Beanibazarview24.com
কক্সবাজারের টেকনাফে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হ’ত্যা মা’মলার প্রধান আসামি রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদ পু’লিশের সঙ্গে ব’ন্দুকযু’দ্ধে নিহ’ত হয়েছেন। এসময় পু’লিশ বেশকিছু অ’স্ত্র ও কা’র্তুজ উ’দ্ধার করে। এখন রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদের একটি বাংলাদেশের পরিচয়পত্র (স্মার্ট) কার্ড নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এখন প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে নুর মোহাম্মদ স্মার্ট কার্ড পেল?
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহামুদ আলী জানান, ১৯৯১ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদ হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে জাদিমুরা এলাকায় প্রথমে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
এরপর থেকে রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন এলাকায় ডা’কাতি করে। সে ডা’কাতির জন্য দুই বছর জে’লও কে’টেছে। এরপর সে ধীরে ধীরে সেখানেই জমি কিনে বাড়ির মালিক হন। প্রতিটি ক্যাম্পে স্ত্রী থাকায় তার আধিপত্য বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদের মালিকানায় বাংলাদেশে ৪টি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটি পাকা ভবন, একটি দু’তলা, একটি টিনের ঘর এবং অপরটি বাগান বাড়ি। রয়েছে একাধিক স্ত্রী।
এদিকে রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদ স্মার্ট কার্ডের বিষয়টি যাচাই করতে রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার নির্বাচন অফিসের কার্যালয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্মার্ট কার্ডটির নাম্বারটি দিয়ে ওয়েব সাইটে যাচাই করা হলে বেরিয়ে আসে তার সব তথ্য।
সেখানে দেখা যায়, নুর মোহাম্মদ ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ঠিকানায় বাংলাদেশি স্মার্টকার্ড তৈরি করেছেন।
কার্ডে নাম দিয়েছেন নুর আলম। পিতার নাম কালা মিয়া এবং মাতার নাম সরু বেগম। জন্ম তারিখ ২৫ নভেম্বর ১৯৮৩ ইংরেজি। এনআইডি নম্বর-৬০০৪৫৮৯৯৬৩। ফরম নম্বর: ৪০৩৬৫৬০৫, শিক্ষাগত যোগ্যতা: ২য় শ্রেণী, ভোটার সিরিয়াল নং: ২১৮৯, ভোটার এলাকা (এরিয়া কোর্ড): বার্মা কলোনী (১৭২২)। তার স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে পশ্চিম ষোলশহর পার্ট-২, হিলভিউ রোড, ৪২১১ পাচঁলাইশ, চট্টগ্রাম বলে উল্লেখ্য করা হয়।
এবিষয় নিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা বলেন, অনেক রোহিঙ্গা নানাভাবে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে চায়। কিন্তু কক্সবাজার নির্বাচন অফিস ভোটার হতে অনেক বেশি তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাই এখানে সুবিধা করতে পারে না রোহিঙ্গারা। তাই চট্টগ্রামে গিয়ে কোনো না কোনোভাবে এই রোহিঙ্গা বাংলাদেশি ভোটার হয়েছে।
তবে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়টি নজরে থাকার কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসেন খান বলেন, রোহিঙ্গারা ভোটার হতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে চেষ্টা করছে। এনআইডি হয়েছে এরকম কিছু রোহিঙ্গাকে তালিকাভুক্ত করে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। নুর মোহাম্মদ সেই তালিকায় থাকতে পারে। কিন্তু এনআইডিটা ভু’য়াও হতে পারে। সেটিও তদন্তের বিষয় রয়েছে।
এরআগে, রোববার সকালে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ি জনপদের বাড়িতে অ’বৈধ অ’স্ত্র ভান্ডার উ’দ্ধার অভি’যানে গেলে পু’লিশের সঙ্গে ব’ন্দুকযু’দ্ধে নিহ’ত হয়। এ সময় উ’দ্ধার করা হয় ৪টি এ’লজি, ১টি থ্রি কো’য়াটার, ১৮ রা’উন্ড গু’লি, ২০ রা’উন্ড খালি খো’সা।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, নুর মোহাম্মদকে আ’টক করার পর ভোরের দিকে তাকে নিয়ে জাদিমোড়া এলাকায় অ’ভিযানে যায় পু’লিশ। এ সময় সেখানে ওত পেতে থাকা তার সহযোগীরা পু’লিশকে ল’ক্ষ্য করে গু’লি চালালে পু’লিশও পাল্টা গু’লি ছো’ড়ে। একপর্যায়ে হা’মলাকারীরা পা’লিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে নুর মোহাম্মদের গু’লিবি’দ্ধ ম’রদেহ পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, ম’রদেহ উ’দ্ধার করে ময়নাতদন্তেরর জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হ’ত্যা, গু’মসহ একাধিক মা’মলা রয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.