Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ব্রিটেনে এখন ৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশি, ৯৭ ভাগই সিলেটি!


প্রায় ৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশির বসবাস এখন ব্রিটেনে।যা তাদের মোট জনসংখ্যার ০.৭১ ভাগ। সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ব্রিটেনে বাংলাদেশীদের সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৫ শ ২৯ জন । এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এই কয়েক বছরে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় ছয় লক্ষ হয়েছে এবং এর ৯৭ ভাগই সিলেটি।

১৯৬১ সালের প্রথম আদমশুমারিতে স্থান পাওয়া বাংলাদেশী সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ হাজার। সময়ের পরিবর্তনে তা বেড়ে দাড়িয়েছে আজ প্রায় ৬ লক্ষতে। ব্রিটেনে বাংলাদেশীরা গড়ে তুলেছেন আরেক খন্ড বাংলাদেশ। শত বছর যাবত গৌরবের সাথে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা ব্রিটেনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৪০। এই সংখ্যা ২০০৮ সালের তুলনায় ২৩১ শতাংশ বেশি। নাগরিকত্ব দেয়ার হিসাব ১৯৬২ সাল থেকে প্রকাশ করা শুরু করে ব্রিটেন। ২০০৯ সালে দুই লাখেরও বেশি বিদেশী আবেদনের মাধ্যমে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন।

এটি ব্রিটেনের সর্বকালের রেকর্ড। ২০০৯ সালে নাগরিকত্ব পাওয়াদের ৫০ শতাংশ পেয়েছেন দীর্ঘ সময় ব্রিটেনে বসবাসের সূত্রে। ২৫ শতাংশ পেয়েছেন ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করার সূত্রে। বাকি ২৫ শতাংশ শিশু।

জানা যায়, ১৮৭৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা চালাতে সর্ব প্রথম কয়েকজন সিলেটি রন্ধনশিল্পীকে নিয়ে আসে ব্রিটেনে। আর এরাই ছিলেন ব্রিটেনে প্রথম আসা কোন বাংলাদেশী। পরবর্তিতে ১৯২৫ সালে এই কয়েকজন রন্ধনশিল্পীদের বদৌলতে তাদের আত্বীয়স্বজনরা আসেন ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল এই দশ বছরে বাংলাদেশী বড় একটি অংশ ব্রিটেনে প্রবেশ করে।

পূর্বে ব্রিটেনে আসা বর্তমান সময়ের মতো এতটা কঠিন ছিলনা। তারপরও বংশানুক্রমে আজ অবধি ব্রিটেনে উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্য আসছেন বাংলাদেশীরা।

ব্রিটেনের সবগুলো শহরেই এখন বাংলাদেশীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। এর মধ্য সবচেয়ে বেশি আছেন ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে। ২০১১ সালের ন্যাশনাল অফিস ফর স্টাটিক্স এর জরিপে দেখা যায়, লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় রয়েছেন ২ লক্ষ ২২ হাজার ১২৭ জন বাংলাদেশী, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৪শ ৭৭ জন বাংলাদেশী আছেন বার্মিংহামে।

এছাড়া ওল্ডহামে আছেন ১৬ হাজার ৩শ, লুটনে আছেন ১৪ হাজার ৭শ, ব্রাডফোর্ডে আছেন ১১ হাজার ৯শ বাংলাদেশী। এছাড়া মানচেষ্টার, নিউক্যাসল, কার্ডিফ এবং সেন্ডারল্যান্ডসহ ব্রিটেনের প্রায় প্রত্যেক শহরেই বাংলাদেশীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। ইস্ট লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে বর্তমান সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে এর সটিক হিসাব আগামী ২০২১ সালের আদমশুমারিতে পাওয়া যাবে।

১৯৬১ সালে প্রথম আদমশুমারিতে বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৬ হাজার, ১৯৭১ সালে ২২ হাজার, ১৯৮১ সালে ৬৪ হাজার ৫শ ৬১ জন, ১ ৯৯১ সালে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮ শ ৩৫ জন, ২০০১ সালে ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬৩ জন ও সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারিতে এ সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৫শ ২৯ জন। এদের মধ্য অর্ধেকের ও বেশি যারা জন্মসুত্রে বাংলাদেশী।

ব্রিটেনে যে কেউ ৫ বছর পর্যন্ত থাকলে পরবর্তিতে তিনি নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। প্রায় শত বছর ধরে আসা বাঙালিরা ব্রিটেনের সব পর্যায়ে অত্যন্ত গৌরবের সাথে নিজেদের তুলে ধরেছেন।

তাদের মধ্য উল্লেখযোগ্যরা হলেন, হাউস অফ কমন্সের এমপি রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দিক, রুপা হক, টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক মেয়র লুতফুর রহমান, সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনওয়ার চৌধুরী, লেবার পার্টির বিশিষ্ট রাজনৈতিক পলা মনজিলা উদ্দিন, শিক্ষাবিদ মুহাম্মদ বারি, ব্রিটিশ সঙ্গীত শিল্পী মামজী, ব্রিটিশ সেলিব্রিটি কনি হক, নভেলিস্ট কিয়া আব্দুল্লা, ভাষাবিদ ওয়ালী তছর উদ্দিন সহ আরো অনেকে। ব্রিটেনে প্রতিটি বাংলাদেশী আজ দেশের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের প্রেরিত রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

ব্রিটেনে ২৪ বছর যাবত স্থায়ী বসবাসকারী দয়ামীর ঘোষগাও গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ মফিদুল গনি মাহতাব সুরমা নিউজকে বলেন, ব্রিটেনে আজ আমরা ৬ লক্ষ বাংলাদেশী ভাবতে ভালো লাগছে, একেকজন বাংলাদেশী বিদেশের মাটিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। রেমিটেন্স পাঠিয়ে রাখছেন দেশের অর্থনীতিতে বিড়াট ভুমিকা।

ব্রিটেনের প্রত্যকটি জায়গায় সুনামের সাথে নিজেদের জায়গা করে নেওয়া স্বদেশীদের নিয়ে আমরা গর্বিত। আমাদের নতুন প্রজন্ম আজ এদেশে ডাক্তার, আইটি ম্যানেজম্যান্ট স্পেশালিষ্ট, শিক্ষকতা এবং তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসায় সফলভাবে বিচরন করছে। বাংলা ভাষায় অসংখ্য প্রিন্ট মিডিয়া আর বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া রয়েছে ব্রিটেনে। যা একসময় ছিলনা আমরা তার বড়ই অভাব অনুভব করতাম। তারা আজ দেশীয় সংস্কৃতি আর দেশকে বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে রাখছেন বড় ভুমিকা।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.