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত’ মেধাবী একজন শিক্ষক। তিনি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম। রাজশাহী শহরের জনবহুল এলাকা সাহেববাজার মনিচত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে ১০ আগস্টে।
বিষয়টি সেদিনই নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেন ভুক্তোভোগী শিক্ষক। ঘটনার সময় সময় আশপাশে মানুষের কাছে সাহায্য চাইলে তারা কোনো সাহায্য না করে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে দেখছিলো বলে জানান তিনি। এমনকি, তিনি সকলের কাছে ‘বাঁচান’ বলে সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি কিন্তু তিনি এক পর্যায়ে ক্রোধান্বিত হয়ে ‘ ও আমার বউ, গার্লফ্রেন্ড না, কাবীননামা দেখাতে হবে আপনাদের?’ বললে উল্টো বখাটেদের পক্ষ নিয়ে একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে, ‘হ্যাঁ, কাবীননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে!’
ঘটনার বিবৃতি দিয়ে ফেসবুকে রাশিদুল ইসলাম লেখেন, ‘মেনে নিন নয়তো দেশ ছেড়ে চলে যান।
এদেশে আপানার চোখের সামনে আপনার মা, বোন অথবা বউ ধ’র্ষিত হলেও প্র’তিবাদ করবেন না, আশেপাশে কাউকে পাবেন না। মা’র খে’য়ে ম’রবেন।
কারণ আপনি একটা জা’নোয়ার, আমিও একটা জা’নোয়ার, জা’নোয়ারে ভরা সমাজ আমাদের।
আজকের ঘটনাটা সংক্ষেপে বলি। সাহেববাজার মনিচত্বর এর মত জনবহুল এলাকাতেও আমার বউ হে’নস্তার শি’কার হয়। এক পাল ছেলের মধ্যে একজন আমার বউকে পেছন থেকে কয়েকবার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়। দুই-তিনবার সহ্য করলেও পরেরবার প্রতিবাদ করি। ব্যাস, সোনার ছেলেদের দাপট শুরু। শেষে আমাকে সোনাদীঘি মসজিদের সামনে ৫-৭ মিলে ঘিরে ধরে মা’রা শুরু করে। এই পর্যন্ত না হয় মেনে নিলাম।
কিন্তু ওখানে কম করে হলেও ৫০ জন আমার মা’র খাওয়া দেখছিলো। একজনও এগিয়ে আসেনি। মা’র খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলি, ‘বাঁচান আমাকে’, কোন রেসপন্স পাইনি। একজন মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার মা’র খাওয়া দেখছিলো, আমি সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেলো।
মা’র খেয়ে কাপুরুষ আমি দর্শকদের বলি, ‘আপনারা আজ এগিয়ে এলেন না, একদিন আপনার বউয়ের সঙ্গে এমন হলেও কেউ এগিয়ে আসবে না। ও আমার বউ, গার্লফ্রেন্ড না, কাবীননামা দেখাতে হবে আপনাদের?
এ সময় একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে বসলো, ‘হ্যাঁ, কাবীননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে।’
ধরেন, দ্বিতীয়বার আক্রমণে ওরা আমাকে মেরে ফেলল। কি করবেন? ফেইসবুকে কান্নাকাটি? জাত গেল জাত গেল রব তুলবেন? কোনোটাই করবেন না দয়া করে, এতে কিছু আসে যায় না। আর যারা করবে, তাদের গিয়ে থুথু দিয়ে আসবেন।
ধরেই নিয়েছিলাম, পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরবো, মা বাবা চান না বাইরে সেটল হই। এই ঘটনার পর দ্বিতীয়বার ভাববো অবশ্যই।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.