Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সাদিয়ার যন্ত্রণার বর্ণনা শেষ করতে পারলেন না মা







রাত সাড়ে ৭টায় কেমোথেরাপি শুরু হয়েছে সাদিয়ার। শেষ হবে ৪৮ ঘণ্টা পর। এটা শেষ হলে ১৪ দিন পর আবারও একটি দিতে হবে। এভাবে অবস্থা বুঝে ৬ থেকে ৮টি কেমোথেরাপি দিতে হবে। প্রতিটির মূল্য এক লাখ টাকা। সবগুলো দেয়ার পর অবস্থার উন্নতি হলে একটি অপারেশন করতে হবে। সেখানেও খরচ হবে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এরপর আরও তিনটি কেমোথেরাপি দিতে হবে। যার প্রতিটির মূল্য ৬ লাখ টাকা। এগুলো সব বিদেশি।



এছাড়া প্রতিদিন ছিট ভাড়া ১ হাজার ৮০০ টাকা, যতবার ডাক্তার এসে দেখেন ততবার এক হাজার করে টাকা দিতে হয়। আরও অনেক খরচ। এখন পর্যন্ত ১৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এত দিন ছোট একটি জুতার দোকানের আয়ের উৎস দিয়ে চলছিল চিকিৎসা। শেষে না পেরে হাত দিতে হয়েছে শান্তির স্থান বাড়িতে। সেটিও ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে। সেই টাকায় চলছে বর্তমান চিকিৎসা।

কেমোথেরাপিগুলো দেয়া শেষ হলেও বাড়িতে নেয়ার অবস্থায় নেই সাদিয়া। সেটা অনেকটাই বোঝা গেল রাত ৮টায় রাজধানীর মিরপুরের আলোক হেলথ কেয়ারে চিকিৎসাধীন সাদিয়ার খোঁজ নেয়ার জন্য তার মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময়। ফোনে তার মায়ের কথার চেয়ে সাদিয়ার আহাজারি ও যন্ত্রণার কথাগুলো বেশি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। জানতে চাওয়ার আগেই সাদিয়ার মা বললেন, কিছুক্ষণ আগে তার কেমোথেরাপি শুরু হয়েছে। শেষ হতে সময় লাগবে ৪৮ ঘণ্টা। পুরোটা সময় এমন ছটফট করবে সে।



রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া। ২০১৮ সালের মে মাসে পরীক্ষার কেন্দ্রে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে উত্তরা মহিলা মেডিকেলে ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে উত্তরার আর এম সি হাসপাতালে জরুরি অপারেশন করা হয়। অপারেশনে কোলন ক্যান্সার ধরা পড়ে। মাঝে কিছুদিন ভালো ছিল সাদিয়া। নিয়মিত ক্লাস ও টিউশনিও করেছেন। রমজানের আগে আবার ব্যথা শুরু হলে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান বিদ্যুতের তত্ত্বাবধানে এখন আলোক হাসপাতালে বিশোর্ধ সাদিয়ার চিকিৎসা চলছে।



কিছুদিন আগেও বন্ধুবান্ধব নিয়ে মরণব্যাধি ‘ক্যান্সার সচেতনতা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান’ কর্মসূচি করেছিলেন সাদিয়া। জড়িত ছিলেন স্বেচ্ছায় রক্তদানের সংগঠন বাঁধনের কার্যক্রমে। সেই সাদিয়া সুলতানাই আজ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।

তার চিকিৎসক বলেছেন, কোলন ও ওভারি ক্যান্সার দুটির চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই মুহূর্তে অর্থ জোগানের বিকল্প নেই। শিগগিরই তিনটি কেমোথেরাপি বিদেশ থেকে আনতে হবে। যার একেকটির ব্যয় পড়বে ৬ লাখ টাকা।



জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে সাদিয়ার মা কামরুন নাহার বলেন, মিরপুরে ডেল্টা হাসপাতালের অপারেশনটা সফল হয়নি। সেই অপারেশনের পর ক্যান্সার পেট ও জরায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে। পা দুটি ফুলে মোটা হয়ে গেছে। পেটও ফুলে গেছে।

সাদিয়ার বাসা রাজধানীর বিমানবন্দরের কাওলা এলাকায়। সেখানেই একটি জুতার দোকান করেন সাদিয়ার বাবা মঈন উদ্দিন হেলালী।

তিনি বলেন, আল্লাহ যাতে কোনো মেয়েকে এমন রোগ না দেয়। মেয়ের কষ্ট দেখে আর থাকতে পারছি না। মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিজের ভিটেমাটিটাও বিক্রি করেছি। আর পারছি না। ডাক্তাররা আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু এতো ব্যয়বহুল চিকিৎসার ভারে অসহায় হয়ে পড়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এ সহযোগিতা করার সাহস হয়তো কেউ করবেন না। কারণ অনেক টাকার ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী চাইলেই হয়তো সম্ভব। জাগো নিউজকেও একই কথা বলেন সাদিয়ার মা।



তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ছাড়া আমার মেয়েকে হয়তো বাঁচানো সম্ভব নয়। জানি না আমার মেয়ের এ খবরটি তার চোখে পড়বে কি-না?

বললেন, জানো বাবা, দেড় বছর ধরে সাদিয়ার যন্ত্রণাগুলো কানে বাজছে। তার অনুপস্থিতিতেও সারাক্ষণ সেই যন্ত্রণার আওয়াজগুলো শুনতে পাই। তার যন্ত্রণাগুলো আমাকে তাড়া করছে। চোখের সামনে মেয়ের যন্ত্রণা দেখছি। শুধু টাকার জন্য মেয়েটাকে বাঁচাতে পারবো না এটা ভাবার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের লোম শিউরে উঠছে। আর পারছি না বলেই ফোনের ওপাশ থেকে লাইনটি কেটে গেল। যন্ত্রণার বর্ণনা শোনার পাশাপাশি সাদিয়ার কান্নার আওয়াজও স্পষ্ট ভেসে আসছিল।

অন্যের জীবন বাঁচাতে সংগ্রাম করা সাদিয়াকে এ সমাজে খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজন তার পাশে থাকা। যে কেউ পাশে দাঁড়াতে চাইলে কথা বলতে পারেন ০১৫১৫২০৫৮৭৯ নম্বরে। এছাড়া পাশে দাঁড়ানো যাবে, ব্যাংক হিসাব কামরুন নাহার (সাদিয়ার মা), আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক (খিলক্ষেত শাখা) ৯৯০১১৮০৫৯৯৫৬৭।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.