Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বুয়েটে জুনিয়রদের আ’তঙ্ক ছিলেন ছাত্রলীগের এই অমিত







বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হ’ত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রে’ফতার হয়েছেন আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা। তার গ্রে’ফতারের পর বুয়েট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উঠে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অমিত সাহা বুয়েটের জুনিয়রদের ওপর বেশি আ’গ্রাসী ছিলেন। তার মারধরের স্বীকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এ কারণে অমিত সাহাকে আ’তঙ্ক হিসেবেই জানত জুনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।



অমিত বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে বুয়েটে ভর্তি হলেও পরে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে পদ পেতে নিজেকে আগ্রা’সী হিসেবে পরিচিত করেন ক্যাম্পাসে। ফলও পান দ্রুত। স্বল্প সময়ে বনে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক।



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থী সিনিয়রদের মধ্যে একজনকে পেছন থেকে সবচেয়ে বেশি গা’লমন্দ করতেন। তিনি হচ্ছেন অমিত সাহা। তাকে সব সময় আগ্রা’সী ও মা’রমুখী দেখা যেত। তাকে কেউ দেখতে না পারলেও সামনাসামনি কেউ কিছু বলার সাহস পাননি।

আবরার হ’ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অমিতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অমিত সাহার নির্যা’তনের বিভিন্ন ঘটনা প্রকাশ পায়। বুয়েট ছাত্রলীগের ফে’সবুক গ্রুপে কাকে কবে র‌্যা’গ দেয়া হবে সে বিষয়ে আলোচনা হতো।



সেরকম একটি ঘটনায় এক সিনিয়রকে চটকানি দেয়ার জন্য আহ্বান জানানো একটি পোস্টে অমিত কমেন্ট করেন, বুয়েট ছাত্রলীগ সু’শীল হবে, মা’রবেও না, বাট কোনো সুশীল নন-পলি’টিক্যাল একটা কথা বলার সা’হসও রাখবে না। ইদানিং সুশীলদের কথা অনেক বেশি বাড়ছে।

আবরার হ’ত্যাকাণ্ডে অমিত সাহা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, সেই অভিযোগ দুদিন ধরেই করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, আবরার ফাহাদ হলে আছেন কিনা সে বিষয়ে প্রথম খোঁজ নিয়েছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অমিত সাহা আবরারের এক বন্ধুকে ইংরেজি অক্ষরে ‘আবরার ফাহাদ হলে আছে কিনা’ মেসেজ দেন।



মেসেজের এক ঘণ্টার মধ্যেই শেরেবাংলা হলের ছাত্রলীগ নেতারা আবরারকে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ২০১১ নম্বর কক্ষে এনে তাকে লা’ঠি, চা’পাতি ও স্টা’ম্প দিয়ে পে’টায়।

সূত্র বলছে, ৬ আগস্ট রাতে অমিত সাহার রুমে প্রথম দফায় মা’রধরের নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল। তার সঙ্গে মা’রধর শুরু করেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ও উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল।

পরে যোগ দেন অনিক, জিয়ন, মনির ও মোজাহিদুলসহ অন্যরা। প্রথম দফায় মারধর চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এর পর রাতের খাবার খাওয়ানো হয় আবরারকে। খাওয়ানো হয় ব্য’থানাশক ট্যাব’লেটও। দেয়া হয় মলম। দ্বিতীয় দফা মারধর শুরুর সময় অনিক ছিলেন সবচেয়ে মা’রমুখী।



আবরার এ সময় বারবার বমি করছিলেন। একপর্যায়ে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় মুন্নার কক্ষে। সেখানে আবরারের শরীরের ওপর অনিক ক্রিকেট স্টাম্প ভাঙেন। পরে আরেকটি স্টাম্প দিয়ে বে’ধড়ক পে’টানো হয়। তৃতীয় দফার মা’রধর শুরু হয় মুন্নার কক্ষে। তখন মধ্যরাত।

নি’র্মম পি’টুনিতে আবরার লু’টিয়ে পড়েন। এর পর নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিচে নামানোর চেষ্টা করেন ঘা’তকরা। মাঝ সিঁড়িতে যেতেই তারা বুঝতে পারেন আবরার মা’রা গেছেন। সিঁড়িতেই ম’রদেহটি রেখে তখন ওই স্থান ত্যাগ করেন তারা।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, যারা নির্বিঘ্নে আবরারকে পি’টিয়ে হ’ত্যা করেছে, তারাই রাতে দীর্ঘ একটি সময় কা’টিয়েছেন হল প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান ও বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমানের সঙ্গে। ঘটনার পর তারা বেরিয়ে হলের গেটেই অবস্থান করেন।

সকালের দিকে হল সরগরম হয়ে উঠলে শুরু হয় ঘাতকদের ছোটাছুটি। সবচেয়ে বেশি মা’রধর করা অনিক ওরফে মাতাল অনিক দৌড়ে চলে যান তার রুমের দিকে। পরে ডাকা হয় ডাক্তার। সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা ওই ডাক্তার আবরারকে দেখে মৃ’ত ঘোষণা করেন।

এর ২ মিনিট পর খুনিরা একটি স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করেন। স্ট্রেচারটি সিঁড়ির মুখে বারান্দায় রাখা হয়। এর ২০ মিনিট পর লা’শের কাছে আসেন প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান।

পরে প্রভোস্ট ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে খু’নিরা নিজেদের মতো করে ঘটনার বর্ণনা দিতে থাকেন। চশমা পরা রাসেল ও সবচেয়ে বেশি মা’রধর করা অনিককে প্রভোস্টের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বে’ধড়ক পে’টানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃ’ত্যু হয়। পি’টুনির সময় নি’হত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খু’নিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।

হ’ত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডি’লেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পি’টিয়ে হ’ত্যার প্র’মাণ পেয়েছেন।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৪ জনকে গ্রে’ফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হ’ত্যা মা’মলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.