Beanibazarview24.com
হঠাৎ করে ‘তাফসিরুল কোরআন’ মাহফিল স্থগিত করে গবেষণার কাজে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও সমালোচনা যেন পিছুই ছাড়ছে না ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে আজহারীর গাড়ি চালানোর কিছু দৃশ্য। ছবিতে দেখা গেছে, মিজানুর রহমান আজহারী একটি ‘বেন্টলি’ গাড়ি চালাচ্ছেন যার বাজারমূল্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা।
ছবিগুলো আজহারী বিরোধী বিভিন্ন ফেজবুক পেজ ও ‘নাইদরেইনস’ নামে এক আইডি থেকে পোস্ট করে প্রশ্ন ছোড়া হচ্ছে, ইসলামের একজন দাঈ হয়ে মালয়েশিয়ায় কি করে এতো দামি গাড়ি কেনেন আজহারী?
মাহফিলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) ও সাহাবাদের ত্যা’গি ও সাদাসিধে জীবনের কথা বলে মালয়েশিয়ায় কি তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন?
সমালোচনাকারীরা বলছেন, দেশে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেই মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন আজহারী।
এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আজহারীভক্তদের সঙ্গে তার বিরোধীরা তুমুল বাকবিতণ্ডায় মেতেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিলাসবহুল গাড়ি আজহারীর নয় এবং তিনি মালয়েশিয়ায় গিয়ে এ গাড়ি চালাননি।
ছবিগুলো তার সম্প্রতি তোলা নয়ও বলে জানা গেছে। মূলত এ গাড়িটি আজহারী চালিয়েছেন সিঙ্গাপুরে। আর গাড়ির মালিকের নাম – সাহিদুজ্জামান টরিক।
সাহিদুজ্জামান টরিকের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সাহিদুজ্জামান টরিক সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্সের সাবেক সভাপতি। তার দেশের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায়।
ছয়-সাত মাস আগে টরিকের নিমন্ত্রণে এক মাহফিলে যোগ দিতে সিঙ্গাপুরে যান মিজানুর রহমান আজহারী। সে সময় সেখানে টরিকের এই গাড়িতে চড়ে সিঙ্গাপুর ঘুড়েন।
তিনি নিজেও অল্প কিছু সময় গাড়ি চালান। সে সময় তোলা ছবিগুলোই আজহারী বিরোধীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে অ’পপ্রচারে নেমেছে।
এ গাড়িটি বিলাসবহুল হওয়ায় শুধু আজহারী নয় অনেকে ছবি তুলেছেন। তেমনি আরেকজন জাহাঙ্গীর সাঈদ। গাড়ির সাথে আজহারীর ছবি ভাইরাল হওয়ায় অবাক হয়েছেন তিনি।
তাই তিনিও ওই গাড়ির সাথে তোলা তার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে জানান এটি আজহারীর গাড়ি নয় এটি সাহিদুজ্জামান টরিক এর গাড়ি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, গাড়ির নেমপ্লেট দেখলেই বোঝা যায় এটা মালয়েশিয়ার কোনো গাড়ি নয়। এখানে SJZ888IR লেখা। আর এমন নেমপ্লেট সিঙ্গাপুরের গাড়িগুলোর হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান আজহারীর সঙ্গে সাহিদুজ্জামান টরিকের বন্ধুত্ব রয়েছে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে আজহারী যোগ দিয়েছিলেন।
ওই মাদ্রাসার পরিচালকই সাহিদুজ্জামান টরিক। সেদিন প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে মাহফিলের আয়োজন করা হলেও মুসল্লিরা জায়গা না পেয়ে আশপাশের রাস্তা ও যানবাহনে দাঁড়িয়ে আজহারীর বক্তব্য শোনেন।
আজহারীর বক্তব্যের সময় সাহিদুজ্জামান টরিককে তার পাশেই দেখা গেছে। আলোচনার শুরুতে আজহারী বলেন, এ মাহফিলের আয়োজক সাহিদুজ্জামান টরিক আমার বড়ভাই।
তিনি একজন শিল্পপতি ও সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্সের সাবেক সভাপতি। সিঙ্গাপুর গেলে আমি তার কাছেই থাকি। গত কোরবানি ঈদে সেখানে তার তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকটি ইসলামি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি। তবে এ বিষয়ে সাহিদুজ্জামান টরিকের কোনো বক্তব্য নেয়া যায়নি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.