Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

৪৮ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগীকে সুস্থ করে তোলে ‘ক্যারিপিল’ : সত্য, নাকি গুজব?







সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে একটি ম্যাসেজ ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হয়েছে ক্যারিপিল নামের একটি ওষুধ খেলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ডেঙ্গু জ্বর ভালো হয়ে যাবে। এরপর বাংলাদেশ ও ভারতে অনেক ডেঙ্গু রোগীই ওষুধটি সেবন করতে শুরু করেছেন।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এই তথ্য কতটুকু সত্য। নাকি এটিও একটি গুজব। আসুন জেনে নেওয়া কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।



ভারতের স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ফিট এই বিষয়ে কথা বলে, দেশটির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুরঞ্জিত চ্যাটার্জির সঙ্গে। ওই সাক্ষাতকারে ডা. সুরঞ্জিত ৪৮ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ভালো হতে পারে এমন কোনো যাদুকরী ওষুধের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার জানা মতে এমন কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, যেটি খেলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গুজ্বর ভালো হয়ে যেতে পারে।’



উত্তর প্রদেশের দেউরিয়ার ‘বৈদ্য এবং আয়ুর্বেদ’ নামক চিকিৎসা সংস্থার এমডি ডা. আর আচলও নিশ্চিত করেছেন ৪৮ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ভালো করতে পারে এমন কোনো ওষুধ নেই।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু হলো একটি ভাইরাল ইনফেকশন। যা দূর হতে সময় লাগে পাঁচদিন। সুতরাং আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে ইনফেকশনের পর থেকে ডেঙ্গু রোগীকে পাঁচদিন পর্যন্ত যে কোনো ভাবে বাঁচিয়ে রাখা এবং কোনো ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে না দেওয়া। এরপর এমনিতেই ডেঙ্গু ভাইরাসের শক্তি কমে আসে এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বার্তা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বার্তা




ক্যারিপিল কী?

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালুরু ভিত্তিক ওষুধ কম্পানি মাইক্রো ল্যাবস ক্যারিপিল নামের একটি ওষুধ বাজারে ছাড়ে। ওষুধটি বানানো হয়েছে মূলত পেপে পাতার রস থেকে। ট্যাবলেট ও সিরাপ আকারে পাওয়া যায় ওষুধটি।

ক্যারিপিল বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্যারিপিলমাইক্রো.ডটকম- এ বলা আছে, ক্যারিপিল খেলে ডেঙ্গু রোগীর রক্তে প্ল্যাটিলেট বাড়ে। কিন্তু সেখানে কোথাও দাবি করা হয়নি যে, ওষুধটি খেলে ৪৮ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ভালো হয়ে যাবে।



জার্নাল অফ দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ ফিজিশিয়ানস অফ ইণ্ডিয়ার দুটি ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যারিপিল খেলে রক্তে প্ল্যাটিলেট বাড়ে ঠিক, কিন্তু ডেঙ্গু ভালো হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ওই গবেষণাগুলো এমন কোনো ডেঙ্গু রোগীর ওপর চালানো হয়নি যার রক্তের প্ল্যাটিলেট মারাত্মক ভাবে কমে গিয়েছে। অথবা এমন কোনো রোগীর ওপরও করা হয়নি যিনি ট্রান্সফিউশন থেরাপি নিচ্ছেন।

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় পেপে পাতা- সম্পর্কটা কী?

ডা. আচল বলেন, আয়ুর্বেদ এর প্রাচীন কোনো চিকিৎসা বিদ্যার বইয়ে পেপে পাতার ওষুধি গুনের কথার উল্লেখ নেই। তবে পেপে ফল এবং পেপে গাছের শেকড়ের কথা বলা আছে। অবশ্য, ভারতীয় সমাজের ঐতিহ্যগত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রক্তের প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়ার গতি কমাতে পেপে পাতার রস ওষুধ হিসেবে ব্যাবহৃত হতো; এর বেশি কিছু নয়।



ডা. চ্যাটার্জি বলেন, সুদূর অতীতকাল থেকেই পেপে পাতার ওষুধি গুন বিষয়ে ভারতীয় সমাজে একটি ধারণা প্রচলিত আছে। তবে এই বিষয়ে বাস্তব গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত কোনো প্রমাণ নেই।

আয়ুর্বেদ এবং অ্যালোপ্যাথি ডাক্তারদের মতে, সমাজিক গণমাধ্যেমে ছড়িয়ে পড়া এই বার্তা ভুয়া।

ডা. সুরঞ্জিত চ্যাটার্জি এবং ডা. আর আচল উভয়ের মতেই, ডেঙ্গু জ্বর ভালো করার কোনো ওষুধ নেই। এখনো আবিষ্কার হয়নি। সুতরাং ক্যারিপিল খেলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গু ভালো হবে এই কথা পুরোপুরি ভুয়া।




অ্যালোপ্যাথিতেও ডেঙ্গু জ্বরের কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, পানিশুন্যতা এবং অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি হতে না দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন আধুনিক ডাক্তরারা।

আর প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায়ও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং জ্বরের মাত্রা কমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়।

ডাক্তারদের মত হলো, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন গুজবে কান না দিয়ে বরং ডেঙ্গু হলে কোনো বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রেখে রোগীর চিকিৎসা করানো জরুরি।










You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.