Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

কোরআন শরিফ পড়া অবস্থায় ভবন ধসে দুই ভাইয়ের মৃ’ত্যু







নারায়ণগঞ্জে চারতলা ভবন ধসের ঘটনায় দেয়ালে চাপা পড়া স্কুলছাত্র ওয়াজিদের (১১) ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়েছে। দুই দিনের চেষ্টার পর মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে দেয়াল চাপা পড়া অবস্থায় ওয়াজিদের ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়।

নিহত ওয়াজিদ নারায়ণগঞ্জ শহরের বাংলা বাজার মুদি ব্যবসায়ী রুবেল মিয়ার ছেলে। কাশিপুর উজির আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল ওয়াজিদ।



এর আগে রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের এক নম্বর বাবুরাইল এলাকায় চারতলা একটি ভবন ধসে পড়লে ওয়াজিদ চাপা পড়ে। ওই ঘটনায় এর আগে শোয়েব নামের এক স্কুলছাত্রের মৃ’ত্যু হয়। এতে গুরুতর আহত হয় ছয়জন।

ঘটনার দিন থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওয়াজিদের খোঁজে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। তবে দুদিনেও উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়ায় সময় বেশি লাগছে। ওয়াজিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটান পরিবারের সদস্যরা।



এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও ড্রিল মেশিন দিয়ে ওই ভবনের দেয়াল কেটে এবং সেচযন্ত্র দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে ওয়াজিদের ম’রদেহ উ’দ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন বলেন, চারতলা ভবন ধসে নি’খোঁজ ওয়াজিদের সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে ছয়জন ডুবুরি অভিযান চালান। দেয়াল কেটে স্কুলছাত্রের ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়।



নিহত ওয়াজিদের খালা রুনা বেগম বলেন, বড় বোনের ছেলে সোহায়ের ও মেজো বোনের ছেলে ওয়াজিদ আমার ঘরে কোরআন শরিফ পড়ছিল। আমি কাজে রুম থেকে বাইরে বের হই। এ সময় দেখি আমাদের বিল্ডিং সিঁড়ি থেকে ফাঁকা হয়ে গেছে। তখন আমি চিৎকার দিয়ে বলি সোহায়ের, ওয়াজিদ তাড়াতাড়ি বাইরে আয়, আমাগো বিল্ডিং ভেঙে গেছে। আমার চিৎকারে ওয়াজিদ বাইরে চলে আসে, সোহায়ের তখনো কোরআন শরিফ পড়ছিল।



তিনি বলেন, বিল্ডিং হেলতে দেখে ওয়াজিদ কোরআন শরিফ আনতে দৌড় দিয়ে ঘরের ভেতরে যায়। সোহায়ের মনে করেছিল বিল্ডিং ভাঙবে না। তাদের বের হতে না দেখে আমিও দৌড় দেই। কিন্তু সিঁড়িতে এক পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিল্ডিং ভেঙে পড়ে যায়। আমার গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। এরপর কোথায় গেল তারা দুই ভাই, আর কোথায় গিয়ে পড়লাম আমি কিছুই বলতে পারব না। বিল্ডিং পুরোপুরি ভেঙে পড়ে গেলে আমার হাত ধরে কে যেন টান দেয়, তখন আমার জ্ঞান আসে। এরপর আমাকে উদ্ধার করা হলেও ওয়াজিদ ও সোহায়েরকে খুঁজে পাইনি আমি। এখন দেখছি দুজনের লাশ আল্লাহ আমাকে উপহার দিয়েছেন।



স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড় বোন রোজিয়া বেগমের একমাত্র সন্তান মো. সোহায়ের (১২) এবং মেজো বোন কাকলী বেগমের প্রথম সন্তান ইফতেখার আহমেদ ওয়াজিদ (১১) ছয় মাসের ছোট-বড়। দুই ভাইকে কোরআন শেখানোর জন্য ছোট বোন রুনার বাসায় পাঠানো হতো। প্রতিদিনের মতো গত রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খালার বাসায় গিয়ে পড়তে শুরু করে দুই খালাতো ভাই।




বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ চারতলা ওই ভবনটি ধসে পড়ে। চারতলা ওই ভবনের দোতলায় ছিল খালা রুনার বাসা। ভবনটি হেলে পড়তে দেখে চিৎকার দিয়ে দুই বোনের ছেলেকে বাইরে আসতে বলেন খালা রুনা। খালার চিৎকার শুনে বারান্দায় এলেও কোরআন শরিফ আনতে ঘরে ঢুকে ভবনের ভেতরে চাপা পড়ে দুই ভাই। ঘটনার দিন সোহায়েরের ম’রদেহ পাওয়া গেলেও দুদিন পর পাওয়া গেল ওয়াজিেদের ম’রদেহ।

এদিকে, ভবন ধসের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহেনা কলির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন। পাশাপাশি এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.