Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বাংলাদেশ বিমানে আর দেশে যাব না, সিলেটের লন্ডন প্রবাসীর ক্ষো’ভ


গত ৮জানুয়রী বাংলাদেশ থেকে স্বপরিবারে লন্ডনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বিমানে করে যাত্রা করেন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামক ব্রিটেনে বাসবাসকারী এক যাত্রী। বিমানে ভ্রমনের তার অভিজ্ঞতার কথা তিনি ফেইসবুকে শেয়ার করলে তা ভাইরাল হয়। বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তাতে নজর পড়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের মধ্যে। অনেকেই তাকে ব্যক্তিগতভাবে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তানিয়ে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন হাবিবুর রহমান। নিচে হাবিবুর রহমান ও অন্যান্যদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হল

গত আট জানুয়ারী ২০২০ স্বপরিবারে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন আসার সময় বিজি ০০১ ফ্লাইটে যে সমস্ত যাত্রীগন ছিলেন তাঁরা একটা বিমান পরিবারের পক্ষ থেকে একটা খুবই বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে আসেন । আট জানুয়ারী সকাল দশটা পনের মিনিটে ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইটের জন্য সাত জানুয়ারী সিলেট থেকে ঢাকা নিয়ে এসে অত্যন্ত নিম্নমানের হোটেলে রাত্রি যাপনের ব্যাবস্থা করা হয় ।

ভোর সাড়ে পাঁচটায় হোটেল থেকে বিমান বন্দরে আসার জন্য ডাকা হয়, পৌনে সাতটার সময় বিমানবন্দরে পৌছি, পৌছেই সিডিউল স্কৃনে দেখলাম লন্ডন ফ্লাইট এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট দেরী, ন’টার দিকে সিকিউরিটি তল্লাশি করে রাখা হয় বন্দী শিবিরের মত শেষ একটা ঘরে যেখানে আসার আগেই সাথে থাকা পানি পর্যন্ত রেখে দেয়া হয় ।

কোন ধরনের ঘোষণা ছাড়া সবাইকে এখানে রাখা হয়েছে, বলে রাখা দরকার লন্ডনে স্কুল হলিডে থাকায় প্রায় সবাই ছিলেন স্বপরিবারে, বেশির ভাগই স্কুল চিলড্রেন, ফ্লাইট ছাড়ার কথা এগারোটা বিশ হলেও এখন এগারোটা বিশ বাজে কিন্তু আমরা জানিনা ফ্লাইট কখন ছাড়বে । ইতিমধ্যে পিপাশা আর পেটের ক্ষিধায় বাচ্চারা কান্না কাটি করছে, এখানে কর্তব্যরত বিমানের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা বললেন বেশী সমস্যা হলে বোর্ডিং পাস তাদের কাছে রেখে বাইরে থেকে খেয়ে আসার পরামর্শ দেন ।

কোন উপায় না দেখে তাই করলাম, ইতিমধ্যে সরকার দলীয় দুই তিনজন ছাড়া সব প্যাসেঞ্জার বিমানের লোকদের কাছে সিডিউল জানতে চান কিন্তু কতৃপক্ষ কোন সিডিউল জানাতে পারেন নি, অনেক বাক বিতন্ডার পর জানালেন আমাদের বিমানটি এখন কলকাতা আছে আর এটা একেবারে নতুন বিমান ওখান থেকে আসলেই নতুন সেট আপ করে আমাদের নিয়ে ছেড়ে যাবে তবে কতক্ষণ সময় লাগবে তা বলতে পারব না এখন ।

অনেক সংগ্রামেরপর একটার দিকে অত্যন্ত নিম্নমানের সামান্য ব্রেড আর কেক আংশিক পরিবেশন করা হয় । যাত্রীদের সাথে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করে বিমান কতৃপক্ষ ।

আমরা বলেছি, আমরা আপনাদের কাছে বন্দী, তা না হলে যাত্রীদের সাথে আপনারা এমন ব্যাবহার করতে পারতেন না, স্পষ্ট করে বলেছি আপনাদের এই অন্যায়ের প্রতিবাদ এখানে করলে হয়ত গুম করে ফেলবেন এই ভয়ে সবাই ।

ইতিমধ্যে আমি আমার সাথে থাকা একটা ইনভেলাপের উপর কয়েকটি পরিবার পরিবার প্রধানের নাম ও ফোন নাম্বার যোগাড় করি, আমার এই তৎপরতা একজন লোক বিমানের লোকদের নজরে আনেন ( পরে জানলাম তিনি সরকার দলীয় মানুষ) আমাকে তারা ফলো করছেন দেখে আমি আমার কাগজ টা ব্যাগে রেখে দেই।

অনেক সংগ্রামের পর সকাল দশটা পনের মিনিটের ফ্লাইট বিকেল আড়াইটায় লন্ডনেরউদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে ।
বিমান কর্তৃপক্ষের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়া আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি। ইতিমধ্যে লন্ডনে বাংলাদেশীকমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ হয়েছে । আজ যারা আমাদের সাথে এমন দুর্ব্যবহার করেছেন কাল আপনি ও তার স্বীকার হবেন, তাই আসুন আমরা সবাই মিলে এর প্রতিবাদ জানাই ।

কয়েকদিন পরে তিনি আবারো লিখেন

” বিমান ”
আকাশে অশান্তির ডানা ।
প্রাইমারি বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান কে বলা হয় প্রধান শিক্ষক, কলেজের প্রধানকে প্রিন্সিপাল আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানকে উপাচার্য বা ভাইস চ্যান্সেলর, অর্থ একই তারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধান । তেমনি রেস্টুরেন্টের খাবার পরিবেশন কারী বা সার্ভিসের লোককে ওয়েটার আর বিমানের ঐ পদের লোকের পদবীর নাম কেবিন ক্রু বা এয়ার হোস্টেজ । বিমানের প্যাসেঞ্জারের খাবার, পানীয় বা যে কোন প্রয়োজনে তাদের দেখাশোনা করার জন্য ঐ এয়ারলাইন্স বেতন ভোগী কিছু কর্মচারী নিয়োগ দেয় তারাই ক্রু বা এয়ার হোস্টেজ ।

প্যাসেঞ্জারের প্রয়োজনে তাদের দেখাশোনা করার কথা থাকলেও ” আকাশে শান্তির নীড়” শ্লোগান ধারনকারী বিমানের এই সমস্ত কর্মচারীরা নিজেদের আন্তর্জাতিক মানের কোন অফিসার বা আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ছেলে মেয়ে অথবা তার বংশধর মনে করেন । আপনার কোন প্রয়োজনে তাদের পাওয়া তো দুরের কথা কাছে গিয়ে কিছু চাইলে যদি পেয়ে যান তবে আপনাকে এই সময়ের শ্রেষ্ঠ সৌভাগ্যবান মনে করতে পারেন ।

বিমান বা তাদের কোন কর্মচারীর সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন শত্রুতা নেই, নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে টিকেট কিনে দেশে যাই । আমি সেবা চাই আমার কষ্টার্জিত টাকার বিনিময়ে, কারো দয়া বা করুনা নয় এটা আমার অধিকার, আর এটা শুধু আমার একার কথা নয় প্রত্যেক যাত্রীই তাই মনে করেন ।

আপনারা যারা অন্যান্য এয়ারলাইন্স ব্যবহার করেছেন প্রত্যেকেই এই সার্ভিস সম্পর্কে অবগত । পাঁচ/ছয়’শ পাউন্ডের টিকেট বিমানের কাছ থেকে কিনি বারো থেকে চৌদ্দ’শ পাউন্ডে, তার পরেও যদি এই ধরনের ভোগান্তির শিকার হই তাহলে কোন ঠেকায় অন্য এয়ারলাইন্সের পরিবর্তে বিমান চড়ব ?

ইদানিং যারা বিমানের সেবা গ্রহণ করেছেন তারা হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন, বিমানে ব্যবহারের জন্য যে কম্বল দেয়া হয় তাতে এতই দুর্গন্ধ পাবেন যে আপনি আর ব্যবহার করার চিন্তা করতে পারবেন না, খবর নিয়ে জানতে পারলাম ব্যবহৃত কম্বল ধৌত করে রিপ্যাক করার নিয়ম থাকলেও তা ধৌত না করেই বার বার রিপ্যাক করা হয়, অথচ তা ধৌত হয়েছে বলে বিল তৈরী করে টাকা গুলো নিজেদের পকেটজাত করেন!

এ ছাড়া বিমানে যাত্রী হয়রানি এই প্রথম নয়, আমরা আসলাম আট জানুয়ারী, আমার লেখা পড়ে গত পরশু একজন যাত্রী ফোন করে জানালেন এগারো জানুয়ারী তারাও সমান পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন। এই তো ক’মাস আগে একজন যাত্রীকে তারা বিমানে সিটের সাথে বেধে রাখেন, যার মামলা চলছে, গত জুলাইতে গিয়েছিলাম দেশে বিমানে একজন যাত্রীর সাথে কেবিন ক্রুদের তর্কাতর্কি দেখলাম পরে সিলেট গিয়ে বিমান নির্দিষ্ট জায়গায় নোঙর করার আগে থামিয়ে ঘোষণা করা হল নিরাপত্তা জনিত কারনে নোঙরের আগেই থামানো হয়েছে, কিছু তল্লাশি দরকার পরে শুনলাম ঐ লোকটাকে নিরাপত্তা বাহিনী নামিয়ে নিয়ে গেছেন । কে কি জন্য কোথায় নিয়ে গেছে বা যাচ্ছে এটা জিজ্ঞাসা করার সাহস কার আছে ?

এ ছাড়াও বিমান বন্দরে যাত্রী হয়রানির কথা বলে নিজে লজ্জা পাওয়া ছাড়া আর কি হতে পারে ? সিলেট থেকে ঢাকায় এনে কত নিম্নমানের হোটেলে রেখে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়, তা দেখার কেউ হয়ত পৃথিবীতে বেছে নেই ।

এখন প্রযুক্তির যুগ, এমনি কষ্ট করতে করতে একদিন ঠিকই বিদেশি এয়ারলাইন্স সরাসরি সিলেট নামবে, তখন লন্ডন – সিলেট রুটে প্যাসেঞ্জার মেলাতে অবশ্যই বিমানকে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে। দুনিয়ার এয়ারলাইন্স গুলো যখন ব্যাবসা করে আয় করছে সেখানে বিমান হাজার কোটি টাকা লস করছে, যাত্রী সেবা তাদের সংবিধানে নেই যা আছে তা আত্নস্বাৎ ।
ব্যাক্তিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ” বাংলাদেশ বিমানে আর দেশে যাব না ”

জনসংখ্যা দ্বারা পরিচালিত না হয়ে বিমান মানুষের দ্বারা পরিচালিত হউক এটা কামনা করে এবারের মত লেখা শেষ করলাম ।
সাথে থাকার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ ।

আল্লাহ্ হাফেজ।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.