Beanibazarview24.com
ফিদেল কাস্ত্রোর দেশ কিউবায় ক্রমেই বাড়ছে মুসলিমদের সংখ্যা। হাভানার পথঘাটে এখন হরহামেশা দেখা মেলে হিজাব পরিহিতা নারীদের। পর্যটক বা অভিবাসী নয়, কিউবার নাগরিকদের মধ্যেই বাড়ছে ধর্মান্তরিত মুসলিমের সংখ্যা। হাভানার ঐতিহ্যবাহী পার্টি আর উৎসবের সংস্কৃতিকে পাশে সরিয়ে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ইসলাম ধর্মের নিয়মতান্ত্রিক জীবনচর্চা।
২৭ বছর বয়সী সাংবাদিক মারিয়াম ক্যামেজো, ৭ বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হাভানার মসজিদে এখন তিনি আরবি, আর কোরআন শেখান। তিনি বলেন, কিউবায় মুসলিম নারীদের মধ্যে বেশিরভাগই বয়সে প্রবীণ।
তবে এখন অনেক তরুণী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। শিক্ষিতদের মধ্যেও সংখ্যাটা বাড়ছে। ধর্ম, সমাজ,কর্মজীবন- সবটায় ভারসাম্য রেখে জীবন পরিচালনার পথ খুঁজছেন তারা। ছবির মতো সুন্দর শহর, হাভানা।
যেখানকার পার্টিপ্রিয়, আর হৈ-হুল্লোড়ের সংস্কৃতির খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যেই অনেক কিউবান নারী বেছে নিচ্ছেন ব্যতিক্রমী চর্চা; ঝুঁকছেন ইসলাম ধর্মের নিয়মতান্ত্রিক জীবনের দিকে। এক নবীন মুসলিম বলেন, পোশাক, কথা বলার ধরণ আমূল বদলে ফেলা অনেক কঠিন। কারণ সাধারণত আমরা কিউবানরা অনেক জোরে কথা বলি,
আমাদের অঙ্গভঙ্গি ভিন্ন। তবে আল্লাহ’র পথে যতো আসছি, জ্ঞান বাড়ার সাথে সাথে এসব সহজ মনে হচ্ছে। আল্লাহ’র কাছে সবসময় ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। অথচ ক্যাথলিক প্রধান দ্বীপদেশটিতে জানাশোনার অভাব ইসলাম নিয়ে। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে পুরো বিশ্ব থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন বলে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়তে হয় ধর্মান্তরিত এই মুসলিমদের। এক নারী বলেন,
বোরখায় আমার কিউবান পরিচয় মুছে যায় না। বা আমি আরব নাগরিক হয়ে যাই না। পশ্চিমা দেশে বসে মুসলিম জীবনযাপন কঠিন, কারণ এখানে ইসলাম ধর্ম মানেই অনেকের কাছে আরবি সংস্কৃতি, যা সঠিক নয়।
১২ কোটি জনসংখ্যার দেশ কিউবার মাত্র শূণ্য দশমিক এক ভাগ মুসলিম। ছয় হাজার মুসলিমের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১২শ’। তরুণীদের মধ্যে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্র’বণতা বাড়ায় বাড়ছে এ সংখ্যাও। ইসলামিক লিগ অব কিউবার প্রেসিডেন্ট পেদ্রো লাজো বলেন,
নারী-পুরুষ সমানভাবে ইসলাম গ্রহণ করছেন, যা সন্তোষজনক। তবে নারীরা মায়ের জাতি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষা দেয়ার ভার তাদের হাতে। তাই যতো বেশি নারী ইসলামের পথে আসবেন, ততোই মঙ্গল।”
বলা হচ্ছে, আধ্যাত্মবাদে আগ্রহ, বা মুসলিম কাউকে বিয়ে করা- এমন নানা কারণে বাড়ছে ধর্মান্তরের প্রবণতা। যদিও ইসলাম চর্চার পরিবেশ এখনও তেমন অনুকূলে নয়। পুরো কিউবায় মসজিদ মাত্র একটি, সেটিরও যাত্রা শুরু মাত্র ৪ বছর আগে, ২০১৫ সালে। ক্যারিবীয় জলবায়ুর দেশটিতে সুলভ নয় হালাল খাবারও।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.