Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

লেবাননে বৈধ হচ্ছেন ৪০ হাজার বাংলাদেশি







লেবাননে প্রায় ৪০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশির উদ্বেগ, আতঙ্ক ও কষ্টের দিন শেষ হচ্ছে। শিগগিরই বৈধতা পাচ্ছেন এসব বাংলাদেশি শ্রমিক। ফলে বিপুল অঙ্কের টাকা জরিমানা দিয়ে তাদের আর দেশে ফিরতে হবে না। এমনকি অবৈধ হিসেবে ধরপাকড়ের শিকারও হতে হবে না। স্বাভাবিক জীবনযাপন ও কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারবেন তারা।



এ লক্ষ্যে লেবানন পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। এ উদ্যোগের ফলে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক অধ্যুষিত লেবাননের শ্রমবাজারের অবৈধ শ্রমিকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় লেবানন সরকার শুধু বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ২০ বছরের মধ্যে প্রথম এ উদ্যোগ নিয়েছে।



লেবাননে যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই তাদের বছরপ্রতি ২৭০ ডলার করে জরিমানা দিয়ে দেশে ফিরতে হয়। দালালের ফাঁদে পড়ে অনেকে চার/পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে লেবানন গেছেন। গিয়ে কাক্সিক্ষত কাজ না পেয়ে, বার বার প্রতারিত হয়ে অবৈধ হয়ে পড়েছেন। পাঁচ বছর অবৈধ থাকলে তাকে ১৩৫০ ডলার জরিমানা এবং বিমান ভাড়া দিয়ে দেশে ফিরতে হয়।



যার কোনো বেতন নেই, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নেই সে এই দেড় লাখ কিংবা তারও বেশি টাকা দিয়ে দেশে ফিরবেন কীভাবে। গত জুনে লেবানন সফরে গিয়ে বিভিন্ন শপিং মল ও বিপণি কেন্দ্রে অসংখ্য বাংলাদেশির দেখা মেলে, যারা পরিচয়ের পরপরই বলেছেন, ভাই অনেক কষ্টে আছি। দেশে ফিরে যেতে চাই। তারা দেশে ফিরতে চান জরিমানা ছাড়াই। কারণ, জরিমানা ও বিমান ভাড়া দিয়ে দেশে ফেরার সঙ্গতি তাদের কারও নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমার জন্য প্রচেষ্টা চালায়।



জানা গেছে, লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার সেখানকার অসাধু দালালদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে নিরলসভাবে কাজ করছেন। দূতাবাসে যোগ দিয়ে প্রথম বছরেই প্রবাসীদের ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। বিনা জরিমানায় অবৈধ বাংলাদেশিদের দেশে পাঠানো, মাত্র ১০-১৫ দিনে মৃতদেহ দেশে পাঠানোসহ বিনা খরচে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা, অসুস্থদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে লেবাননে অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধকরণের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন তিনি। এ লক্ষ্যে গত ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির সঙ্গে, ৮ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রায়া হাসান ও ৫ জুলাই শ্রমমন্ত্রী ক্যামিল আবু স্লেইমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।



সর্বশেষ গত ৯ জুলাই লেবাননের কাউন্সিল অব মিনিস্টারসের সেক্রেটারি জেনারেল জাস্টিস মোহাম্মদ ম্যাককিয়ের সঙ্গে তার অফিসে বৈঠক করেন তিনি। একই দিনে জাস্টিস ম্যাককিয়ে, শ্রমমন্ত্রী ক্যামিল আবু স্লেইমান ও রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বৈধ কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশি কর্মীদের জরিমানা ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দেওয়ার মাধ্যমে বৈধকরণ এবং লেবাননের পার্লামেন্টে দ্রুত এ বিষয়ে একটি আইন/ডিক্রি পাসের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, প্রায় ২০ বছর ধরে লেবানন সরকার অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ করার কোনো সুযোগ দেয়নি। রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কেবল বাংলাদেশিরা এরকম একটি সুযোগ পেতে যাচ্ছে। লেবাননে অবৈধভাবে ১৮ বছর থাকার পর দূতাবাসের সহায়তায় বাংলাদেশে ফিরে আসা মফিজুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন লেবাননে থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। আমার জরিমানা হয়েছিল বাংলাদেশি টাকায় প্রায় চার লাখ। অসুস্থ হয়ে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কাজ করতেও খুব কষ্ট হতো। জরিমানার কারণে দেশে ফিরতে পারছিলাম না। বৈরুত দূতাবাসের সহায়তায় আমি ফিরেছি।

লেবানন থেকে জরিমানা দিয়ে দেশে ফেরত আসা কয়েকজন বাংলাদেশি জানান, লেবাননের আইন অনেক জটিল। সেখানে সারা জীবন থাকলেও কেউ বৈধ হতে পারবেন না। কঠিন ইমিগ্রেশন আইনের কারণে চাইলেও কেউ দেশে ফিরতে পারবেন না। রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জরিমানা ছাড়াই অবৈধ বাংলাদেশিরা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন।

লেবানন সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আশ্বাস পাওয়া গেছে। আশা করছি, শিগগিরই বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি লেবাননে বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, এ সুবিধাটি পেতে হলে লেবাননের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটি চলছে। এটি কার্যকর হলে তা হবে আমাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফল এবং বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য প্রাপ্তি।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.