Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

পায়ে হেঁটে ফ্রান্স যাওয়ার পথে নিখোঁজ সিলেটি যুবক







ইউক্রেন থেকে পায়ে হেঁটে ফ্রান্স যাওয়ার পথে স্লোভাকিয়া জঙ্গলে নিখোঁজ হয়েছেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবক।
তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কারিকোনা গ্রামের সমশাদ আলীর ছেলে এবং ইস্টার্ন ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখার সাবেক কর্মকর্তা।

দালাল ও পাঁচ জন সঙ্গীর সঙ্গে ফরিদ উদ্দিন ফ্রান্স যাওয়ার উদ্দেশে গত ২৮ আগস্ট ইউক্রেন থেকে পায়ে হেঁটে যাত্রা করেন। দালাল ও তার ওই পাঁচ সঙ্গী গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্স পৌঁছলেও নিখোঁজ রয়েছেন ফরিদ উদ্দিন।



তার ওই সঙ্গীরা জানিয়েছেন, ফ্রান্স যাত্রাপথে স্লোভাকিয়ার একটি জঙ্গলে নিখোঁজ হন ফরিদ উদ্দিন।

ফরিদ উদ্দিনের ছোট ভাই আলা উদ্দিন জানান, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে রাশিয়া যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। খেলা শেষ হওয়ার মাস খানেক পর তিনি রাশিয়া থেকে ইউক্রেন যান এবং সেখানে কয়েক মাস অবস্থান করেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে ফ্রান্স যাওয়ার জন্য বাংলাদেশে থাকা এক দালালের সঙ্গে চুক্তি করেন ফরিদের পরিবার। সেই চুক্তি অনুযায়ী মধ্যস্থতাকারী আরেক ব্যক্তির কাছে রাখা হয় সাত লাখ টাকা। কথা ছিল গাড়িতে করে ফরিদকে ফ্রান্স পৌঁছানোর পর ওই সাত লাখ টাকা হস্তান্তর করা হবে দালালের কাছে।



চুক্তি সম্পাদনের পর ইউক্রেনে দালালের শিবিরে যান ফরিদ। সেখানে প্রায় এক মাস অবস্থান করেন তিনি। সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন ফরিদ। এ সময় তিনি জানান, পরের দিন ২৮ আগস্ট ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করবেন তিনি। এর পর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি ফরিদের।



সোমবার এক সঙ্গী (ফ্রান্স যাত্রাপথের) ফোন করে ফরিদ উদ্দিনের ভাই যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত কাওছার আলীকে বলেন, গত বুধবার দালালের সঙ্গে তারা ছয় জন ইউক্রেন থেকে ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পায়ে হেঁটে ফ্রান্স পৌঁছতে তাদের পাঁচ দিন সময় লাগে। কিন্ত তাদের সঙ্গে খাবার ছিল মাত্র দু’দিনের। সঙ্গে থাকা খাবার শেষ হয়ে গেলে তাদেরকে শুকরের মাংস খেতে দেয় ওই দালাল।



কিন্ত এই খাবার খেতে অপারগতা জানান ফরিদ। তাই তিনি সঙ্গে থাকা খেজুর খেয়ে আরো একদিন পার করেন। দুই দিন পায়ে হেঁটে তারা পৌঁছান স্লোভাকিয়া’র একটি জঙ্গলে। সেখানে পৌঁছানোর পর খেজুরও শেষ হয়ে গেলে শুকরের মাংস খেতে বাধ্য হন ফরিদ। এই খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এবং বমি আর ডায়রিয়া হতে থাকলে একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। ওই জঙ্গলে সেদিন রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে একটি বিকট শব্দ পেয়ে সবার ঘুম ভেঙে যায়।

এ সময় তারা ঘুম থেকে উঠে ফরিদকে পাশে দেখতে না পেয়ে জঙ্গলে খুঁজতে থাকেন। কিন্ত কোথাও না পেয়ে একপর্যায়ে তাকে রেখেই ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করেন দালাল ও অন্য পাঁচ জন। তখন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন ফরিদ উদ্দিন।



ফরিদের ভাই আলা উদ্দিন বলেন, আমরা ধারণা করছি- আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়লে স্লোভাকিয়ার ওই জঙ্গলে তাকে ফেলে রেখে অথবা হত্যা করে দালাল ও সঙ্গীরা ফ্রান্সে চলে যায়। মহান আল্লাহ যেন আমার ভাইকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। সবার কাছে এই দোয়াই কামনা করছি। পাশাপাশি স্লোভাকিয়ার ওই জঙ্গল থেকে ফরিদ উদ্দিনকে উদ্ধারে প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি সরকারের কাছে আবেদন জানান।

এদিকে, ফরিদ উদ্দিনের নিখোঁজ সংবাদ পাওয়ার পর থেকে পরিবারে দুঃশ্চিন্তা বিরাজ করছে। কান্নাকাটি করছেন স্বজনরা। পরিবারের ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তার স্ত্রী সেলিনা সুলতানা বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ইরা তাসফিয়া নামে তার তিন বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.