Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বাংলাদেশীর হাতে ২ নেপালি খু’ন, কুনজরে কাতার প্রবাসীরা







মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ ধনী দেশ কাতারে বাংলাদেশীদের হাতে দুই নেপালি নাগরিক খু’নের ঘটনার পর থেকেই কাতার সরকারের কুনজরে পড়েছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। এর পর থেকেই মূলত বাংলাদেশী শ্রমিকদের নামে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় ভিসার আবেদন জমা পড়লেই ভিসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা উপলক্ষে স্টেডিয়াম নির্মাণে কন্সট্রাকশনসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিপুলসংখ্যক কর্মী যাওয়ার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এমন খু’নের ঘটনার পর সেটি অনেকটাই সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।



গতকাল শুক্রবার কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও শ্রমবাজার পুরো বন্ধের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন।

কাতার দূতাবাস ও বাংলাদেশ কমিউনিটি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে কাতারের রাজধানী দোহার ন্যাশনাল নামের একটি এলাকায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশীরা দুই নেপালি নাগরিককে প্রচণ্ড মারধর করেন। রক্তা’ক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার দুইজনকেই মৃ’ত ঘোষণা করেন। এরপরই কাতার পুলিশ অভিযান চালিয়ে খু’নের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ বাংলাদেশী শ্রমিককে গ্রে’ফতার করে। এর পর থেকেই বাংলাদেশী কমিউনিটিতে আ’তঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।



শুধু নেপালের দুই নাগরিককেই হ’ত্যার সাথে বাংলাদেশীরা জড়িত তা কিন্তু নয়, জু’য়া, প্র’তারণা, জা’ল-জালিয়াতিসহ নানা ধরনের অপরা’ধেই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশী শ্রমিকেরা জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে শীর্ষস্থান ধরে রাখা দুইটি জেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি অপ’রাধে জড়িয়ে পড়ছেন বলে কাতারে থাকা বাংলাদেশ কমিউনিটির একাধিক নেতারা জানিয়েছেন।



গতকাল বায়রার সদস্য ও প্রতিষ্ঠিত একজন জনশক্তি রফতানিকারক নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, কাতারে আমাদের বাংলাদেশী শ্রমিকদের হাতে তিন সপ্তাহ আগে দুই নেপালি নাগরিক খু’ন হওয়ার পর থেকেই দেশটির সরকার বাংলাদেশীদের নামে কোনো ধরনের ভিসা ইস্যু করছে না। এমনকি কাতারের আধা সরকারি কোম্পানির নামেও ভিসা দিতে চাচ্ছে না।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, খু’নের ঘটনার পর আমওয়াজ (এএমডব্লিওএজে) নামক কাতারের বৃহৎ একটি কোম্পানিতে ৪০০ শ্রমিকের প্রয়োজন পড়ে। সেই কোম্পানির নামে দেশটির লেবার মিনিস্ট্রিতে ভিসার আবেদন জমা দিলে সেটি ফিরিয়ে দেয়া হয়। ফিরিয়ে দেয়ার কারণ হিসেবে লেবার মিনিস্ট্রির ভিসা ইস্যুকারী কমিটির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশ প্রবলেম’, ‘বাংলাদেশী লেবার প্রবলেম’।



জনশক্তি রফতানিকারক ওই ব্যবসায়ী আরো বলেন, এই ঘটনার পর কাতার সরকার সরাসরি শ্রমবাজার বন্ধ, এমন কথা না বললেও আকারে-ইঙ্গিতে তারা বাংলাদেশীদের নামে ভিসা ইস্যু করছে না। বিষয়টি দ্রুত কূটনৈতিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে আহ্বান জানান।

গতকাল সন্ধ্যার পর কাতার দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মোস্তাফিজুর রহমান দুই নেপালি নাগরিক খু’নের কথা স্বীকার করে বলেন, এটাতো পুরনো খবর। প্রায় এক মাস আগের ঘটনা। খু’নের ঘটনার সাথে জড়িত মোট ২১ জনকে পুলিশ গ্রে’ফতারও করেছে। এখন যাচাই-বাছাই করে যাদের খু’নের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততা পাবে তাদের রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হবে বলে শুনেছি।



বেশি মারধরের কারণে নেপালি দুইজন মারা গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, জু’য়া খেলাকে কেন্দ্র খু’নের ঘটনাটি ঘটেছে। তা ছাড়া এমনিতেই ফ্রি ভিসার নামে যারা বাংলাদেশ থেকে আসছে তারাই বেশি জু’য়া, প্র’তারণাসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলে তিনি জানান।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি তো লেবার কাউন্সিলর হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানি ভিজিট করতে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে মালিকদের কাছ থেকে শুনি, বাংলাদেশী শ্রমিকদের সুনাম। তারা খুবই পরিশ্রমী। খু’নের ঘটনার পর বাংলাদেশীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাতার গভর্মেন্ট এখন কিছুটা বাংলাদেশকে যাচাই-বাছাই করে ভিসা দিচ্ছে। এমনিতেও কাতারে বর্তমানে চার লাখের মতো বাংলাদেশী রয়েছেন। কাতারের মূল জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। তা ছাড়া কাতারে লেবার মার্কেটে একেক দেশের জন্য একেক ধরনের কোটা সিস্টেম রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কোটা ফুলফিল হয়ে গেছে। আগামী বছর হয়তো তারা এক বছরের জন্য বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য কোটা বন্ধ রাখতে পারে।





কাতারে ২০২২ সালে বিশ্বকাপ শুরু হওয়া উপলক্ষে স্টেডিয়াম নির্মাণে অনেক কর্মী দরকার। তবে দেশটির সরকার যেসব দেশের কোটা এখনো রয়েছে সেই সব দেশ থেকেই শ্রমিক নিতে পারে। তবে ফ্রি ভিসায় বাংলাদেশ থেকে কেউ যাতে কাতারে না আসেন, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। এসব ভিসায় যারাই আসছেন তারাই বেশি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। কারণ এই ভিসা শ্রমিকদের বেশির ভাগই বেকার জীবন যাপন করেন। উপায় না পেয়ে জড়িয়ে পড়েন নানা অপ’রাধে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৪১ হাজার ৯৯৮ জন কর্মী পাড়ি জমিয়েছেন। তার মধ্যে শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৭৪১ জন শ্রমিক গেছেন। কিন্তু দেশটিতে কর্মীর সংখ্যা কমতে কমতে আগস্ট মাসে কর্মী গেছেন মাত্র ২ হাজার ২২৫ জন। এর মধ্যে নারী শ্রমিক ২ হাজার ৫২৩ জন।

গতকাল শুক্রবার রাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান বলেন, কাতারে শ্রমবাজারে সমস্যার বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় আলোচনা করে যাচ্ছেন। আশা করছি এই মার্কেটটা ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মূলত যারা অবৈধ পন্থায় দেশটিতে যাচ্ছেন তাদের কারণে রেগুলার এই মার্কেটটা ডিস্টার্ব হচ্ছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার মার্কেটটা ওপেন হয়ে যাবে। আমি ২৯ সেপ্টেম্বর এলপিআরে যাচ্ছি। তবে এই সময়ের মধ্যে জাপানের মার্কেটটা ওপেন করতে সক্ষম হয়েছি বলে জানান তিনি।









You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.