Beanibazarview24.com
বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ১৪৫ জন ভারতীয় অভিবাসীকে হাত-পা বেঁ’ধে বিমানে করে নয়া দিল্লি ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্ডিরা গান্ধী বিমানবন্দরে অবতরণের পর এসব ভারতীয় অভিবাসীদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ১৪২ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা থেকে ঢাকা হয়ে দিল্লি পর্যন্ত ফ্লাইটে এসব অভিবাসীদের সাধারণ অপরাধীদের মতো আচরণ করা হয়েছে।
দিল্লিতে অবতরণের পর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিলে ২৫ বছরের রবিন্দর সিং স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়েন। কিন্তু পরক্ষণেই তার মনে পড়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্র পাঠাতে এবং পরে অভিবাসী কেন্দ্রে আটক অবস্থা থেকে মুক্ত করতে তার বাবাকে যে টাকা ব্যয় করতে হয়েছে সেটির কথা।
রবিন্দরের জন্য দিল্লিতে পা দেওয়া মুহূর্তটি ছিল বেদনামধুর। হরিয়ানার কৈতাল এলাকার এই বাসিন্দার মতোই বাকিদের অবস্থাও ছিল প্রায় একই।
তিনি বলেন, আমেরিকা যাওয়ার জন্য বাবার উপার্জিত সব টাকা আমি খরচ করে ফেলেছি। সেখানে ধরা পড়ার পর আইনজীবী নিয়োগ করতে গিয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বাবাকে দেওয়ার মতো কিছু নেই আমার কাছে। যা পারি আমি তাকে সহযোগিতা করব।
তার কথাতেই ফিরে ভারতীয়দের সবার অবস্থাই উঠে এসেছে। বিভিন্ন পথে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছায়। কেউ কেউ ইকুয়েডর, কেউ দক্ষিণ আমেরিকার দেশ হয়ে এবং কেউ কেউ ইউরোপের গ্রিস, ইতালি ও অন্য দেশ পাড়ি দিয়ে সেখানে পৌঁছায়।
বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য প্রায় ২৫ লাখ রুপি করে এজেন্টদের দিয়েছেন এই ভারতীয় অভিবাসীরা। অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে আটকের আগে কয়েকজন কাজও করেছেন অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, জর্জিয়া, নিউ জার্সি ও মিসিসিপিতে। আটকের পর তাদের অভিবাসী শিবিরে রাখা হয়।
দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণের পর ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় ফেরত আসারা জানায়, ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মুম্বাই ও গুজরাতে পরিবারের কাছে ফিরে যাবে।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটায় দিল্লি পৌঁছায় অ্যারিজোনা থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইটটি। মাঝে ২৫ জন বাংলাদেশিকে ফেরত দেওয়ার জন্য ঢাকায় বিরতি নেয় বিমানটি।
অভিবাসন কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বা অবস্থান করার মতো উপযুক্ত নথি ছিল না এই ১৪৫ ভারতীয় নাগরিকের।
অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ফেরত আসা বেশিরভাগ অভিবাসীর বয়স ১৯ থেকে ৩১ বছর। সবাইকে জরুরি সনদ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত একমূখী যাত্রার অনুমতি পেয়েছেন।
গত কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর দ্বিতীয় ঘটনা এটি। এর আগে ১৮ অক্টোবর ৩১১ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয় অভিবাসী শিবির থেকে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.