Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

অবৈধ পথে কিভাবে কারা এবং কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন


যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসি হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দক্ষিন সীমান্ত দিয়ে সাধারণত যারা আসেন তারা গুয়াতেমালা হোন্ডুরাস ও এল সালভাদরের মানুষ। তবে টেক্সাসের ডেল রিও’র বর্ডার পেট্রোল কর্মকর্তারা জানান গত বছর ঐ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের সময় তারা প্রায় ৫০ টি দেশের মানুষজন গ্রেফতার করেছেন।

ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক রেমন টেইলর এবং ভিক্টোরিয়া মাচি সেখানে বেশ কিছু আশ্রয়প্রার্থী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন কিভাবে তারা বিপদসংকুল পথে কঠিন অভিযাত্রায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো সীমান্তে এসেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিন সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যাশী বেশিরভাগ মানুষই মধ্য আমেরিকান দেশগুলোর নাগরিক। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রের আসতে চেষ্টা করেন তাদের মধ্যে, মধ্য আমেরিকার লোক সবচেয়ে বেশী। তবে দক্ষিন মধ্য টেক্সাসের সীমান্তে আসা ঐসব মানূষদের এ পর্যন্ত আসতে পাড়ি দিতে হয়েছে অত্যন্ত লম্বা বিপদসংকুল ও দুর্গম পথ।

অবৈধভাবে প্রবেশকালে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডার পেট্রোল কর্মকর্তারা চলতি বছর প্রায় ৫১ হাজার জনকে গ্রেফতার করেছেন। Border Patrol’s Del Rio Sector এর তথ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে ২ হাজার জন হেইতির এবং ১৭০০ জন আফ্রিকার আরো ৩৬টি দেশের।

U.S. Border Patrol, Del Rio Sector এর ভারপ্রাপ্ত উপ প্রধান এ্যালেন ভোওয়েলের মতে, “সামাজিক মাধ্যমে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে নিরাপদ জীবন খুঁজতে এসেছেন। সত্য হোক মিথ্যা হোক, সেই বিশ্বাস নিয়ে তারা এই পথে পা বাড়ায়”।

কয়েকজন অভিযাত্রির বক্তব্য, “জঙ্গলে ডাকাত হামলা করে। তারা টাকা পয়সা সব কেড়ে নেয়”।

তবে তাদের এই কষ্টসাধ্য অভিযাত্রায়, একমাত্র ভরসা মনোবল আর বিশ্বাস। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্ব কাসাই থেকে জুলিয়া তার দুই কন্যা নিয়ে এই যাত্রা শুরু করেন ২০১৪ সালে। জুলিয়া, তার পুত্র খুন হবার পর দুই কন্যা নিয়ে দেশ থেকে পালান। কিন্তু তার এবং সন্তানদের জীবন যে আরো অজানা ঝুঁকিতে পড়েছে তা তখনো বুঝতে পারেন নি। ভয়াবহ সেই যাত্রায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বিপদের মোকাবেলা করতে হযেছে তাকে।

“ঘুমানোর সময়, চোর এসে সবকিছু চুরি করে নিয়েছে। টাকা পয়সা দাবী করেছে। না দিলে তারা মেয়েকে ধর্ষন করার হুমকী দিয়েছে”।

কঙ্গো থেকে বেরিয়ে তাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল এ্যাঙ্গোলা। জুলির বক্তব্য অনুযায়ী সেখানে তিনি নিরাপদ বোধ করেন নি। ২০১৮ সালে সেখান থেকেও পালান। বিমানে চলে যান একুয়েডর। তারপর বাস ও নৌকায় যান কলম্বিয়া। এরপর দুর্গম দরিয়েন উপত্যকায় ১৪ দিনের লোমহর্ষক অভিযাত্রার অভিজ্ঞতা। তারপর পানামা পার হবার কঠিন অভিজ্ঞতা। তবে পানামা – আফ্রিকান অভিবাসিদের একটি পরিচিত পথ।

ডেল রিও’র বর্ডার পেট্রোল প্রধান রাউল আর্টিজ এ প্রসঙ্গে বললেন, “আমাদের কাছে যারা ধরা পড়েছে তাদের বেশিরভাগ লোকের কাছেই টিকেট কেনার মতো অর্থ আছে। সীমান্তে যারা সহযোগিতা করে তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে তারা সীমান্ত অতিক্রমের চুক্তি করে আসে। তারপর এখানে এসে তারা অভিবাসন প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন করে, আইনজীবির সহায়তা নেয়, শুনানীন জন্য অপেক্ষা করে”।

তবে গুয়াতেমালার সঙ্গে মেক্সিকোর দক্ষিন সীমান্তে আফ্রিকা ও হেইতির বহু অভিবাসন প্রত্যাশী উত্তরের দিকে আসার জন্য ট্রান্জিটের অপেক্ষায় সপ্তাহের পর সপ্তাহ পার করে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে।

তাদের মধ্যে যারা সীমান্ত পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারে তাদের অনেকেই ধরা পড়ে ডিটেনশন সেন্টারে থাকে। যারা ছাড়া পায় তাদের জন্য নতুন চ্যালেন্জ হয়ে ওঠে টেক্সাসের সান এন্টোনিও শহর। পরিচিত জন বা পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা ভবঘুরে হয়ে ওঠে। কেউ চার্চে আশ্রয় নেয়, কেউ আশ্রয় খুঁজতে পাগলপ্রায় হয়ে ওঠে।

বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান অনেককে আশ্রয় দেয়। নানাভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় ট্রাভিস পার্ক গীর্জায় এমন অভিবাসন প্রত্যাশিদের আশ্রয় দেয়া হয়। গীর্জার এ্যাসোসিয়েট প্যাস্টর গেভিন রজার্স বলেন, “আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসন প্রত্যাশিরা সাময়িক আশ্রয়ের সন্ধানে মরিয়া হয়ে ওঠেন। আমাদের এখানে অনেকে এক সপ্তাহ বা আরো বেশী সময় থাকেন”।

তবে মধ্য আমেরিকার দেশগুলো, কিউবা কিংবা ভেনিজুয়েলা থেকে আসা মানুষদের বিষয় কিছুটা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের তাদের কেউ না কেউ পরিচিত থাকে। মেক্সিকোতেই অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক শুনানী হয়ে যায়। ‘রিমেইন ইন মেক্সিকো’ নামের একটি কর্মসূচীর আওতায় এই সুবিধা পান তারা।

মেক্সিকো সীমান্তে তারা আশ্রয় প্রার্থনা বা অন্য যে কোনো ধরনের অভিবাসনের আবেদন করেন এবং হ্যা না যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত জেনে যান। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পরও এই কর্মসূচীতে আবেদন করানো হয় আশ্রয়প্রার্থীদের। যাদের আবেদন বাতিল করা হয়, তাদেরকে মেক্সিকোয় ফেরত পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেনিজুয়েলা থেকে আসা জনৈক আশ্রয় প্রার্থী নারী বললেন রিমেইন ইন মেক্সিকো কর্মসূচী সম্পর্কে, “আমি শুনেছি আমাকে মেক্সিকোয় ফেরত পাঠানো হবে। আমি মনে ভয় নিয়ে আবেদনপত্র পুরণ করেছি। আমি কর্মকর্তাদেরকে অনুরোধ করেছি আমাকে এখানে থাকতে দিতে। তারা বলেছে না। বলেছে আমাকে মেক্সিকোয় পাঠানো হবে কারন চুক্তি অনুযায়ী সেটাই আইনসিদ্ধ”।

অক্টোবরের শেষদিকে তার মামলাটির নিস্পত্তি হবে। সে পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ভয় ও শংকা বুকে নিয়ে।
-ভয়েস অব আমেরিকার

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.