Beanibazarview24.com
প্রবাসে পাখির ডাকে ভোরে ঘুম ভা’ঙে না, ভাঙে ঘড়ির অ্যালার্মে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে – লাল রংয়ের লাগেজ হা’রানো বেশ ক’টি ছবি ।
ঢাকায় এয়ারপোর্টে লাগেজ হা’রানোর রিপোর্ট করতে গিয়ে একজন এ দৃশ্য দেখেন । উনার লাগেজের অবস্থা দেখে চীনা ভদ্রমহিলার বি’স্ময়ের ঘোর কা’টছিল-ই না। কিভাবে সম্ভব? সোনার জুয়েলারি, দামী কসমেটিক্স, স্যু ছাড়াও ব্যাগের অর্ধেক জিনিসপত্র নাই।
ল’জ্জায় অফিস কর্মকর্তাদের মা’থা কা’টা যাচ্ছিল। বিদেশী টুরিস্ট, ডেলিগেট কিংবা ব্যবসায়ী যেই হোক, শুরুতেই যদি এরকম ভ’য়াবহ অ’ভিজ্ঞ’তা হয়!
বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত হ’য়রা’নি ও ভোগা’ন্তির শি’কার হচ্ছেন প্রবাসীরা ।পাশাপাশি এখন যোগ হয়েছে ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা বিদেশীরাও । বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ ৭৩ হাজার ৮৬১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের আনাচে–কানাচে বসবাস করছেন। প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসাকালীন সময় প্রতিনিয়ত বিমানবন্দরে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তাদের অস’দাচারণ এবং দু’র্নীতির মাধ্যমে নানান হ’য়রানির শি’কার হচ্ছেন।
অসংখ্য অ’ভিযোগ, বছরের পর বছর সংবাদ প্রকাশ, মন্ত্রীপর্যায়ে সি’দ্ধান্ত গ্রহণ, সিভিল এভিয়েশনের ক’ড়া তদারকি, প্রশাসনিক ন’জরদারি সহ গোয়েন্দা বিভাগগুলোর নানামুখী তৎপরতার পরও ব’ন্ধ হচ্ছে না হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী হ’য়রানি।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ঢাকা বিমানবন্দর দিয়ে যাওয়া -আসার অভি’জ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ফ্রান্স প্রবাসী তারেক আহমদ এবং আফসানা আক্তার মীম, ইতালি প্রবাসী আফজাল হোসেন শেফালী বেগম ,স্পেন প্রবাসী রুনা আক্তার , পর্তুগাল প্রবাসী আয়েশা আক্তার এবং সিদ্দিকুর রহমান সবারই একই কথা- ‘বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের এ ধরনের ন্যা’ক্কারজ’নক ঘটনার প্র’তিবাদ করতে গেলে উ’ল্টো ভু’ক্তভোগীকেই ফাঁ’সানোর চেষ্টা করা হয়।’
দুঃ’খজনক হলেও সত্য, হাত তোলা হয় প্রবাসীদের গায়ে-ও! যার বাস্তব চিত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ কয়েকবার ভাই’রাল হয়েছে। কিন্তু এই কথা বলতে বাধা নেই যে ,প্রবাসীর ঘামের টাকা সচল রাখছে দেশের চাকা। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি নি’গৃ’হীত ও না’জেহালের শি’কার হচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে কর্মরত বাংলাদেশিরা।
ইমিগ্রেশন বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এসব প্রবাসী কর্মজীবীর সঙ্গে খুব দু’র্ব্যবহার করেন। তুই-তুকারি করে কথা বলা, পে’টে কলমের গুঁ’তা দেওয়া, ই’য়ার্কির ছলে দুই হাতে গ’লা চে’পে ধরে পা’ছায় লা’থি মে’রে হ’টিয়ে দেওয়া নি’ত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অপমা’নজনক ঘটনায় ক্ষু’ব্ধ অনেক প্রবাসী রা’গে-দুঃখে হা’উমা’উ করে কেঁ’দে ওঠেন, অ’সহায়ের মতো বিমানবন্দরের মেঝেতে গ’ড়াগ’ড়ি দেবার দৃশ্যও স্যোসাল মি’ডিয়ায় দেখা গেছে। অনেকে জীবনে আর কখনো দেশে না ফেরার শপথ পর্যন্ত করেন অপমা’নে, ক্ষো’ভে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রা’নি ব’ন্ধের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া থাকলেও যেন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। কোনোভাবেই ব’ন্ধ হচ্ছে না এ হয়রানি। নিরাপত্তা ত’ল্লাশির নামে যাত্রীদের এ ভো’গান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। অ’ভিযোগ রয়েছে, যাত্রীদের লাগেজ সংগ্রহে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় সংঘ’বদ্ধ চ’ক্র লা’গেজ গা’য়েব করে ফেলে।
প্রবাসীদের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বিদেশীরা বিমানবন্দরে এসে রক্ষা পাচ্ছেন না এই হে’নস্তার শি’কার থেকে । ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, মূলত ইমিগ্রেশন পুলিশের হয়রা’নির শি’কার হয়ে বহির্গামী যাত্রীদের নাভিশ্বাস ওঠছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশে ফেরা বেশ কজন ইউরোপ প্রবাসীরা জানান , যাচাই-বাছাই করেই দূতাবাস তাঁদের ট্রাভেল পাস দিয়েছে। এটা নিয়ে ফেরার সময় বিদেশের বিমানবন্দরে কোনো অ’সুবিধা হয়নি। অথচ নিজ দেশের বিমানবন্দরে এসে যত ঝা’মেলায় পড়তে হচ্ছে।
বিমানবন্দর অভ্যন্তরের অন্তত ১০টি ধাপে প্রবাসীদের কাছ থেকে চাহিদামা’ফিক টাকা হাতানো হয় বলে ভুক্তভোগী প্রবাসীরা জানিয়েছেন। গত ২০ বছরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও বিমান ওঠানামার সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি যাত্রীসেবার মান। আগে লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে প্রবাসীদের অপেক্ষা করতে হতো। এখনো সেই পরিস্থিতি থেকে মু’ক্তি মেলেনি প্রবাসীদের। দ্রুত যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তাঁদের বিমানবন্দর ত্যা’গের অনুম’তি দেওয়ার দাবি করেছেন তাঁরা।
নিজের দেশে ফিরে শুনি, আমি নাকি রোহিঙ্গা। ছয় বছর আগে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গেছি। আমরা প্রবাসীরা বিদেশেও দাম পাই না, দেশেও দাম পাই না। প্রবাসীদের খুব বেশি চাওয়া নেই, হাজারো প্রবাসী স্বপ্ন দেখে কিছু অর্থ আয় করে দেশে ফিরে যাবে। ফিরে যাবে প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে, সন্তানের কাছে, বাবা-মায়ের কাছে।
– আব্দুল মোমিত রুমেল, ফ্রান্স
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.