Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সিলেট উইমেন্স মেডিকেল শিক্ষার্থীর প্রেমের ফাঁদে পোল্যান্ড প্রবাসী







নাজরিন আক্তার নিপা। সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। নগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় বাসা হলেও থাকেন কলেজের হোস্টেলে। ফেসবুকের মাধ্যমে ২০১৭ সালে পরিচয় হয় নাজমুল ইসলাম নগরীর মীরাবাজার আগপাড়া, মৌসুমী-১০৮ নম্বর বাসার বাসিন্দা আব্দুস শহীদের ছেলে পোল্যান্ড প্রবাসী নাজমুলের সঙ্গে।



প্রেমের নামে গড়ে তোলেন এক প্রতারণার ফাঁদ। আর এতে সায় দেয় নিপার পরিবারও। তাদের দুইজনের সম্পর্ক এক সময় পারিবারিকভাবে জড়ায়। প্রবাসে থাকার ফলে না বুঝে ফাঁদে পা দেন নাজমুল। ধাপে ধাপে খুইয়েছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা। দেশে এসে টাকা ফেরত চাইলে হত্যার হুমকি দেয় নিপার পরিবার। এমনকি গণধোলাই দেয়ার ছকও আঁকে। ভাগ্যক্রমে তা থেকে বেঁচে যান নাজমুল।



প্রতারক নিপা ও তার পরিবারের পাতানো ফাঁদে পা ফেলে নিঃস্ব হয়ে গত বুধবার প্রেমিকা নিপাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাইন বিল্লার আদালতে (সিআর মামলা ১৫১৩/১৯ ইং) মামলা দায়ের করেছেন। প্রতারণা, টাকা আত্মসাৎ ও হত্যার অভিযোগে দাখিলকৃত মামলাটি আদালত গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটকে নির্দেশ দিয়েছে।



মামলার এজাহারে নাজমুল জানান, ২০১৭ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে নিপার সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় নাজমুলের। সেই পরিচয়ের সুবাধে নিপার বান্ধবী নগরীর লোহারপাড়া হাওয়ারুন মঞ্জিল/ই/৩৯ এর বাসিন্দা মনসুর চৌধুরীর মেয়ে ও উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ফাহমিদা ইয়াসমিন চৌধুরী অয়ন ও নিপার বোন নাসরিন আক্তার নিলা, তার মা আলিয়া বেগম এবং মামা সালাউদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ট সর্ম্পক গড়ে উঠে ওই প্রবাসীর।



একপর্যায়ে নিপার মায়ের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় ধর্মের ছেলে বানায় এবং নিজ ছেলের মত আচরণ করতে থাকেন। আর নিপার বড় বোন ছোট ভাইয়ের আচরণ করেন। ফলে তাদের মাঝে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে নিপার প্রতি আস্থা-বিশ্বাস ও আন্তরিকতার মাত্রা বেড়ে যায় ওই প্রবাসীর। নিপার সঙ্গে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।

ফলে নাজমুলের কাছে নিপা তার পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও আর্থিক দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন। টাকার অভাবে তার ছোট বোনকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে পারছেন না। এছাড়া তার বড় বোন নিলার বিয়ে দেয়া যাচ্ছে না টাকার কারণে বলে জানান।



এতে খুব মর্মাহত হন নাজমুল। তিনি মানবিক দিক বিবেচনা করে নিপার পরিবারকে পোল্যান্ড থেকে নিপার কাছে টাকা পাঠানো শুরু করেন। পাঠানো টাকা দিয়ে তার নিপা মেডিকেলে পড়াশুনা করতে থাকে ও তার ছোট বোনও মেডিকেলে ভর্তি হয়। আর বড় বোনের বিয়েরও খরচ দেন প্রবাসী। এসব টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে নিপা, তার বোন, মামা ও মায়ের কাছে পাঠান তিনি। সব মিলিয়ে তিনি পাঁচ লাখ টাকা পাঠান।

কিছুদিন পর নিপা নাজমুলকে জানায়, তার ছোট বোন নাছিমুন নিতাকে ডেন্টাল মেডিকেল ভর্তি করানোর জন্য তিন লাখ টাকা প্রয়োজন। তাই ওই প্রবাসী তার বন্ধু সাহেদ আহমদের মাধ্যমে নিপার হাতে তিন লাখ টাকা পাঠান। তাছাড়া নিপার মা আলেয়া বেগমের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠান। আর পোল্যান্ড প্রবাসীর মা ও ভাইদের থেকেও নিপার পরিবার বিভিন্ন সময় আরো এক লাখ টাকা নেয়।




গত ২৬ জুলাই নাজমুল দেশে আসেন। পরে নিপার বাসায় দেখা করতে গেলে তার সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। এমনকি তাকে চেনেন না এমন ভান করেন পরিবারের লোকজন। পরে তিনি বুঝতে পারেন নিপা, নিলা, নিপার মা ও মামা এবং বান্ধবী অয়ন মিলে টাকা আত্মসাতের জন্য তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য নিপার মামাকে বলা হলে, তিনি পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে বলে জানান। এরপর গত ৫ আগস্ট নিপা-অয়ন ফোন করে নাজমুলকে বলেন, তারা কথা বলতে চান। তিনি যেন উইমেন্স মেডিকেলে আসেন।






ওই প্রবাসী গাড়ি নিয়ে সেখানে গেলে তারা গাড়িতে উঠে বলে জিন্দাবাজারের সিটি সেন্টারে একটি রেস্টুরেন্টে যাবেন। তাদের কথামত তিনি সেখানে গিয়ে গাড়ি পার্কিং করার সময় নিপা ও অয়ন বাঁচাও বলে চিৎকার দেয় এবং পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তাদের রাখা কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী প্রবাসীকে ঘিরে ফেলেন ও হত্যাচেষ্টা চালান। এ সময় মার্কেটের সিকিউরিটিরা বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রবাসীকে উদ্ধার করেন। আর নিপা-অয়ন ও তাদের সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় প্রবাসী নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজরিন আক্তার নিপা, তার ছোট বোন নাসরিন আক্তার নিলা, তার মা আলিয়া বেগম, মামা সালাউদ্দিন ও বান্ধবি ফাহমিদা ইয়াসমিন চৌধুরী অয়নকে আসামি করে মামলা করেছেন।





এজাহারে নাজমুল হোসেন জানান, তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তাদের দলে আরো অনেক লোকজন আছেন।

এ ব্যাপারে মেডিকেল শিক্ষার্থী নিপা ও তার বোন এবং মায়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি।

তবে নিপার মামা মো. সালাউদ্দিন জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।

নাজমুলের পক্ষের আইনজীবী মো. মুহিবুর রহমান জানান, মেডিকেল শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করলে মামলাটি গ্রহণ করে। এটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.