Beanibazarview24.com
অভিনয় নয়, সার্কাস এখন আমার প্রধান পেশা : মুনমুন
Not acting, circus is my main occupation now: Moonmoon
ময়ূরীর সাথে আমার নামটা জুড়ে দিয়ে একইসাথে দুজনকে অ’শ্লীল নায়িকা হিসেবে কথা বলেন সকলে। আমার দুঃখের জায়গা হলো এটা যে আমাকে অ’শ্লীল নায়িকা হিসেবে অভিযুক্ত করেন। যার কারণে আমাকে ফিল্ম ছেড়ে দিতে হয়েছে, পরিবার ছেড়ে দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার আমি সিনেমায় ফিরতে চেয়েছি আমাকে ফিরতে দেওয়া হয়নি। আমি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে চেয়েছি আমাকে কেউ নেয়নি। বাধ্য হয়ে আমি সার্কাসে যোগ দিয়েছি। এখন সার্কাস আমার প্রধান পেশা, ভালোবাসা।
কথাগুলো বলছিলেন নব্বই দশকের চিত্রনায়িকা মুনমুন। যাকে অ’শ্লীল নায়িকা হিসেবে অভিহিত করে চলচ্চিত্র সমালোচকেরা। তবে এই বিষয়টি মানতে নারাজ তিনি। মঙ্গলবার কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মুনমুন।
মুনমুন বলেন, ‘আমাদেরকে ডিরেক্টর প্রোডিউসাররা জোর করাতো সংক্ষিপ্ত পোশাক পরানোর জন্য। আমরা তো বাসা থেকে কাপড় নিয়ে যাই না। ওরা যেটা পরতে বলতো সেটাই পরতে হতো। এক সময়ে এভাবে না চলতে পেরে চলে আসি। ২০০৩ সাল আমার চলচ্চিত্রের শেষ বছর। এরপর আমি বিয়ে করে ইংল্যান্ড চলে যাই। যে দৃশ্যে অভিনয় করিনি সে দৃশ্যেও আমার মাথা কেটে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেবে দেখলাম, সম্মান থাকতেই কেটে পড়া উচিত।’
মুনমুন বলেন, ‘আই ওয়াজ অ্যা সুপারস্টার, আমি কেন অ’শ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো? আমি যখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতাম তখন ছিলাম আনবিটেবল। অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আমি বেশিরভাগ ছবিতে লেডি অ্যাকশন চরিত্রে কাজ করেছি তখন আমাকে পেছনে ফেলার কেউ নেই। প্রতিহিং’সা পরায়ণ হয়ে কয়েকজন সাংবাদিক অ’শ্লীল নায়িকা তকমা জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে না। আমাদের ভালো ছবিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো কাটপিস।
চিত্রনায়িকা মুনমুন ১৯৯৬ সালে ‘ও’ লেভেল অধ্যয়নকালীন মৌমাছি সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে অভিষিক্ত হন। এতে তিনি পার্শ্বনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিতে মূল নায়িকা ছিলেন শাবনূর। ‘টারজান কন্যা’ নামের একটি ছবির মাধ্যমে প্রধান নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হন। এরপর রানি কেন ডাকাত, মৃত্যুর মুখে, টারজান কন্যাসহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি করেছেন।
সালমান শাহ’র মৃত্যুর পরে এদেশের চলচ্চিত্রে অ’শ্লীলতা ঢুকে পরে। মান্না-শাকিব খান চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মান্না মারা যাওয়ার পর সেটা ভয়াবহ রূপ নেয়। আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে তখন যে অ’শ্লীলতা ঢুকে পড়েছিল, সেটা থেকে আমরা বের হতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের চলচ্চিত্রের কোমর সোজা হয়নি। আমরা যেসব চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজকদের প্রত্যাখ্যান করেছি, এখনকার অনেক শিল্পী তাদের সাথে আপস করছে। এসব খবর তো অজানা নয়।
সার্কাস নিয়ে বলেন, আমি সার্কাসকে ভালোবাসি। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে তোলপাড় ছবির শুটিং শুরু হবে। সেটার শুটিংয়ে অংশ নেবো। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে দুই রাজকন্যা, পদ্মার প্রেম ও রাগী। রাগী ছবিটি নিয়ে আমার এক্সপেক্টেশন বেশি। যদি ভালো হয় তাহলে চলচ্চিত্রে কন্টিনিউ করবো। আর চলচ্চিত্র নিয়ে আমার খুব বেশি মাথা ব্যাথা নেই। আমি আগে সেই শুরুতে সাইনিং মানি নিতাম ২-৩ লাখ টাকা। এখন তো পেমেন্টেরই ঠিক ঠিকানা নেই। তাই সার্কাস কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাই আমার কাছে মুখ্য।
রাজধানীর উত্তরাতে সালাম ও সালমান নামের দুই সন্তানকে নিয়ে সুখের বসবাস মুনমুনের। পারিবারিক জীবনে নিজেকে সুখী উল্লেখ করে মুনমুন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি অনেক হ্যাপি। আমার দুই সন্তান, মা আর স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছি। বড় ছেলে যশ রাজধানীর একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড সেভেনে পড়েন, ছোট ছেলে শিবরাম কেজি টু-তে পড়েন। স্বামী মীর মোশাররফ হোসেন ব্যবসার সাথে যুক্ত।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.